সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের গহ্বরে
ক
বাবরি মসজিদ শহীদ হয়েছে। এবার জ্ঞানবাপী, মথুরা, কুতুব মিনার, তাজমহল, জামে’ মসজিদ দিল্লি, লাল কেল্লা, আজ়ান, হ়িজাব একের পর এক বিতর্ক চলতে থাকবে। বলা বাহুল্য, এসবকে কেন্দ্র করে পরস্পর বিতর্ক জিইয়ে রাখা হবে। সেই সাথে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে উদ্দেশ্য করে, হেয় করে নানান ধরণের ডিবেট ও টক শো'র আয়োজন ও উপস্থাপন দিনদিন বাড়তে থাকবে। তবে তুমি “তাদের কথায় দুঃখ পেয়ো না।” [সূরাতু ইউনুস, আয়াত ৬৫] বরং “ধৈর্য্য ধরো, যেভাবে (ইবরাহিম, ঈসা ও মূসা আঃ-এর মতো) মহৎ ও দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী নবী-রসুলগণ ধৈর্য্য ধরেছিলেন।” [সূরাতু আল্-আহ়্ক়াফ়, আয়াত ৩৫]
খ
আসামে থানায় এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও পাব্লিকের মাঝে বচসা বাধে। ক্ষিপ্ত জনতা থানা জ্বালিয়ে দেয়। তারপর পুলিশ অনুমানের ভিত্তিতে কিছু মানুষের ঘরবাড়ি বুল্ডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। ঘটনাচক্রে, থানায় নিহত ব্যক্তি মুসলিম, যাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে তারাও মুসলিম। আর তা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাসের লহর বইছে। পাশাপাশি, দু’চারটে পরিতাপ ও প্রতিবাদও আছে। তবে তা অধিকাংশই মুসলিম ও কিছু ন্যায়পরায়ণ মানুষদের।
বুল্ডোজার ইদানীং বাঁধ নির্মাণ, নালা খনন ও নদী সংস্কারে তেমন ব্যবহার হয় না। ব্যবহার হয় বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙতে। উত্তর প্রদেশের পর মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি হয়ে এখন সেই ট্রেন্ড আসামে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, আসামে বন্যার জন্য প্রায় ছ’ লাখ মানুষ ঘরছাড়া। সবাই কেমন ভাবলেশহীন। যেন, বন্যার জল কেবল মুসলমানদের পাড়ায় ঢুকেছে। হিন্দুদের বাড়ির দহ্লিজ দিয়ে ঘুরে বেছে বেছে মুসলমানদের বাড়িঘরে ঢুকেছে। তারাই কেবল বন্যার প্রকোপে পড়েছে। যেন ওরা সবাই নিরাপদ। বন্যা-ভূমিকম্প যা-ই আসুক, ওদের কোনো ভয় নেই!
গ
হায়দ্রাবাদের মেয়ে নিক্হাত জ়ারিন বিশ্বজয় করেছে। বক্সিংয়ে স্বর্ণপদক জিতে ফিরেছে। চারিদিকে উৎসবের আমেজ। শুভেচ্ছা বার্তায় ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ও টুইটার ভরে গেছে। আরও কতকিছু। তবে এখনো সরকারী ও বেসরকারী ভাবে তেমন নজরকাড়া কোনো আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা খবরের নজরে আসেনি। কারণ যে কী, তা হয়তো নিক্হাতই ভালো বলতে পারবে।
বক্সিং রিংয়ে সে আর পাঁচটা মেয়ে বক্সারের মতোই পোশাক পরে নামে। তবে এনডি টিভির এক সাক্ষাৎকারে হিজাব বিতর্ক প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাল্যান্স্ড মন্তব্য অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
২৫-০৫-২০২২
তপ্সিয়া, কোলকাতা