Friday 13 December 2019

ভেজাল প্রতিরোধে ইসলামের নির্দেশনা


ভেজাল প্রতিরোধে ইসলামের নির্দেশনা

আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
ইসলাম একটি কল্যাণকর এবং পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। তাই মানব জীবন ও সমাজ ব্যবস্থার জন্য যা কিছু অকল্যাণকর, ক্ষতিকারক ও নিকৃষ্ট সে-সব বস্তু, বিষয় ও পণ্য বর্জন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বভাবতই ভেজাল পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও সংরক্ষণ করা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব এতটাই যে কেয়ামতের দিন প্রাথমিক পর্বেই এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে; “(কেয়ামতের দিন) আদম সন্তানের পা তার প্রভুর সামনে থেকে একটুও নড়বে না যতক্ষণ না তাকে পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাকে প্রশ্ন করা হবে, (১) সে তার জীবন কী কাজে ব্যয় করেছে, (২) যৌবন কীভাবে কাটিয়েছে, (৩) তার অর্থসম্পদ কীভাবে আয় করেছে (৪) এবং কোন পথে ব্যয় করেছে, () যে জ্ঞান অর্জন করেছিল সে অনুযায়ী কতটুকু আমল (কাজ) করেছে?” [তিরমিযি ২৪১৬; সিল্‌সিলাহ্‌ সাহীহাহ্‌, আল্‌বানি ৯৪৬]
ইসলাম ও ব্যবসাবাণিজ্য— ইসলাম ব্যবসাকে হালাল করেছে এবং সুদকে হারাম [আল্‌-বাকারা ২৭৫]। কারণ আদানপ্রদান সমাজ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম। তাই ইসলামে ব্যবসা একটি মহতী পেশা। নবী (সা) বলেছেন, “বিশ্বস্ত ও সৎ ব্যবসায়ীরা কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদগণের সঙ্গে থাকবেন।” [তিরমিযি ১২০৯] এবং ব্যবসাসহ উপার্জনের নান মাধ্যমে জীবিকা অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেছেন, “সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো।” [সূরা আল্‌-জুমুআ’হ্‌ ১০]
শুধু অনুসন্ধানের নির্দেশ নয়, হাদিসে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে যে, ইসলামের দৃষ্টিতে জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নিষ্ঠা ও সততার সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করা। এমন এক প্রসঙ্গেই একবার রাসুল (সা)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “নবীজি (সা), সর্বোত্তম উপার্জন কোনটি?” জবাবে তিনি (সা) বলেছিলেন, ব্যক্তির শ্রমলব্ধ উপার্জন এবং সততার সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয় করা।” [মুস্‌নাদ আহমাদ; সাহীহুত্‌ তারগীব ২/১৬৮৮]
তাছাড়া নবী মুহাম্মদ (সা) নিজেও একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যবসা ক্ষেত্রে তাঁর সততা ও দূরদর্শিতায় মুগ্ধ হয়ে মা খাদিজা (রা) তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাই তাঁর জীবনাদর্শের এই দৃষ্টিকোণ সম্বন্ধেও চর্চা করা ভীষণ জরুরী। যাতে পারস্পরিক লেনদেনের এ উত্তম পন্থাকে কেউ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে কলুষিত না করে ফেলে। এবং এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্‌ এভাবে সতর্ক করেছেন যে, “হে মোমিনরা! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো নাতবে তোমাদের জন্য পরস্পর সম্মত হয়ে ব্যবসা করা বৈধ।” [সূরা আন্‌-নিসা ২৯]
ইদানীং সমাজের প্রায় সব স্তরেই আর্থিক মুনাফাই একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আজকাল লোকজন সব কিছুতেই মুনাফা খোঁজে; এমনকি আত্মীয়তা করা থেকে সামাজিক কাজকর্ম সব ক্ষেত্রেই। যার কারণে দুর্নীতি, অসৎ উপায়, অপকৌশল সমাজ ব্যবস্থাকে জীর্ণ করে তুলেছে। অতএব এসব বিষয়ে একজন মুসলিমের জ্ঞাত হওয়া ও বাস্তব জীবনে তার অনুশীলন করা আবশ্যক বলে আমি মনে করি।
বিক্রির জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া অনৈতিক— বর্তমানে হাটেবাজারে অহরহ চোখে পড়ে, বিক্রেতা কখনো বাড়িয়ে দাম বলে বা লিখে রাখে তো কখনো জিনিসপত্রের গুণগত মান নিয়ে কারসাজি করে। এবং সব শেষে এসব প্রমাণ করতে মিথ্যা কথা তো কখনো মিথ্যা কসম (শপথ)-এর আশ্রয় নেয়। যার কারণে অধিকাংশ সময় ক্রেতা প্রতারণার শিকার হয়। তাই ইসলাম অসৎ ব্যবসায়ীদের সাবধান করেছে। নবী (সা) বলেছেন, হে ব্যবসায়ী লোকেরা! (মনে রেখো) কেয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহাপাপীরূপে হাজির হবে। তবে তারা নয়, যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং সততা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে ব্যবসা করে।” [তিরমিযি ১২০৯, সিল্‌সিলাহ্‌ সাহীহাহ্‌ আল্‌বানি ৯৯৪]
যেহেতু প্রাক্‌-ইসলামী যুগ থেকেই ভেজাল, নকল ও নিম্নমানের পণ্য ক্রেতার হাতে গছিয়ে দেওয়ার জন্য মিথ্যা বলা ও মিথ্যা শপথ করার প্রচলন রয়েছে। তাই এই ঘৃণ্য প্রথাকে রুখতে ইসলাম মিথ্যুক ও অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে। রাসুল (সা) বলেছেন, “আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিনে তিন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবেন নাতাদের দিকে তাকাবেন নাতাদেরকে পবিত্র করবেন না। এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” তিনি তিনবার এ কথাগুলি বললেন। অতঃপর আবু যার (রা) জিজ্ঞেস করলেন, ওরা কারা? উত্তরে বললেন— “(১) যে ব্যক্তি অহংকারবশত টাখনুর (পায়ের গিঁট) নিচে কাপড় পরে, () যে ব্যক্তি দান করে খোঁটা দেয়, () আর যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রি করে।” [মুসলিম ১০৬] এজন্যই নবী (সা) প্রায়শই ব্যবসায়ীদেরকে এ বিষয়ে সতর্ক করে বলতেন, ওয়াসিলা ইব্‌নু আল্‌-আস্‌কা’ হতে বর্ণীত, হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকো।” [তাবারানি ২২/১৩২, সাহীহুত তারগীব ৩/১৭৯৩]
অন্য একটি হাদিসে, যারা মিথ্যা শপথের আশ্রয় নিয়ে ভেজাল পণ্য বা নিম্ন মানের জিনিস চড়া দামে বা অধিক দামে বিক্রি করে, তাদের জন্য তিরস্কার ও অভিশাপও উচ্চারিত হয়েছে। নবী (সা) বলেছেন, “যদি তারা সত্য বলে ও যথাযথ অবস্থা বর্ণনা করে; তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে। আর যদি পণ্যের প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ও মিথ্যা বলে তবে ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে যাবে।” [বুখারি ১৯৭৩, মুসলিম ১৫৩২]
পণ্যে ভেজাল মেশানো একধরণের প্রতারণা— সাধারণত মানুষ শাকসবজি থেকে আসবাবপত্র, জমিজায়গা থেকে ঘরবাড়ি কোনো কিছু কেনার সময় একজন বিশ্বস্ত বিক্রেতা বা মাধ্যম খোঁজে। যাতে তার কেনা জিনিসপত্রের গুণগত মান ঠিক থাকে এবং তা সাশ্রয়ী হয়। তাই পণ্যে ভেজাল মিশিয়ে ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া আক্ষরিক অর্থেই ক্রেতার প্রতি অবমাননা এবং তার ক্ষতি করা। সহজ করে বলতে গেলে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করা। এবং যেকোনো রকমের প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা ইসলামে হারাম। প্রতারণা এতটাই ঘৃণ্য যে প্রতারককে বহিষ্কারের শাস্তি শোনানো হয়েছে। এক ব্যক্তি ভেতরে ভেজা এবং উপরে শুকনো খাবার রেখে পসরা সাজিয়েছিল। তা জানতে পেরে নবী (সা) তাকে বলেছিলেন, “যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।” [মুসলিম ১০২, তিরমিযি ১৩১৫]।
অতএব ব্যবসার এই অসাধু পদ্ধতি বা পণ্যে ভেজাল মেশানো ইসলামি আদর্শের বহির্ভূত কাজ। কেননা, পণ্যে ভেজাল মিশিয়ে বিক্রি করলে ক্রেতারা জুলুমের শিকার হন। বলা বাহুল্য, এটি অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ বা কবজা করার অপকৌশল। এবং অন্যের সম্পদ হরণ ইসলামে যে নিষিদ্ধ তা সবার জানা। মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে বিশ্বাসীরা! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।” [সূরা আন্‌-নিসা ২৯]
ভেজাল একটি মানবতা-বিরোধী জঘন্য অপরাধ— ভেজাল খাদ্য ও পণ্য পরিবেশন করে আমরা অন্যের মারাত্মক ক্ষতি করি। তাই এটি মানবতাবিরোধী একটি জঘন্য অপরাধ। এতে ব্যক্তি শুধু অপরের ক্ষতি করে তা নয়, সে নিজেও অন্যের ভেজালে আচ্ছাদিত হয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সহজ করে বললে, আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংসের পথে এগিয়ে দিচ্ছি। আর এধরণের সকল বিষয়ে মহান আল্লাহ সতর্ক করে বলেছেন, “তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না।” [সূরা আন্‌-নিসা ২৯], বা “তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে ধ্বংস করো না।” [আল্‌-বাকারা ১৯৫] এবং এই বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে নবী (সা) আদেশ করেছেন, “তোমরা নিজেদের ক্ষতি করো না এবং অন্য কারও ক্ষতি করো না।” [ইব্‌নু মাজাহ্‌ ২৩৪০]।
বর্তমান সময়ে খাদ্যজাতীয় পণ্যে ভেজালের প্রবণতার ফলে খাদ্যদ্রব্য অস্বাস্থ্যকর এমনকি বিভিন্ন মারণ রোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে; এ কথা আমরা সকলে জানি। ভেজালের এই বিষাক্ত ছোবলে আজ বর্তমান প্রজন্ম ধ্বংসের সম্মুখীন। তাই আমি মনে করি ভেজালের এই রমরমা বাজার আদতে একধরণের গুপ্ত হত্যার বা সমাজের জন্য আত্মহননের নামান্তর। আর যা কিছুই প্রাণ নাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেসবই অপরাধের আওতায় পড়ে। এবং হত্যা ও ধ্বংসলীলা যে সর্বাধিক জঘন্যতম অন্যায় ও অপরাধ তা শিশুরও জানা কথা। আর হত্যার জঘন্যতা প্রকাশ করে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্‌ ঘোষণা করেছেন, নরহত্যা অথবা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কর্ম করা হেতু ব্যতীত কেউ যদি কাউকে হত্যা করে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকে হত্যা করল।” [সূরা আল্‌-মায়িদা ৩২]
অসাধু ব্যবসায়ীর পরিণতি— ব্যবসা জীবিকা উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম। তাই ব্যবসাবাণিজ্যকে বৈধ করা হয়েছে। এবং ব্যবসার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে নবী (সা) এ ক্ষেত্রে বরকত (সমৃদ্ধি)-এর জন্য বিশেষভাবে দুয়া করেছেন। তাই একজন ব্যবসায়ীর জন্য ব্যবসার ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশনিষেধ মেনে চলা একান্ত কর্তব্য। এবং অবহেলা ও অপকৌশল থেকে দূরে থাকা অপরিহার্য। কেননা আমরা যেখানেই থাকি না কেন আল্লাহ্‌ আমাদের সঙ্গে আছেন (অর্থাৎ জ্ঞান দিয়ে আমাদেরকে পরিব্যপ্ত করে রেখেছেন)। আর আমরা যা কিছু করছি তিনি দেখছেন। [সূরা আল্‌-হাদিদ ৪] তাই পণ্যে ভেজাল মিশিয়ে দুনিয়ায় পার পেয়ে গেলেও পরকালীন প্রায়শ্চিত্ত অবশ্যম্ভাবী। ঠিক একারণেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিল একটি মেয়ে, যখন তাকে তার মা দুধে জল মেশানোর জন্য পীড়াপীড়ি করছিল, মেয়েটি বলেছিল, “খলীফা না দেখলেও আল্লাহ্‌ তো দেখছেন।” এবং খলীফা উমার (রা) ছদ্মবেশে গিয়ে তার এই সততার কথা শুনে তাকে পুত্রবধূ করেছিলেন।
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রয়েছে। রাসুল (সা) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে নিঃস্ব ব্যক্তি হলো সে, যে কেয়ামতের দিনে নামায-রোযা-যাকাতসহ বহু ইবাদত নিয়ে উপস্থিত হবে; তবে পার্থিব জীবনে সে বহু অন্যায় করেছিল, কাউকে গালি দিয়েছিল, কাউকে অপবাদ দিয়েছিল, কারো অর্থসম্পদ আত্মসাৎ করেছিল, কাউকে আঘাত বা হত্যা করেছিল, অতঃপর এসব গোনাহের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ তার পুণ্য থেকে পীড়িতদের অংশ দিয়ে দেওয়া হবে। যদি পুণ্য কম পড়ে যায়; তাহলে দাবিদারদের গোনাহগুলো তার ঘাড়ে চাপানো হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। [মুসলিম ২৫৮১]
ভেজালকারীদের জন্য পার্থিব শাস্তির বিধান— ইসলাম সব ক্ষেত্রেই মানুষকে নৈতিকভাবে উজ্জীবিত করেছেযাতে সে স্বেচ্ছায় অন্যায় ও অপরাধ থেকে বিরত থাকে। যেহেতু শুধু উপদেশ সবসময় ফলপ্রসূ হয় না; তাই ইসলাম অপরাধ নির্মূলে শাস্তির বিধানও দিয়েছে। ইসলামে শাস্তিযোগ্য অপরাধগুলোর জন্য তিন ধরণের শাস্তির বিধান রয়েছে— (১) হুদুদ (জঘন্যতম কতিপয় অপরাধ ও পাপের জন্য যে নির্দিষ্ট শাস্তির বিধান রয়েছে), (২) কিসাস (হত্যা বা জখমের ক্ষেত্রে অনুরূপ নীতিভিত্তিক ন্যায়বিচার), (৩) তা’যির (কিসাস ও হুদুদ ব্যতিত অন্যান্য সকল অপরাধের ক্ষেত্রে সমাজ বা রাষ্ট্রের শরিয়ৎবিদগণ অপরাধের প্রকার-প্রকৃতি ও পরিণামের কথা ভেবে যে শাস্তি নির্ধারণ করেন)।
যেহেতু পণ্যে ও খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশ্রণ প্রতারণামূলক ও মানব বিধ্বংসী অপরাধ। তাই এক্ষেত্রেও শাস্তির বিধান রয়েছে; যাতে এ অপরাধ নির্মূল করা সহজসাধ্য হয়। এবং এটি মূলত তা’যির জাতীয় অপরাধ। অতএব ভেজালের পরিমাণ, আকৃতি-প্রকৃতি, পরিণামের ভয়াবহতা ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে ভেজাল প্রতিরোধ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নির্ধারণ করা ইসলামী বিধিসম্মত একটি পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি।
এবং আমি বিশ্বাস করি, পণ্যের দোষক্রটি গোপন করা এবং পণ্যে ভেজাল মেশানো ইসলামী আদর্শের একেবারেই পরিপন্থি কাজ। অতএব বিক্রেতাকে অবশ্যই পণ্যের দোষক্রটি ক্রেতার সামনে তুলে ধরতে হবে। এবং কোনো মুসলমানের জন্য কোনোভাবেই পণ্যের দোষ গোপন করা সমীচীন নয়; রাসুল (সা)-এর ভাষায়, “এটা কোনো মুসলমানের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাইয়ের কাছে ত্রুটিযুক্ত বস্তু বিক্রি করবে, অথচ সে তাকে সে-বিষয়ে জানাবে না।” [বুখারি ১৩০৩, ফাত্‌হুল বারী ৪/২০৭৯]
[পূবের কলম, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯-এর দ্বীনদুনিয়া ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত]


No comments:

Post a Comment