Thursday 20 May 2021

আব্দুল মাতিন ওয়াসিমঃ মা-বাবা’র সাথে খুনসুটি


 
মা-বাবা’র সাথে খুনসুটি
 
আমি তখন খুব ছোট কত ছোট বা বয়স কত হবে, তা মনে নেই একদিন হঠাৎ করে আব্বা অসুস্থ হয়ে পড়লেন একেবারে বিছানা ধরে নিলেন বাবার একটা হাত একটা পা প্যারালাইজড হয়ে গেল ফলে পুরো সংসারের দায়িত্ব এসে পড়লো বড়দার কাঁধে সে তখন টুয়েলভে পড়ে স্বাভাবিক ভাবেই তার পড়াশুনোর বেশ ক্ষতি হল তার আর টুয়েলভ পাশ করা হল না সেই থেকে সে সংসার সামলাতে আরম্ভ করলো দিনমান মাঠে খাটে চাষ করে ফসল তোলে আর তা দিয়েই সংসার চলে আমাদের দু ভাইয়ের পড়াশুনোর খরচও চলে
 
বাবা ধীরে ধীরে সুস্থ হলেন অনেকটা স্বাভাবিক জীবন-ছন্দে ফিরলেন তবে আগের মতো খাটাখাটুনি সম্ভব হচ্ছিল না যেটুকু পারতেন দাদাকে চাষের কাজে সাহায্য করতেন সময় দ্রুত ছুটতে লাগলো আমরাও ধীরে ধীরে বড় হয়ে গেলাম এরই মধ্যে মেজদাও ডিগ্রি কমপ্লিট না করেই জমি-জায়গায় দেখাশোনায় লেগে গেলেন সত্যি বলতে, কৃষকের সংসার কি সেকাল, কি একাল সব সময় টেনেটুনেই চলে ওই যে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা তবে আমার পড়াশুনো কখনও থামেনি কারণ, বাবা-মা দুই দাদা সবাই চাইতেন, আমি মন দিয়ে পড়াশুনো করি জীবনে কিছু করি তাই তাঁদের পক্ষে যতটা সম্ভব তাঁরা আমার জন্য করতেন এরই মাঝে সংসারে আরও কিছু বিড়ম্বনা দেখা দিলো আমি বেনারস ছেড়ে বাড়ি ফিরলাম পড়াশুনোর পাশাপাশি টিউশন আরম্ভ করলাম কিছুদিন পর একটা মাদ্রাসায় পড়াতে আরম্ভ করলাম পড়া পড়ানো দুটোই চলতে থাকলো
 
আমি যখন থেকে রোজগার করতে আরম্ভ করেছি, একটা জিনিস ঠিক করেছিলাম, প্রতি মাসে কিছু টাকা বাবার হাতে তুলে দেবো তিনি তাঁর মতো করে খরচ করবেন সামান্য হলেও দেবো দিতামও সেই টাকা হাতে নিয়ে বাবা খুব খুশী হতেন ওই টাকার দিকে তাকিয়ে বাবার মুখে এক নির্মল হাসি ছড়িয়ে পড়তো এক অদ্ভুত তৃপ্তির রেখা লক্ষ্য করতাম বাবার কপালের রেখায় মাঝে মাঝে বাড়ি ফেরার সময় বাবার জন্য বাবার পছন্দ মতো কিছু খাবার এবং মায়ের জন্য মায়ের পছন্দ মতো কিছু খাবার কিনে আনতাম একদিন কিছু খাবার কিনে এনেছি, কী খাবার ছিল তা আজ আর মনে নেই সবাই মিলে বিকেলে বসে সেই খাবার খাচ্ছি বাবার খুব পছন্দের খাবার ছিল, তাই বাবাকে একটু বেশিই দিয়েছিলাম সবাই পাশাপাশি বসে যে যার মতো করে খাচ্ছি খাচ্ছি আর এটা-সেটা নিয়ে গল্পগুজব করছি এমন সময় হঠাৎ আমার দৃষ্টি গেলো বাবার দিকে দেখলাম, বাবা খানিকটা আড়াল করেই কিছু খাবার তাঁর থালা থেকে তুলে মায়ের থালায় দিচ্ছেন আর মা হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছেন এবং বাবাকেই তা খেতে বলছেন বাবা যখন লক্ষ্য করলেন যে আমি দেখে ফেলেছি, জোর করে মায়ের থালায় খাবারটুকু রেখে দিলেন সেই সুযোগে আমিও খুনসুটি করে বাবাকে বললাম, “বেশ তো আমার আনা খাবার দিয়েই প্রেম চলছে তাহলে আমার কথা শুনে বাবা ফিক করে হেসে উঠলেন, আর মা লজ্জায় আঁচল টানলেন ওই নির্মল হাসি দিয়ে বাবা আমার দিকে তাকালেন, শিশুর মতো নিষ্পাপ দৃষ্টিতে, যেন কোনো আবদার তাঁর চোখের পাতায় ভেসে উঠেছে যেন কোনো সন্তান বাবার কাছে কিছু চাইছে যেন কোনো শিশু কিছু নেবে বলে বায়না ধরেছে মায়ের কাছে আমার জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি বাবার সেদিনের সেই নির্মল হাসি   
 
প্রায় দশ বছর হতে চলল, বাবাকে হারিয়েছি সেই চেনা কণ্ঠ শুনিনি বহু বছর ফজরের পর তাঁর সেই দরাজ কণ্ঠে কুরআনের তেলাওয়াত শুনিনি বহু দিন বাবা, কত দিন, কত দিন দেখি না তোমায়!
 
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
১৯-০৫-২০২১
বাঁশকুড়ি, মহিপাল, দঃ দিনাজপুর

Tuesday 4 May 2021

আল-কুরআনের ভাবানুবাদঃ (৬৭) সূরাতু আল্‌-মুল্‌ক (ক্ষমতা)

 


৬৭) সূরাতু আল্‌-মুল্‌ক (ক্ষমতা) 

মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৩০, রুকু’ ২
 
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
আল্লাহ্‌র নামে (আরম্ভ করছি), তিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু

تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

পূণ্যময় তিনি, যাঁর হাতে সকল ক্ষমতা। এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান

الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ

তিনিই সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবনকে, যাতে তোমাদের পরীক্ষা করেন— কে তোমাদের মধ্যে কর্মের বিচারে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম? তিনিই পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল

الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِن تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِن فُطُورٍ

তিনিই সাতটি আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি সেই করুণাময় আল্লাহ্‌র সৃষ্টিতে কোনো খুঁত, কোনো ত্রুটি দেখতে পাবে না। আবারও তাকিয়ে দেখো; কোনো অসঙ্গতি দেখতে পাচ্ছো কি?

ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِأً وَهُوَ حَسِيرٌ

অতঃপর তুমি যত বারই ফিরে ফিরে চেয়ে দেখবে, তত বারই তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।

وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ

আমি নিকটবর্তী এই দৃশ্যমান আকাশকে প্রদীপমালা (অর্থাৎ নক্ষত্রমণ্ডলী) দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং কিছু প্রদীপকে শয়তানদের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র করেছি এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুণের শাস্তি।

وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

আর যারা তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। আর জাহান্নাম কতই না নিকৃষ্ট স্থান।

إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ

যখন তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা জাহান্নামের উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে। আর (তারা লক্ষ্য করবে,) জাহান্নাম টগবগ করে ফুটছে।

تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ

(সেদিন) অত্যাধিক ক্রোধে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। আর যখনই তাতে কোনো সম্প্রদায় নিক্ষিপ্ত হবে তাদেরকে জাহান্নামের সিপাহীরা জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কাছে কি কোনো সতর্ককারী পৌঁছয়নি?

قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِن شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ

তারা (উত্তরে) বলবে, হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিলো। কিন্তু আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলাম, মহান আল্লাহ কোনো কিছুই অবতীর্ণ করেননি। বাস্তবে তোমরা তো মহা বিভ্রান্তিতে পড়ে রয়েছ।

وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ

(সেদিন) তারা আরও বলবে, যদি আমরা (সতর্ককারী ব্যক্তির কথা) শুনতাম বা (তাঁর নিয়ে আসা বার্তা ও বিধানকে) বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে অনুধাবন ও উপলব্ধি করতাম, তাহলে (আজ) আমরা জাহান্নামবাসী হতাম না।

فَاعْتَرَفُوا بِذَنبِهِمْ فَسُحْقًا لِّأَصْحَابِ السَّعِيرِ

অতঃপর তারা তাদের অপরাধ ও ত্রুটিসমূহের কথা স্বীকার করবে। সুতরাং অভিসম্পাত হোক্‌ জাহান্নামীদের প্রতি!

إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالْغَيْبِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ

তবে যারা তাদের পালনকর্তাকে (এবং তাঁর শাস্তি ইহলোকে) না দেখেও ভয় করে, নিঃসন্দেহে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার (অর্থাৎ জান্নাত)

وَأَسِرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বলো অথবা প্রকাশ্যে, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত।

أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ

যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাঁর সৃষ্টি সম্বন্ধে জানবেন না, তা কী করে হয়? তিনি তো (তাঁর সৃষ্টির) সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়েও সম্যক জ্ঞাত।

هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِن رِّزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

তিনিই তোমাদের (বসবাস, চলাফেরা ও চাষবাসের) জন্য পৃথিবীকে সুগম করেছেন অতএব, তোমরা পৃথিবীর কাঁধে বিচরণ করো এবং তাঁর দেওয়া জীবিকা হতে আহার কর। (তোমাদের সবাইকে) তাঁরই নিকট পুনরুজ্জীবিত হয়ে ফিরে যেতে হবে।

أَأَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاء أَن يَخْسِفَ بِكُمُ الأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ

তোমরা কি নিরাপত্তা পেয়ে গেছো যে, আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন না; এবং পৃথিবী তো তখন থরথর করে কাঁপতে থাকবে?

أَمْ أَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاء أَن يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ

নাকি তোমরা নিশ্চিন্ত হয়ে গেছো যে, আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী বাতাস প্রেরণ করবেন না? সেদিন তোমরা জানতে পারবে, কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী!

وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ

আর তাদের পূর্ববর্তী লোকেরাও মিথ্যারোপ করেছিল; অতঃপর (তাদের প্রতি) আমার শাস্তি কত কঠোর হয়েছিল।

أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ

তারা কি লক্ষ্য করে না তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পাখীগুলির প্রতি, কিছু পাখী (উড়ন্ত অবস্থায়) ডানা মেলে আর কিছু পাখী ডানা সংকুচিত করে রাখে? মহান আল্লাহ্‌ই তাদেরকে ধরে রাখেন, তিনি অত্যন্ত দয়ালু এবং তিনিই সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।

أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُندٌ لَّكُمْ يَنصُرُكُم مِّن دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ

অতীব দয়ালু মহান আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের অন্য কোনো সৈন্যবাহিনী আছে কি, যারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে? অবিশ্বাসীরা তো বিভ্রান্তিতেই ডুবে আছে

أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَل لَّجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ

তিনি যদি তাঁর দেওয়া জীবনোপকরণ বন্ধ করে দেন, তাহলে কে এমন আছে যে তোমাদের জন্য রিজিকের ব্যবস্থা করবে? (কেউ নেই!) তবুও তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে আছে

أَفَمَن يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّن يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ

যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখে ভর দিয়ে চলে, সে-ই কি সুপথপ্রাপ্ত, না কি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল ও সঠিক (ইসলামের একত্ববাদের) পথে চলে?

قُلْ هُوَ الَّذِي أَنشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ

(হে মুহাম্মদ সাঃ) তুমি বলে দাও, তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও মননশক্তি প্রদান করেছেন তা সত্ত্বেও তোমরা খুব অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকো

قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

বলে দাও, তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন। এবং (মহাপ্রলয় দিবসে) তাঁরই কাছে তোমাদেরকে একত্রিত ও সমবেত করা হবে।

وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ

কাফেরেরা (ব্যঙ্গাত্মক স্বরে) বলে, যদি তোমরা (তোমাদের যাবতীয় দাবী ও কথায়) সত্যবাদী হও (তাহলে বলো,) এই প্রতিশ্রুতি (মহাপ্রলয়) কবে বাস্তবায়িত হবে?

قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

(হে মুহাম্মদ সাঃ) তুমি (তাদেরকে) বলে দাও, (প্রলয় ঠিক কবে এবং কখন সংঘটিত হবে) এর প্রকৃত জ্ঞান তো কেবল আল্লাহর কাছেই আছে। আর আমি তো প্রকাশ্য সতর্ককারী মাত্র

فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنتُم بِهِ تَدَّعُونَ

যখন তারা (এই প্রতিশ্রুত প্রলয় দিবসে কঠিন শাস্তিকে) তাদের নিকটবর্তী দেখবে তখন কাফেরদের মুখমণ্ডল মলিন ও বিবর্ণ হয়ে যাবে এবং (তাদেরকে) বলা হবে, এটাই তো তোমরা দাবী করতে

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَن مَّعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَن يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

(হে মুহাম্মদ সাঃ) তুমি বলে দাও, তোমরা কি ভেবে দেখেছ- যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গীসাথীদেরকে ধ্বংস করে দেন (যেমনটা তোমরা আকাঙ্ক্ষা করছো) অথবা তিনি যদি আমাদের প্রতি দয়া করেন (আমাদেরকে দীর্ঘজীবী করেন এবং শাস্তি থেকে মুক্তি দেন; আর তিনি তো সবই করতে সক্ষম), কিন্তু কাফেরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে কে রক্ষা করবে?

قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ

তুমি বলে দাও, তিনি হচ্ছেন পরম করুণাময়, আমরা তাঁর প্রতি ঈমান নিয়ে এসেছি এবং তাঁরই উপর আমরা ভরসা করি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে, কে স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় রয়েছে

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَن يَأْتِيكُم بِمَاء مَّعِينٍ

তুমি (তাদেরকে এও) বলে দাও, তোমরা কি ভেবে দেখেছ, যদি তোমাদের পানীয় জল ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে সুপেয় জলের স্রোতধারা সরবরাহ করবে?

ভাবানুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম