অনুগল্প ও ছোটগল্প—
মায়ার কানন – আব্দুল মাতিন ওয়াসিম, খলীফার পুত্রবধূ হলেন এক গোয়ালিনী যুবতী – আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
+91 9836314849
৭২) সূরাতু আল্-জিন্ (জিন জাতি)জিন
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا
(মুহাম্মদ
সাঃ) তুমি বলে দাও, আমার প্রতি ওহী (প্রত্যাদেশ) অবতীর্ণ করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা এক বিস্ময়কর আবৃত্তি ও পাঠ শ্রবণ করেছি;
يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا
যা সৎ পথ প্রদর্শন
ও নির্দেশ করে। ফলে আমরা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আর আমরা কখনও আমাদের পালনকর্তার
সাথে কাউকে শরীক ও অংশীদার স্থাপন করবো না।
وَأَنَّهُ تَعَالَى جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا
(আরও বিশ্বাস
করি যে,) আমাদের পালনকর্তা, তাঁর মহান মর্যাদা সবার উর্ধ্বে, তিনি না তো কোনো স্ত্রী
গ্রহণ করেছেন আর না তাঁর কোনো সন্তান আছে।
وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا
তবে আমাদের মধ্য
থেকে কিছু নির্বোধ (যেমন ইবলিশ শয়তান ও তার অনুগামীরা) মহান আল্লাহ সম্পর্কে বাড়াবাড়ি
করতো এবং সর্বৈব মিথ্যা কথা বলতো।
وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا
অথচ আমরা মনে
করতাম, মানুষ ও জিন কখনও মহান আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলতে পারে না।
وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا
তাছাড়া কিছু মানুষ
কতক জিনের আশ্রয় নিত, আর তারা অর্থাৎ জিনেরা ওই
মানুষদের আত্মম্ভরিতা, পাপাচারিতা ও সীমালঙ্ঘন আরও বাড়িয়ে দিত।
وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا
তারাও ধারণা করতো যেমন তোমরা ধারণা করতে যে, মহান আল্লাহ্ আর কাউকেই (রাসূল
অর্থাৎ বার্তাবাহক করে মানুষ ও জিনেদের নিকট) পাঠাবেন না।
وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاء فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ
حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا
আর আমরা আকাশমণ্ডলীকে
স্পর্শ ও পর্যবেক্ষণ করেছি; আমরা দেখেছি, আকাশ কঠোর প্রহরী
ও উল্কাপিন্ড দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে আছে।
وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ
فَمَن يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَّصَدًا
পূর্বে আমরা আকাশের
বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসে থাকতাম। কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে গেলে
দেখে, জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে আছে।
وَأَنَّا لَا نَدْرِي أَشَرٌّ أُرِيدَ بِمَن فِي الْأَرْضِ
أَمْ أَرَادَ بِهِمْ رَبُّهُمْ رَشَدًا
আমরা জানি না,
পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করার কোনো অভীষ্ট রয়েছে, না তাদের পালনকর্তা
তাদের মঙ্গল সাধনের ইচ্ছা করেছেন।
وَأَنَّا مِنَّا الصَّالِحُونَ وَمِنَّا دُونَ ذَلِكَ
كُنَّا طَرَائِقَ قِدَدًا
আমাদের মধ্যে
কিছু জন ছিল সৎ কর্মপরায়ণ আর কিছু জন ছিল অসৎ। সত্যি বলতে, আমরা বিভিন্ন পথে বিভক্ত
ছিলাম।
وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن نُّعجِزَ اللَّهَ فِي الْأَرْضِ
وَلَن نُّعْجِزَهُ هَرَبًا
আর আমরা বুঝতে
পেরেছি যে, আমরা পৃথিবীতে মহান আল্লাহকে কোনোভাবেই পরাস্ত ও পরাভূত করতে
পারবো না এবং কোথাও পালিয়ে গিয়েও তাঁকে অপারক ও অক্ষম করতে পারবো না।
وَأَنَّا لَمَّا سَمِعْنَا الْهُدَى آمَنَّا بِهِ فَمَن
يُؤْمِن بِرَبِّهِ فَلَا يَخَافُ بَخْسًا وَلَا رَهَقًا
ফলে আমরা যখন
সুপথের নির্দেশ (অর্থাৎ কুরআন-পাঠ) শুনলাম, আমরা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।
আর যে তার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সে যেন (তাঁর সৎ কর্মের বিনিময় প্রাপ্তির ক্ষেত্রে) কোনো
ক্ষয়ক্ষতি ও (ভুলত্রুটির শাস্তির ক্ষেত্রে) কোনোরকম বৃদ্ধির আশংকা না করে।
وَأَنَّا مِنَّا الْمُسْلِمُونَ وَمِنَّا الْقَاسِطُونَ
فَمَنْ أَسْلَمَ فَأُوْلَئِكَ تَحَرَّوْا رَشَدًا
আর আমাদের কিছুজন আজ্ঞাবহ
হয়েছেন এবং কিছুজন অন্যায়কারী। তবে যারা আজ্ঞাবহ হয়েছে তারাই সৎ পথ বেছে
নিয়েছে।
وَأَمَّا الْقَاسِطُونَ
فَكَانُوا لِجَهَنَّمَ حَطَبًا
আর যারা অন্যায়কারী, তারা তো জাহান্নামেরই ইন্ধন।
وَأَلَّوِ
اسْتَقَامُوا عَلَى الطَّرِيقَةِ لَأَسْقَيْنَاهُم مَّاء غَدَقًا
এবং এই প্রত্যাদেশও অবতীর্ণ করা
হয়েছে যে, তারা যদি সত্য পথে অবিচল থাকতো, তাহলে আমি
অবশ্যই তাদেরকে প্রচুর বর্ষণের মাধ্যমে সিক্ত ও সমৃদ্ধ করতাম।
لِنَفْتِنَهُمْ
فِيهِ وَمَن يُعْرِضْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِ يَسْلُكْهُ عَذَابًا صَعَدًا
যাতে এ ব্যাপারে তাদেরকে পরীক্ষা
করি। আর যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার স্মরণ ও উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তিনি তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ করবেন।
وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ
لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا
এবং এই প্রত্যাদেশও দেওয়া হয়েছে
যে, মসজিদসমূহ (অর্থাৎ সকল প্রকার আরাধনা ও স্তুতি) কেবল আল্লাহরই
জন্য। অতএব তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকেই ডেকো না।
وَأَنَّهُ
لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا
আর যখন আল্লাহর বান্দা (অর্থাৎ
নবী মুহাম্মদ সাঃ) তাঁকে ডাকার জন্য দাঁড়ায়, তখন অনেক জিন
তাঁর কাছে (তাঁর কুরআন পাঠ শোনার জন্য) ভিড় জমায়।
قُلْ إِنَّمَا
أَدْعُو رَبِّي وَلَا أُشْرِكُ بِهِ أَحَدًا
(হে মুহাম্মদ সাঃ) তুমি বলে
দাও, আমি তো আমার পালনকর্তাকেই ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না।
قُلْ إِنِّي
لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
আরও বলে দাও, আমার কোনো ক্ষমতা
নেই, না তোমাদের অনিষ্ট করার আর না তোমাদেরকে সুপথে চালিত করার।
قُلْ إِنِّي
لَن يُجِيرَنِي مِنَ اللَّهِ أَحَدٌ وَلَنْ أَجِدَ مِن دُونِهِ مُلْتَحَدًا
আরও বলে দাও, আল্লাহর কবল থেকে আমাকে
কেউই রক্ষা করতে পারবে না এবং আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও কাছে আমি কোনো আশ্রয়স্থল
পাবো না।
إِلَّا بَلَاغًا
مِّنَ اللَّهِ وَرِسَالَاتِهِ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ
جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا
তবে, আল্লাহর বাণী পৌছানো ও তাঁর
পয়গাম প্রচার করাই আমার কাজ। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা থাকবে
অনন্তকাল।
حَتَّى إِذَا
رَأَوْا مَا يُوعَدُونَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ أَضْعَفُ نَاصِرًا وَأَقَلُّ عَدَدًا
এমনকি যখন তারা প্রতিশ্রুত শাস্তি
দেখতে পাবে, তখন তারা জানতে পারবে, প্রকৃতপক্ষে কার সাহায্যকারী
দূর্বল এবং কার সংখ্যা কম।
قُلْ إِنْ
أَدْرِي أَقَرِيبٌ مَّا تُوعَدُونَ أَمْ يَجْعَلُ لَهُ رَبِّي أَمَدًا
তুমি বলে দাও, আমি জানি না তোমাদের
প্রতিশ্রুত বিষয় আসন্ন না আমার পালনকর্তা এর জন্য কোনো দীর্ঘ মেয়াদ স্থির করে রেখেছেন।
عَالِمُ الْغَيْبِ
فَلَا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا
(আর আমার প্রভু,) তিনিই অদৃশ্যের জ্ঞানী। তিনি তাঁর অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না।
إِلَّا مَنِ
ارْتَضَى مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا
তবে তাঁর মনোনীত নবী-রসূলদের নিকট (কিছু
অদৃশ্য বিষয়ে যতটুকু তিনি চান প্রকাশ করেন)। আর তিনি তাদের অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন।
لِيَعْلَمَ
أَن قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَى كُلَّ
شَيْءٍ عَدَدًا
যাতে তিনি যাচাই করে নেন যে, নবী-রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পয়গাম ও বার্তা (লোকেদের নিকট) পৌঁছে দিয়েছেন কি না। আর নবী-রসূলগণের কাছে যা কিছু আছে সবই তাঁর জ্ঞান-গোচরে রয়েছে। এবং তিনি সবকিছুর সংখ্যা সহ বিস্তারিত হিসেব রাখেন।
ভাবানুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম