Sunday 17 December 2017

আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবসঃ ১৮ই ডিসেম্বর


 আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবসঃ ১৮ই ডিসেম্বর 
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম

আজ ১৮ই ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবস। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি আরব বিশ্বসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পালিত ও উদযাপিত হচ্ছেপশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা ও ভাষা ইনস্টিটিউটে দিবসটি বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয়। অন্যান্য ভারতীয়দের ন্যায় আমরা বাঙালিরাও প্রতিনিয়ত পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসংখ্য আরবি শব্দ ব্যবহার করে থাকি। এমনকি বাংলা ভাষাসহ বিশ্বের বহু ভাষায় আরবির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর দাপ্তরিক ভাষা ছিল পাঁচটি; যথা- ইংরেজি, ফরাসী, চীনা, রাশিয়ান ও স্প্যানিশ। আরব নেতাদের নিজ মাতৃভাষা ব্যবহারের কোনো সুযোগ ছিল না। অন্য ভাষাতে তাঁদেরকে বক্তব্য প্রদান ও শ্রবণ করতে হতো। এমনকি নথিপত্র আরবি থেকে কোন দাপ্তরিক ভাষায় অনুবাদ করে উপস্থাপন করতে হতো। অতঃপর সৌদি আরব ও মরক্কো সরকারের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর জাতিপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ ১৯৫৪ সালে ৪র্থ ডিসেম্বর জাতিপুঞ্জের নবম অধিবেশনে ৮৭৮ নং প্রস্তাবে বছরে চার হাজার পৃষ্ঠা আরবিতে লিখিত অনুবাদ প্রকাশের বৈধতা প্রদান করে। সাথে এ শর্ত জুড়ে দেয়, অনুবাদের ব্যয়ভার সংশ্লিষ্ট দেশকে বহন করতে হবে১৯৬০ সালে জাতিপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো আরব দেশগুলোতে আরবি ভাষায় সেমিনার ও জাতীয় সম্মেলন পরিচালনা এবং নথিপত্র ও প্রচারপত্র আরবিতে প্রকাশ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ১৯৬৬ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ অধিবেশনগুলোতে অন্য ভাষা থেকে আরবিতে এবং আরবি থেকে অন্য ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পর্যায়ক্রমে ১৯৬৮ সালে অনুবাদের সাথে সাথে আরবি ভাষাকে ইউনেস্কোর সাধারণ সভা ও কর্ম পরিষদের কার্যকরি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে সৌদি ও মরক্কোর পাশাপাশি আরব বিশ্বের কূটনৈতিক চাপে ১৮ই ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার ২৮তম অধিবেশনে ৩১৯০ নং সিদ্ধান্তে আরবিকে ষষ্ঠ দাপ্তরিক ভাষারূপে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।      
জাতিপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো-র ১৯৯৯ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনকে সম্মান জানাতে প্রতি বছর ২১ই ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসউদযাপনের প্রস্তাব জাতিপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ছ’টি ভাষার জন্যও পৃথক পৃথক আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের ঘোষণা করা হয়২০শে মার্চ আন্তর্জাতিক ফরাসী ভাষা দিবস; ২০শে এপ্রিল আন্তর্জাতিক চীনা ভাষা দিবস, চীনা বর্ণমালার প্রতিষ্ঠাতা সঙ জি হৈ এর স্মরণে; ২৩শে এপ্রিল আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা দিবস, উইলিয়াম সেক্সপিয়ারের মৃত্যু বার্ষিকী স্মরণে; ৬ই জুন আন্তর্জাতিক রুশ ভাষা দিবস, রাশিয়ান কবি আলেকজান্ডার পুশকিনের জন্ম বার্ষিকী স্মরণে; ২১শে অক্টোবর আন্তর্জাতিক স্প্যানিশ ভাষা দিবস এবং ২০১২ সালে ১৮ই ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবসঘোষণা করা হয়। অতঃপর সে বছরেই ১৩-১৮ই অক্টোবর প্যারিসের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদের ১৯০তম সভায় আরব রাষ্ট্রদূতগণের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক এ দিবসের প্রতীক অনুমোদন করা হয়
আরবি পৃথিবীর প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ভাষা। বর্তমান ২৭টি দেশের প্রধান ভাষা। বিশ্বের ৪২২ মিলিয়ন আরব জনগোষ্ঠীর ভাব বিনিময়য়ের মাধ্যম। দেড়শ কোটিরও বেশি মুসলমান দৈনন্দিন জীবনে এভাষা অল্পবিস্তর ব্যবহার করেন। জাতিপুঞ্জ, আফ্রিকান ইউনিয়ন, ওআইসি সহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার দাপ্তরিক ভাষা এমনকি বর্তমানে ট্রেড ল্যাংগুয়েজ হিসেবেও বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে এই ভাষাআন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের মোড়কে পণ্যের বিজ্ঞাপন ও গুণাগুণ আরবিতে লেখা দেখতে পাওয়া যায়।
আরবি ভাষার সাথে ভারতীয়দের পরিচয় ঘটে সুদূর অতীতে বাণিজ্যসূত্রে। বাণিজ্যিক প্রয়োজনে এবং ধর্মচর্চার আবহে তখন থেকেই এদেশে আরবির চর্চা শুরু হলেও আজও তা ধর্মীয় গণ্ডীতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে বললে অত্যুক্তি হবে না আরবি ভাষা এদেশের আধুনিক জীবন-যাত্রার সাথে এখনো সম্পৃক্ত হতে পারেনি। যদিও আমরা বাঙালিরাও দৈনন্দিন জীবনের আবেগ-অনুভূতি, চিন্তা-চেতনা, আশা-আকাঙ্খা, দুঃখ-বেদনা ও অভিমত ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে অসংখ্য আরবি শব্দ অহরহ ব্যবহার করে থাকিতাছাড়া অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী আরব দেশগুলোতে কর্মের সন্ধানে, বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আরবি চর্চার প্রয়োজন আমরা সকলেই অনুভব করি।

মনে রাখা দরকার, ভাষা কখনো হিন্দু বা মুসলিম হয় না। ভাষা তাঁদের যারা সে ভাষায় চর্চা করে। তাই আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব এই কালজয়ী ভাষাটিকে শিখে এর সমৃদ্ধ সাহিত্যকে আস্বাদন করা। প্রয়োজনে একক ও সম্মিলিত, সরকারী ও বেসরকারীভাবে উদ্যোগ নেওয়া। পত্র-পত্রিকা, নিউজ, টেলিভিশন ইত্যাদির সাহায্যে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা। চরম পরিতাপের বিষয় যে, কবিগুরু আরবদের নিকট অত্যন্ত সমাদৃত। কিন্তু তাঁর বিপুল কর্মকাণ্ডের কিঞ্চিতরই আরবিতে অনুবাদ হয়েছে; তবে সেগুলি ইংরেজি বা ফরাসীর মাধ্যমে, সরাসরি বাংলা থেকে হয়নি; সহজভাবে বললে- অনুবাদের অনুবাদ। অন্যদিকে নাজিব মাহফুযের কায়রো ট্রিলজি, খলিল জিবরানের দ্য প্রোফেট-এর পাশাপাশি ফিলিস্তিনের জাতীয় কবি দারবেশ, অ্যাডোনিস, আশরাফ ফাইয়ায প্রমুখরা বাঙালী সাহিত্যমোদীদের নিকট অত্যন্ত সুপরিচিত। কিন্তু তাঁদের সৃজনশীলতাকে এই সমাজ জানতে পারে ইংরেজি বা ইংরেজি হতে কেউ অনুবাদ করলে তার মাধ্যমে। আরবি হতে সরাসরি বাংলায় অনূদিত সাহিত্যকর্ম কলকাতার বই-বাজারে এত দুর্লভ কেন- আরবি পড়ুয়া ও শিক্ষকদের নিকট সমাজের একটি অব্যক্ত প্রশ্ন।


No automatic alt text available.
১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ পূবের কলম-এ প্রকাশিত

Friday 15 December 2017

اَلْعَلَّامَةُ أبُو مَحْفُوظ الْكَرِيْمُ الْمَعْصُومِيُّ


اَلْعَلَّامَةُ أبُو مَحْفُوظ الْكَرِيْمُ الْمَعْصُومِيُّ
 (١٩٣١ - ٢٠٠٩ م)
 عبد المتين وسيم

تَعْرِيْفُهُ وَ مَوْلِدُهُ:
هُوَ الْعَلّامَةُ أبُو مَحْفُوظٍ الكريم المعصومي، وُلِدَ فِيْ 31 يُولِيُو مِنْ عَامِ 1931م فِيْ قَـرْيَةِ مَهْوا تُولَهْ بِبَلْدَةِ بِيْهَارْ شَرِيْف  لِلْهِنْدِ. كَانَ أبُوهُ مَوْلانَا مُحَمّدٌ أمِيْر حَسَن أحَدَ أبْرَزِ رِجَالِ الْعِــلْمِ ، قَدْ شَغَلَ مَنْصَبَ الْإفْتاءِ فِي المدرسة السبحانية بإلَهَ آبَاد فِي أوتْرَا بَرَادِيْش. وَ كانَ جَدُّهُ الشَّيْخُ مُحَمّدٌ مَعْصُوم مُشْتَهِرًا بِالْعِبَادَةِ وَالصَّلاحِ.

نَشْأتُهُ وَ تَعلِيمُهُ:
عَاشَ فِي أسْرَةٍ عُرِفَتْ بِالْعِلْمِ وَحُبِّ الْعُلمَاءِ. و لَمْ تَسْتَقِرَّ أسْرتُهُ في الْقَرْيَةِ طَويْلًا، بَلْ أخَذَتْ تَتَنَقَّلُ حَتّى اسْتَقَرَّتْ في مَديْنَةِ كُولْكاتَا.
تَلَمّذَ الْمَعْصُومِي عَلى وَالِدهِ، وَأخَذَ عنْهُ عُلوْمَ اللُّغَةِ وَالشَّريْعَةِ، والْمَنْطِقِ، ثُمّ الْتَحَقَ بِالْمَدْرسَةِ الْحُكُومِيَّةِ المدرسة العالية.

نَشاطاتُهُ التَّدْريْسِيَّةُ:
عُيِّنَ الْمَعصومي بَعدَ ذلك في الْمَدرسةِ الْعَالِيةِ بِوَظيفةِ مُساعِد مُدَرِّسٍ، وَاسْتمَرَّ إلى أنْ تَمَّ تَرَقِّيَتُهُ عَــام 1950 إلى وَظِيْفةِ مُحَاضِرٍ. و لمْ يزلْ حَتى عام 1968م حَيْثُ عُيِّنَ عَلى مَرْتبَةِ أسْتاذٍ، ثُمّ أحِيلَ مِنْها في عام1991م إلى التَّقَـاعُدِ.

وَفاتُه:
تُوُفِّيَ صَباحَ يَوْمِ الثُّلاثاءِ 16 يونيو عام 2009 م (23 جمادى الثانية 1430هـ) بَعْدَ أنْ قَضَى حَياةً حَافلةً بِالتّأليْفِ والبَحْثِ والتّحْقيقِ، وَكسَبَ احْتِرامَ وتَقْديرَ أعْلامِ الْعُلماءِ وَالبَاحثينَ.

مَوَاهِبُه و نتاجه:
اشْتَهَرَ بِالتّدْقيقِ والتّحْقيقِ في أبْحاثِه وتَعْليْقــاتِه مَعَ بَصَرٍ بالعـربيةِ عَجيبٍ، وحَافظةٍ فَذّةِ التّنَفُّسِ. و كانتْ له الْيَدُ الطُّولى في عُلومِ الحديثِ، و التّفْسيرِ، والتّاريخِ. وتَمرّس في اللغاتِ الأرديةِ والفارسيةِ والإنكليزيةِ.
و له إنْتاجَات علميّةُ كَثيرةٌ، بعضها يلي:
أولا- النصوص المحققة:  
‌أ)          كتابُ شرْحِ الألفات لأبي بكر الأنباري
‌ب)     مسألة صفات الذاكرين لأبي عـبد الرحمن
‌ج)      نوادر أبي علي الهجري
‌د)        القول المسموع في الفرق بين الكوع و الكرسوع للسّيد مُرْتضى الزُّبَيْدي
‌ه)       أرْجُوزَتانِ للسّيد مُرْتضى الزُّبَيْدي.

ثانيا- البحوث و المقالات:
‌أ)          كَعَبُ بْنُ زُهيرٍ - نَسَبُه وشعرُه. 
‌ب)     شَرْفُ الدّين البُوصيري في قصيدتِه الْمِيميّةِ.
‌ج)      مقتطفـات من شعر غالب.
‌د)        أغانِيُ الشّعْـبِ الكشْمـيري.
‌ه)       خسرو – الشاعر الهندي-و مكانته في اللغة العربية
و جُمعتْ مقالاتُه في " بُحوْثٍ و تَنْبيْهاتٍ" الّتي شاعَ بها ذكرُه في العالمِ العربيّ كُلِّهِ. و قام بهذا العمل الأستاذ محمد أجمل الإصلاحي. 



Image result for ‫أبو محفوظ الكريم المعصومي‬‎ 

Tuesday 12 December 2017

النواب صديق حسن خان القنوجي

النواب صديق حسن خان القنوجي
 (1832-1890م)
 عبد المتين وسيم 

تَعْـــرِيْفُهُ وَ مِيْـــلَادُهُ:
هُوَ النَّوَابُ صِدِّيْق بن حَسَــن بْن عَـلِيٍّ بن لطف الله الْقَنُّوجِيُّ أحَـد النُّجُومِ الْمُتَلَألِيَةِ فِيْ سَمَــاءِ الْعُـــلُومِ الْإسْـــلامِيَّةِ، و أحَدَ الشّخْصِيّاتِ الْعَبْقَــرِيَّةِ فِيْ تَارِيْخِ الْهِنْـدِ. وُلِدَ عَامَ 1832م بِمَدِيْنَةِ بَرِيْلِيْ لأترابراديش فِيْ أُسْـــرَةٍ كَرِيْمَةٍ مِـنَ الْأَشْـرَافِ. وَ كَانَ أجْدَادُهُ مِنْ بَلْدَةِ قَنُّوج؛ فَمِنْ ثَمَّ شُهْرَتُهُ بِالْقَنُّوْجِي. 

نَشْـــأتُهُ و تَعْــلِيْمُهُ:                                           
دَرَسَ عَـــلَى أخِيْهِ إذْ تُوُفِّيَ أبُوهُ فِيْ صِغَــرِ سِنِّهِ. ثُمَّ دَرَسَ فِي مُخْتَلِفِ مُدُنِ الْهِنْـــدِ. وَ تَلَمَّــذَ عَلَى الْمُفْتِي صَــدْرِالدِّيْنِ، و تَخَرَّجَ عَلَيْهِ فِي الْمَنْطِــقِ و الْعَرَبِيَّـــةِ و الْفِقْــــهِ و الْحَدِيْثِ بَعْدَ سَنَتَيْنِ.

انشغالاته:
سَـــافَرَ إِلَى بُهوبَال لِلْاِسْــتِرْزَاقِ، فتَوَظَّفَ هُناكَ عِنْـــدَ وَزِيْرِ الدَّوْلَةِ جَمَــالِ الدِّيْنِ يُدَرِّسُ أسْبَاتَهُ. و انْتَهَزَ الْفُرْصَــةَ فَدَرَسَ الْحَـــدِيْثَ فِيْهَا عَلَى كِبَارِ الْمُحَدِّثِيْنَ.
و لما سافر إلى الحج التقى بعدد علماء اليمن فأخذ عنهم. و عندما رجع مِنَ الْحَجِّ عُيِّنَ نَاظِــرَ الْمَعَــارِفِ، ثُمَّ نَاظِرَ دِيْوَانِ الرَّسَــائِلِ، و منح لقب خان. و كَــانَ يَتَرَدَّدُ إِلَى الْمَــلِكَةِ لِتَعْـــرِيْضِ الْأوْرَاقِ الرَّسْمِيَّةِ، فَأُعْجِبَتْ بِصِفَاتِهِ فَتَزَوَّجَتْهُ وَ جَعَلَتْهُ الْمُسْتَشَارَ الْأعْلَى لِلدَّوْلَةِ.

وَفَـــــاتُهُ:
لَقَّبَتْــهُ الْحُكُـوْمَةُ الْإنْكِلِيْزِيَّةُ بِالنَّوابِ لِخِدْمِاتِهِ الْجَلِيْــلَةِ في حقل حقوق الإنسان و رفاهية المجتمع البشري الهندي ثقافيا و حضاريا. وَ كَانَ النواب كَذَلِكَ مُشْـتَغِلًا بِانشغالاته العلمية و الرَّسْمِيَّـــةِ حَتَّى وَافَتْــهُ الْمَنِيَّةُ سَنَةَ 1890م.

إلمامه و نتاجه العلمي و الفكري:
لَهُ مُؤَلَّفَاتٌ كَثِيْرَةٌ فِي مُخْتَلِفِ الْعُـــلُومِ وَ الْفُنُونِ فِي لُغَــاتٍ ثَلَاثٍ: الْعَـــرَبِيَّةِ وَ الْفَارِسِيَّةِ وَ الْأُرْدِيَّةِ. لَكِنْ مُعْظَمُــهَا بِالْعَرَبِيَّةِ، وَ قَـْد بَلَغَ عَدَدُ مُؤلَّفَاتِهِ إلَى 222. و لَهُ كُتُبٌ عَدِيْدَةٌ فِي تَارِيخِ الثَّـقَــافَةِ الْإسْــلامِيَّةِ الْعَـرَبِيَّةِ و تَراجِمِ الْعُـلَمَــــاءِ، و أهَـمُّهَا "أبْـجَـــدُ الْعُــــلُومِ" فِي ثَلاثَةِ أجْـــزَاءٍ. و له تُرَاث عِـلْمِيُّ وَ ْأدَبِيُّ آخر يَلِيْ-
‌أ)                    فتح البيان في مقاصد القرآن (في أربعة مجلدات)
‌ب)               مسك الختام شرح بلوغ المرام (في مجلدين)
‌ج)                ترجمان الوهابية
‌د)                  بغية الرائد في شرح القائد
‌ه)                 الروضة الندية في شرح الدرر البهية
‌و)                  الْبَــلغَةُ فِي أُصُولِ اللُّغَـــةِ
‌ز)                  رَبِيـْــعُ الْأدَبِ  (مخطوط)
‌ح)                نَشْـــوَةُ السَّــكْرانِ مِنْ صَهْبَـــاءِ تَذْكَــــارِ الْغَزْلانِ
وَكَانَ يَقْرِضُ الشِّعْـــرَ أيْضـــاً، فَلَهُ فِي آخِرِ كِتَابِهِ "نَشْـــوَة السَّــكْرَانِ" قَصِيْــدَةٌ غَزَلِيَّـــةٌ- نَظَمَهَـــا فِي شَبَـــابِهِ- وَ بَعْضُ قَصَائِدَ أُخْرَى.

Image result for ‫النواب صديق حسن خان القنوجي‬‎
Image result for ‫النواب صديق حسن خان القنوجي‬‎Image result for ‫النواب صديق حسن خان القنوجي‬‎Image result for ‫النواب صديق حسن خان القنوجي‬‎Image result for ‫النواب صديق حسن خان القنوجي‬‎

Saturday 9 December 2017

আমীরুশ শুআরা আহমাদ শাওকী


আমীরুশ্‌ শুআরা আহ়্মাদ শাওক়ী
(১৮৬৮১৯৩২ খ্রি)
 আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
পরিচিতি ও জন্মঃ
কবি আহ়্মাদ শাওক়ী সেই পাঁচজন কবির মধ্যে শীর্ষস্থানীয় যাঁদের হাতে আধুনিক আরবী কাব্য সাহিত্য প্রতিপালিত হয়েছে এবং যাঁদের হাত ধরে আরবী কবিতা পূর্ণতা লাভ করেছে। তাঁর নাম আহ়্মাদ শাওক়ীতিনি আমীরুশ্‌ শুআরা (আধুনিক কবি-সম্রাট) উপাধিতে ভূষিত। ১৮৬৮ সালে ১৬ই অক্টোবর মিসরের রাজধানী কায়রোতে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা আরবীয়, মাতা তুর্কীশ, পিতামহী কুর্দিশ এবং মাতামহী গ্রীক বংশোদ্ভূত। এভাবে চারটি পৃথক সংস্কৃতি তাঁর ধমনীতে প্রবাহিত হয়েছিল।    
 
শিক্ষা জীবনঃ
চার বছর বয়সে তাঁকে কুত্তাবুশ্‌ শায়েখ সালেহ নামক মক্তবে ভর্তি করা হয়। অতঃপর মাদ্‌রাসাতুল্‌ মুব্‌তাদিয়ান এবং মাদ্‌রাসাতুত্‌ তাজ্‌হিযিয়্যাহ্‌তে পাঠ গ্রহণ করেন। তারপরে আইন মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। দু’ বছর পর অনুবাদ বিভাগ হতে ফরাসী ভাষা শেখেন এবং এ বিষয়ে সনদ অর্জন করেন। ১৮৮৭-তে আইন ও সাহিত্য অধ্যয়নের জন্য তিনি পর্যায়ক্রমে ফ্রান্সের মনপালিয়া ও প্যারিস যাত্রা করেন। ১৮৯১ সালে ইস্তানবুল হয়ে মিসর প্রত্যাবর্তন করেন।    
 
দরবারী কবিঃ
ফিরে এসে তিনি শাসক ‘আব্বাস হিল্‌মীর নৈকট্য লাভ করেন। দিনের পর দিন তাঁদের বন্ধুত্ব দৃঢ় হতে থাকে। এভাবে তিনি শাসকের কবি ও মুখপাত্রে পরিণত হন। ১৯৮৪ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত প্রাচ্যবিদদের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে মিসরের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেখানে তিনি তাঁর বিখ্যাত কবিতাকেবারুল্‌ হাওয়াদিস ফী ওয়াদিন্‌ নীলআবৃত্তি করেন।   
 
নির্বাসনেঃ
১৯১৫ সালে যখন ইংরেজরা খিদিভ ‘আব্বাসকে ক্ষমতাচ্যুত করল প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে জার্মানি ও তুরস্ককে সমর্থন করার অজুহাতে এবং তাঁর পরিবর্তে হুসাইন কামিলকে সিংহাসনে বসালো কবি প্রকাশ্য এর বিরোধিতা করলেন। ফলে তাঁকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হল। তিনি স্পেনের বার্সিলোনায় চলে গেলেন। সেখানেই নির্বাসনের পাঁচ বছরের (১৯১৫১৯১৯) অতিবাহিত করলেন।
 
জাতির কবিঃ
১৯২০-তে দেশে ফিরে তদানীন্তন মিসরের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে অংশ গ্রহণ শুরু করেন। রাজনৈতিক সংস্কার, জাতীয় সমস্যাসমূহের সমাধান ও আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের ব্যাপারে সরব হন। অতঃপর ১৯২৪ সালে তাঁকে মাজ্‌লিসুশ্‌ শুয়ূখ (আমাদের রাজ্যসভার মতো একটা সংসদীয় কমিটি)-এর সদস্য করা হয়। ১৯২৭ সালে কায়রোর অপেরা হাউসে অনুষ্ঠিত কাব্য মেলায় আরব বিশ্বের কবি-বিদ্বান ও রাজনীতিবিদদের উপস্থিতিতে তাঁকে আমীরুশ্‌ শুআরা (আধুনিক যুগের কবি-সম্রাট) উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এই বিরল প্রতিভাধর ব্যক্তিত্বটি ১৯৩২-এর ১৪ই অক্টোবর কায়রোয় মৃত্যু বরণ করেন।      
 
তাঁর রচনাসমূহঃ
তাঁর কবিতার সংকলনটি “আশ্‌-শাওকিয়্যাত” নামে চার খণ্ডে প্রকাশিত। এছাড়া “আস্‌ওয়াকুয্‌ যাহাব” তাঁর সামাজিক প্রবন্ধসমূহের সংকলন। তিনি ছয়টি কাব্যনাট্য রচনা করেছেন। যথা— মাস্‌রা‘উ কালিউবাত্‌রা, মাজ্‌নূনু লায়লা, কাম্‌বীয, ‘আলী বিক আল্‌-কাবীর, ‘আন্‌তারাহ্‌, আস্‌-সিত্তু হুদা তাঁর লেখা তিনটি উপন্যাস হল— ‘আয্‌রাউল্‌ হিন্‌দ, লাদিয়াস, ওয়ারাকাতুল্‌ আস।
 
তাঁর কাব্য প্রতিভাঃ
আব্বাসী কবি আল্‌-মুতানাব্‌বীর পরে তাঁর মতো প্রতিভাধর কবি আর একটাও জন্মায়নি। তাঁর প্রাচীন ও নব্য রচনা শৈলীর মিশ্রণে এক অভিনব ও নতুন কাব্য রীতির প্রবর্তন, ভাষার সাবলীলতা, উপস্থাপনের মাধুর্য, বিষয়বস্তুর আবেদন পাঠক মনকে বিমোহিত করে। তাঁর কবিতার মূল উপজীব্য হল দেশ প্রেম, ধর্ম প্রীতি, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা এবং জীবনের মায়া। তিনি নবী (সাঃ)-র প্রশংসায় রচিত তাঁর বিখ্যাত আল্‌-হামাযিয়্যাতুন্‌ নাবাবিয়্যাহ্‌ কবিতার সূচনায় বলেছেন
وُلد الهــدى فالكائنات ضيــاء              وفــم الـزمــان تبســم وثنـــاء
(পথপ্রদর্শক জন্মেছেন। তাই নিখিল বিশ্ব আলোয় ঝলমল করছে। সময়ে মুখে হাসি ও বন্দনার ধ্বনি।)
তাঁর এক কবিতায় শিক্ষক সমাজের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন 
قــم للمعــلم وفـــه التبجيــلا                   كـاد المعـلم أن يكـون رسولا
(দাঁড়িয়ে পড়ো, শিক্ষককে পূর্ণ রূপে সম্মান করো। কারণ শিক্ষকেরা হচ্ছেন প্রায় নবী-রসূলদের মতো।)
দামেস্কের প্রশংসায় রচিত কবিতার সূচনায় তিনি বলেছেন    
آمنت بالله واستـثـنيـت جنتــه             دمشـق روح وجنات وريحـان
(আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান এনেছি, তাঁর তৈরি স্বর্গকে আলাদা রেখে বলছি, দামেশকাস হচ্ছে প্রাণ, কোমল বাতাস ও সুগন্ধিতে ভরা একটা স্বর্গ।)

আল-উসবাতুল আন্দালুসিয়্যাহ‌

আল্‌-‘উস্‌বাতুল ’আন্‌দালুসিয়্যাহ্‌
(স্পেনীয় সংঘ)
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম  

পরিচিতি
আল্‌-‘উস্‌বাতুল ’আন্‌দালুসিয়্যাহ্‌ (العصبة الأندلسية) একটি  সাহিত্য সংগঠন। ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরে ১৯৩৩-এর জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়, সে-দেশে বসবাসকারী আরবি কবিসাহত্যিকদের সম্মিলিত উদ্যোগে। তবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন মাহ্‌জার (প্রবাসী) কবি মীশাল নু’মান মা’লূফ

প্রতিষ্ঠা
এ সংগঠনটি প্রকৃত পক্ষে শুক্‌রুল্লাহ আল-জার্‌র (شكر الله الجر)-এর মস্তিষ্কপ্রসূত। তবে একে বাস্তব রূপ দান করেন লেবাননের অধিবাসী প্রবাসী কবি শাল নু’মান মা’লূফ (ميشال المعلوف)আর তাঁর যথাযোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন সে-দেশের প্রবাসী কবি ও সাহিত্যিকগণ। এ সংগঠনের সাহিত্য পত্রিকাটি ছিল অত্যন্ত উন্নতমানের। আর এর সম্পাদক ছিলেন সাহিত্যিক হাবীব মাস্‌‘উদ ( حبيب مسعود)আর সাওপাওলোতে সাহিত্যের যে আসর গুলি বসত, তাতে সভাপতিত্ব করতেন শাফীক্ব আল্‌-মা’লূফ (شفيق المعلوف)। 

উদ্দেশ্য
এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল- উপসাগরীয় অঞ্চলগুলিতে আরবি ভাষার হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনা (إعادة أمجاد الشعر العربي في ما وراء البحار)আর এক্ষেত্রে সত্যিই অসামান্য অবদান রেখেছেন এই সংগঠনের সদস্যগণ; বিশেষত- আশ্‌-শায়েরুল ক্বারাবী (الشاعر القروي/ পল্লীকবি) রাশীদ সালীম আল্‌-খূরী ( رشيد سليم الخوري), ইল্‌ইয়াস ফার্‌হাত (إلياس فرحات), ফাওযী আল্‌-মা’লূফ (فوزي المعلوف), ও শুক্‌রুল্লাহ আল-জির্‌র (شكر الله الجر)তাঁদের কবিতা, প্রবন্ধ ও রচনায় এই সংগঠনের পত্রিকাটি সমৃদ্ধ হয়েছিল।
এছাড়া, সংগঠনের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য ছিল ব্রাজিলে বসবাসকারী আরবি সাহিত্যিকদের একত্রিত করা ও তাঁদের মাঝে সম্প্রীতি গড়ে তোলা; যাতে সেখানে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সাহিত্যচর্চা অব্যাহত থাকে। আর পাশ্চাত্য সাহিত্য ও শিল্প দ্বারা আরবি সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব্যপর হয়।

কীর্তি
উক্ত সংগঠনটির একটি সাহিত্য পত্রিকা ছিল, নাম মাজাল্লাতুল্‌ ‘উস্‌বাহ্‌ (مجلة العصبة); যার সম্পাদক ছিলেন হাবীব মাস্‌‘ঊদপরবর্তীতে শাফীক্ব আল্‌-মা’লূফ। এর পাশাপাশি, ১৮৯৪ সালে আল্‌-ফাইহ্বা (الفيحاء) ছাড়াও এই সংগঠন কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছিল আরও চারটি সাহীফা (জার্নাল), যথা- ১৮৯৭-এ আর্‌-রাক্বীব (الرقيب), ১৮৯৮-এ আল্‌-বারাযীল (البرازيل), ১৮৯৯-এ আল্‌-মানাযীর (المناظر)  এবং ১৯০০ সালে আস্‌-স্বাওয়াব (الصواب)

বৈশিষ্ট
এই সংগঠনের সাহিত্যিকদের একটি বৈশিষ্ট এই যে, তাঁরা আল্‌-মুওয়াশ্‌শাহাত (الموشحات) দ্বারা ব্যাপক প্রভাবিত ছিলেন। তাঁরা প্রাচীন ও আধুনিক আরবি কবিতার মাঝে সেতুবন্ধনের কাজ করেছিলেনতাঁদের গদ্যেও ছন্দের প্রবাহ লক্ষ করা যায়। আর তাঁদের বিষয়বস্তু ছিল বিভিন্ন প্রকৃতির।   

সদস্যগণ
দক্ষিণ আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি প্রবাস-সাহিত্যধারার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই সংগঠনের সঙ্গে সে-দেশে বসবাসকারী বহু কবিসাহিত্যিক যুক্ত ছিলেন। নীচে তাঁদের কয়েকজনের নাম উল্যেখ করা হল-

শুক্‌রুল্লাহ্‌ আল্‌-জির্‌র (شكر الله الجر), রাশীদ আল্‌-খূরী (رشيد الخوري), নাযীর যায়তূন (نظير زيتون), জাওরাজ আল্‌-মা’লূফ (جورج المعلوف), তাওফীক্ব ক্বুর্‌বান (توفيق قربان), ইস্‌কান্‌দার কির্‌বাজ ( إسكندر كرباج), ইল্‌ইয়াস ফারহাত (إلياس فرحات), হাবীব মাস্‌‘উদ (حبيب مسعود), আনীস আর্‌-রাসী (أنيس  الراسي), জার্‌জিস কারাম (جرجس كرم), নাজীব ইয়া’ক্বূব (نجيب يعقوب), শাফীক্ব আল্‌-মা’লূফ (شفيق المعلوف), তাওফীক্ব যা‘উন (توفيق ضعون), ক্বায়সার আল্‌-খূরী (قيصر الخوري), নাস্বার সাম্‌আ’ন (نصر سمعان), ইউসুফ আস্‌আ’দ গানিম (يوسف أسعد غانم), ইউসুফ আল্‌-বায়ি’নী (يوسف البعيني), জাওরাজ হাসুন আল্‌-মা’লূফ (جورج حسون المعلوف) প্রমুখ।


Image result for ‫العصبة الأندلسية‬‎
দক্ষিণ আমেরিকায়ঃ একটি প্রবাসী আরবি সাহিত্য সংগঠন