Wednesday 8 June 2022

সম্পাদকীয়ঃ সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের গহ্বরে

 



সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের গহ্বরে
 
বাবরি মসজিদ শহীদ হয়েছে। এবার জ্ঞানবাপীমথুরাকুতুব মিনারতাজমহলজামে মসজিদ দিল্লিলাল কেল্লাআজ়ানহ়িজাব একের পর এক বিতর্ক চলতে থাকবে। বলা বাহুল্যএসবকে কেন্দ্র করে পরস্পর বিতর্ক জিইয়ে রাখা হবে। সেই সাথে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে উদ্দেশ্য করেহেয় করে নানান ধরণের ডিবেট ও টক শো'র আয়োজন ও উপস্থাপন দিনদিন বাড়তে থাকবে। তবে তুমি তাদের কথায় দুঃখ পেয়ো না। [সূরাতু ইউনুসআয়াত ৬৫] বরং “ধৈর্য্য ধরোযেভাবে (ইবরাহিমঈসা ও মূসা আঃ-এর মতো) মহৎ ও দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী নবী-রসুলগণ ধৈর্য্য ধরেছিলেন। [সূরাতু আল্-আহ়্ক়াফ়আয়াত ৩৫]
 
আসামে থানায় এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও পাব্লিকের মাঝে বচসা বাধে। ক্ষিপ্ত জনতা থানা জ্বালিয়ে দেয়। তারপর পুলিশ অনুমানের ভিত্তিতে কিছু মানুষের ঘরবাড়ি বুল্ডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। ঘটনাচক্রেথানায় নিহত ব্যক্তি মুসলিমযাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে তারাও মুসলিম। আর তা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাসের লহর বইছে। পাশাপাশিদুচারটে পরিতাপ ও প্রতিবাদও আছে। তবে তা অধিকাংশই মুসলিম ও কিছু ন্যায়পরায়ণ মানুষদের।
 
বুল্ডোজার ইদানীং বাঁধ নির্মাণনালা খনন ও নদী সংস্কারে তেমন ব্যবহার হয় না। ব্যবহার হয় বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙতে। উত্তর প্রদেশের পর মধ্যপ্রদেশদিল্লি হয়ে এখন সেই ট্রেন্ড আসামে পৌঁছেছে। অন্যদিকেআসামে বন্যার জন্য প্রায় ছ’ লাখ মানুষ ঘরছাড়া। সবাই কেমন ভাবলেশহীন। যেনবন্যার জল কেবল মুসলমানদের পাড়ায় ঢুকেছে। হিন্দুদের বাড়ির দহ্লিজ দিয়ে ঘুরে বেছে বেছে মুসলমানদের বাড়িঘরে ঢুকেছে। তারাই কেবল বন্যার প্রকোপে পড়েছে। যেন ওরা সবাই নিরাপদ। বন্যা-ভূমিকম্প যা-ই আসুক, ওদের কোনো ভয় নেই!
 
হায়দ্রাবাদের মেয়ে নিক্‌হাত জ়ারিন বিশ্বজয় করেছে। বক্সিংয়ে স্বর্ণপদক জিতে ফিরেছে। চারিদিকে উৎসবের আমেজ। শুভেচ্ছা বার্তায় ফেসবুকইন্সটাগ্রাম ও টুইটার ভরে গেছে। আরও কতকিছু। তবে এখনো সরকারী ও বেসরকারী ভাবে তেমন নজরকাড়া কোনো আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা খবরের নজরে আসেনি। কারণ যে কীতা হয়তো নিক্‌হাতই ভালো বলতে পারবে।
 
বক্সিং রিংয়ে সে আর পাঁচটা মেয়ে বক্সারের মতোই পোশাক পরে নামে। তবে এনডি টিভির এক সাক্ষাৎকারে হিজাব বিতর্ক প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাল্যান্স্‌ড মন্তব্য অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
 
২৫-০৫-২০২২
তপ্সিয়াকোলকাতা

বদিউর রহমানঃ হার ছিনতাই ও পুলিশ



হার ছিনতাই ও পুলিশ
বদিউর রহমান
 
আমার স্ত্রীর সুগার দীর্ঘ দিনের তিনি এক স্বনামধন্য চিকিৎসকের তত্বাবধানে রয়েছেন তাঁর উপদেশাবলীর মধ্যে অন্যতম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হল ঘন্টাখানেক হাঁটা সেই মত আমার স্ত্রী হয় সকালে নতুবা বিকালে আমাদের ব্লকের মধ্যে হেঁটে নেন রবিবার (২৪-১০-২০২১) সকালে যথারীতি তিনি বেরিয়েছেন ঠিক সাতটা পাঁচ মিনিটে আমার জন্য প্রতিদিনের মত টেবিলে দিয়ে গেছেন এক গ্লাস পানি, ফ্লাক্স ভর্তি চা আর দুধরনের বিস্কুটের কৌটো
 
উনি বের হলেন আর আমিও আড়মোড়া ভেঙ্গে বিছানা ছাড়লাম ওয়াশরুম হয়ে এক কাপ চা খেয়ে খবরের কাগজটা সবে খুলেছি দরওয়াজার বেলটা বেজে উঠল দরজা খুলে আমি অবাক এত তাড়াতাড়ি তো উনার ফেরার কথা নয় কাঁদো কাঁদো স্বরে তিনি যা বললেনগলার হারটা ছিনতাই করে নিয়েছেব্যাপারটার আকস্মিকতায় আমার সম্যক বুঝে নিতে একটু সময় লাগে বললামশান্ত হও যা হওয়ার হয়েছে দেখছি কি করা যায়উনি বললেন ঘটনার পর চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ১৫৩ ও ১৫২ বিল্ডিং থেকে দারওয়ানরা বেরিয়েছিল আশেপাশের বিল্ডিং এর জানালা দিয়ে অনেক কৌতুহলী মানুষকে উঁকি দিতে দেখা গেছে অনেকে বললেন পুলিশে খবর দিনপুলিশকে খবর দিতে হবে কিন্তু কি ভাবে! সামনের ফ্ল্যাটে বেল দিতে সুপ্রতিম বাবু বের হয়ে সব শোনা মাত্র আমাকে বললেন১০০ অথবা থানার নাম্বারে ফোন করুনবললামআমার হয়ে আপনিই ফোন করুনতিনি ফোনে সব বললেন পরক্ষণেই তিনি আমাকে বললেনফোন নাম্বার দিচ্ছি, আপনি নিজে একবার ফোন করুনতাই করলাম দশ পনেরো মিনিটের মধ্যে দুজন পুলিশ আর দুজন সিভিক ভলেন্টিয়ার আমার ফ্লাটে উপস্থিত আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করে সব জেনে নিয়ে একজন পুলিশ একটা ডায়েরীতে লিখে নিলেন আধঘন্টা-পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে উনারা আবার এলেন আরও কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে গেলেন আমি কয়েকজন ছাত্র অধ্যাপককে ব্যাপারটা জানাতে তাঁরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ করতেই মিডিয়ার মানুষ জনের আগমন শুরু হল সকলেই আশ্বাস দিলেন যে ব্যাপারটার একটা সুরাহা হবেই
 
এক অবসরপ্রাপ্ত সি.আই.ডি ডিপার্টমেন্টের ডি.আই.জি সাহেবকে ফোন করলাম উনি কেস নাম্বারটা চাইলেন বললেন তার জন্য এফ.আই.আর করতে হবে বসে গেলাম এফ.আই.আর লিখতে অর্ধেক লেখা হয়েছে এমন সময় সাতজনের একটা টিমের আবির্ভাব; বললেন উনারা সিভিল ড্রেসের পুলিশ ওঁদের সঙ্গেও কথা বলতে হল আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বেডরুমে গিয়ে দেখি ভয় উত্তেজনার জেরে তিনি কাহিল হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন অফিসারদের বললাম ওনারা বললেন এখন তাহলে ঘুমাতে দিন মানসিক ধাক্কাটা কাটিয়ে ট্রমা থেকে বের হতে দিন আমরা বিকালে আসব ওনাদের চলে যাওয়ার পর পরই সাতজন ভদ্রলোক সি.আইড.ডি. বলে পরিচয় দিয়ে সব শুনলেন অকুস্থলটা দেখতে চাইলে তা দেখিয়ে দিলাম সকাল থেকে প্রায় রাত আটটা পর্যন্ত চলল পুলিশ, মিডিয়া কিছু শুভাকাঙ্খি ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনা ফোনের উত্তর দিতে দিতে আর সকলকে যথাযথ ঘটনাটা বোঝাতে গিয়ে আমি ক্লান্ত রাত দশটা সাড়ে দশটা পর্যন্ত ফোন আসতে থাকে উত্তর দিয়ে যাই মাঝে দুচারজন জানান দেন CN চ্যানেলে ঘটনাটা দেখানো হয়েছে আমি অবশ্য এবিপি আনন্দ দেখছিলাম কিন্তু কিছু পাইনি
 
পরের দিন সোমবার (২৫-১০-২০২১) আনন্দবাজারের কলকাতা পাতায় খবরটা পরিবেশিত হয়সল্টলেকে হার ছিনতাইশিরোনামে
 
খবরের ভিতরেবৃদ্ধাশব্দ বন্ধটির জন্য আমার স্ত্রী ভীষণ ক্ষুদ্ধ হয়ে যান তাঁকে বোঝাই ষাটোর্দ্ধ সকলকেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বলা হয় সেটা কোন অসম্মানের নয় বরং সম্মান বৃদ্ধি পায়শ্রদ্ধেয় বলে গণ্য করা হয় আমার মনে হল তখন তাঁকে হার হারানোর দুঃখের চেয়ে বৃদ্ধা সম্বোধনের জন্য ক্ষুন্ন হয়েছেন বেশি প্রমাণ পেলাম তাঁর কথায়এবার আর আনন্দবাজার নেবে না টেলিগ্রাফটা দেখ কত মার্জিত ভাবে খবরটা পরিবেষণ করেছেমিডিয়ায় খবরটা চাওর হতে আমাদের পরিচিত মানুষরা ফোন আর ফেসবুকে সহমর্মিতা দেখাতে শুরু করেন তাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুচারজন অধ্যাপক যেমন ছিলেন আমার অগণিত ছাত্র-ছাত্রী শুভাকাঙ্খিরাও ছিলেন আর আত্মীয়স্বজনরা তো ছিলেনই হয়ত খবর ছড়ানোটাকেই আজকাল ভাইরাল বলে তবে ব্যতিক্রম একটা মন্তব্য এক অধ্যাপক ফোন করে বলেন যে আমার ব্যক্তিগত অ্যাডভার্টাইজমেন্টটা ভালই হচ্ছে! উত্তর খুঁজে না পেয়ে বলেছিলামআইনার সামনে দাঁড়ালে যেমনটা দেখি আর কি!” বুদ্ধিজীবি বলে কথা তীক্ষ্ণবুদ্ধি দিয়ে জগতটাকে পর্যবেক্ষণ করে থাকেন অবশ্য স্বীকার করি এফ.আই.আর টা থানায় জমা দিতে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে সঙ্গদান করেছেন আমি কৃতজ্ঞ
 
ইতিমধ্যে সি.আই.ডির অফিসাররা দুবার সি সি টিভি থেকে নেওয়া ছবি দেখিয়ে গেলেন একটাকে চিহ্নিত করার একদিন পর আমাদের বিল্ডিং এর এক যুবক অধ্যাপক বলেন চোর ধরা পড়েছে তাঁর ফোন থেকে সল্টলেক পুলিশের ওয়াল থেকে দেওয়া ওয়াটসআপ আমার ফোনে পাঠাল সব দেখে আশ্বস্ত হলাম চোর যখন ধরা পড়েছে তখন গলার হারটাও নিশ্চয় ফেরৎ পাব আশায় আমিও পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে বসলাম কিন্তু তারপর থেকে প্রায় দুদিন পুলিশের তরফ থেকেচারিদিক নিস্তব্ধ সেই quiet flows the Don এর মতো
 
স্ত্রীর মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তাঁর বাপের বাড়ি যাওয়ার আমূল আবেগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমিওচলা মুরারি শ্বশুরালফিল্মটা স্মরণ করে হার চুরির ঠিক এক সপ্তাহ পরে (৩১-১০-২০২১) রবিবার দুপুরে পার্ক সার্কাসে ওনাদের বাড়ি গেলাম সোমবার ফেরার কথা বিকাল থেকে স্ত্রীর ফেরার অনিচ্ছাটা টের পাচ্ছিলাম ইতিমধ্যে অন্যতম এক প্রতিভাবান ছাত্র (বর্তমানে এক মহিলা কলেজের অধ্যাপক) সেখানে হাজির আমার ব্যক্তিগত লেখালেখির কিছু কাজ তাঁকে দেওয়ার ছিল অন্যদিকে তারও গবেষণা কেন্দ্রিক কিছু কথাবার্তা ছিল প্রায় রাত নটা হয়ে যাওয়ায় সেদিন ফেরা হল না সল্টলেক থানা থেকে ফোন পেলাম ওনারা আমার স্ত্রীকে কিছু জিজ্ঞাসা করবেন তাও আবার সাক্ষাতে তাই পরের দিন সোমবার সকাল দশটায় সল্টলেকে আমার বাসায় তাঁদের আসার কথা ঠিক হল সারা দিন অপেক্ষা করি করে চলি ফোনের পর ফোন প্রান্ত থেকে রিং টোনে একটা গান শুনতে শুনতে সেটা আমার প্রায় মুখস্থ হয়ে গেল অবশ্য গানটার কথাগুলো আমার পছন্দ হয়েছে আবার তার ব্যাখ্যাতে সামান্য তারতম্য করলে আমার বর্তমান অবস্থার সঙ্গে কি রকম কাকতালীয়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে শুনলে অবাক হবেন তাহলে রিংটোনের কয়েকটা লাইন শুনুন, ইন্‌তেহা হো গায়ী ইনতেজার কি পরের কথাগুলো বিরহ কাতর প্রেমিকের হাপিত্যেস ভরা রোমান্টিকতায় আমার আপাততঃ ভ্রুক্ষেপ করার মন বা মেজাজ নেই যদিও আমিও একপ্রেমপূজারী অবশ্য সে স্বভাবসুলভ সহজেই প্রেমে পড়ার রোগটা বিয়ের পর থেকে বাধ্য হয়ে ধামা-চাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করি যদি কখনও সামান্যতম বিচ্যুতি উনি জানতে পেরেছেন সেই ভূত মাথা থেকে ছাড়িয়ে নিস্কৃতি দিয়েছেন অবাক হই অভিজ্ঞ ডাক্তারের মত অত নিপুনভাবে সব ধরে ফেলেন কি করে
 
সত্যিই পুলিশ সাহেবেকে ফোনে আর পাইনা খালি শুনতে হয় ইনতেহা হো গায়ী ইনতেজার কি” আমারও তো সিনেমার নায়কের মত একই অবস্থা আর কত অপেক্ষা করব! মনে পড়ে শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের কবিতাঃ জিন্দেগী মাঙ কর লায়ে থে চার দিনদো আরজু মেঁ কাট গয়ে দো ইনতেজার মেঁহয়ত বা সে অবস্থা অতিক্রম করে একই কবির কথার মতোদিন জিন্দেগীকে খাত্ হুয়ে শাম হো গায়িপ্রায় সন্ধার সময় তিনি একবার ফোন ধরলেন শুধু বললেনঅতবার ফোন করছেন কেন কাজে ব্যস্ত আছি আপনাদের ব্যাপারটা মনে আছে সময় হলে যাবখনকথা রেখেছেন রাত শোয়া আটটার দিকে পুলিশের গাড়ি এসে আমাদের বিল্ডিং এর কাছে দাঁড়াল অনেকে কৌতুহলবশতঃ উঁকিঝুঁকি দিলেন আমাদের ডোর বেলটা বাজতে দরজা খুললাম ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা সিভিল ড্রেসের পুলিশের সঙ্গে উর্দি পরা দুজন পুলিশ একজন নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, আমি আপনার কেসেরআই..লম্বা অফিসারটা বললেন আমরা সকাল দশটা থেকে রাত দুটো আড়াইটা পর্যন্ত কাজে ব্যস্ত থাকি আপনার কাজ ছাড়াও বহু কাজ থাকেউত্তরে জানালামআমিও লেখা লেখির কাজে ব্যস্ত থাকি বিশ্বাস না হয় টেবিলটা দেখতে পারেনদরজা থেকে উঁকি দিয়ে দেখে বললেনআমাদের ব্যস্ততার সঙ্গে আপনার কাজ খাপ খায়নানতশীরে স্বীকার করলাম মনে মনে বললামতোমরা যে যাই কর ভাই গুরুর শিক্ষা নিয়েই করো তাই সবাইকে গড়ার পিছনে কিন্তু শিক্ষকদেরই মুখ্য ভূমিকা রয়েছে
 
আই.. বললেন ছিনতাই হওয়া হারটার ফটো দিন সেরকম ফটো নেই বলাতে তিনি বললেনম্যাডাম সেলফী তোলেন না?” বললামনাআমাকে বললেনআপনার কাছে ম্যাডামের সেরকম কোন ফটো নেই যাতে হারটার ছবি পাওয়া যাবে?” নিজের স্ত্রীকে ঘার কি মুরগী ডাল বরাবর” ভেবে সেভাবে ওঁর ছবি তোলা হয় না হঠাৎ মনে হলো দিন আগে দুটো ফটো তুলেছিলাম ফোনে খুঁজে সেই ফটো দু’টোয় দেখি হারটার বেশ কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে দুটো ফটো থেকেই ওনারা ওনাদের ফোনে হারটার ছবি তুলে নিলেন ডিজাইনটা ঠিক কেমন তা দেখাতে ওনারা অনেক ডিজাইন দেখাতে লাগলেন একটাতে ছিনতাই হওয়া হারটার অধিক সাদৃশ্য দেখে তাঁরা একটা আইডিয়া করে ফেললেন কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলেন এফ.আই.আর. হারের ওজনটা আড়াই ভরি বলেছেন তার প্রমাণ আছে? আমার স্ত্রী একটা বিল দেখালেন আই ও বললেন এতে দেখছি একটু কম দেখাচ্ছে” ওনারা চলে গেলেন আমি আমার কাজ নিয়ে চেয়ারে স্থুতি হই
 
ম্যাডাম বেডরুমে নিজের ছিনতাই হওয়া হারের শোকে আচ্ছন্ন প্রায় রাত সাড়ে দশটায় আমার ডাক পড়ল আমারই তোলা বহুদিন আগের একটা ফটো দেখালেন তাতে হারটা অতীব পরিস্কার দেখা যাচ্ছে আর একটা বিলও দেখালেন তাতে দেখি হারটা আড়াই ভরির
 
যে পুলিশ সাহেবরা রাত শোয়া আটটায় এসে বলেছিলেন সকাল থেকে রাত ২টা পর্যন্ত কাজ করেন তাঁদের মধ্যে একজনের ফোনে যোগাযোগ করে ওই ব্যাপারগুলো জানাতে চাই প্রায় পনেরো বার ফোন করি সেই রিংটোনইন্তেহা হো গায়িশুনে শুনে ক্লান্ত হই সকাল আটটা থেকে আবার ফোনের চেষ্টা করে সেই একইইন্তেহা হো গায়ি তেরে ইন্তেজার কিশুনে শুনে বিরক্ত হয়ে স্বশরীরে থানায় পৌঁছাই সকাল সাড়ে আটটায় ডিউটি অফিসারকে বলি আমার স্ত্রীর হার ছিন্তাইয়ের ব্যাপারে কথা বলতে চাই প্রথমে উনি অপেক্ষা করতে বলেন বারান্দার চেয়ারে বসে থাকি কিছুক্ষণ পর উনি জানালায় ডেকে বলেন আপনার আই.. এখনো আসেননি অনুরোধ উপরোধ করাতে অন্য আর একে অফিসার আই..’ সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে বলেনউনি বাইরে আছেন; আধঘন্টা পর আসবেন আপনি ঘুরে আসুনআমি সেখানেই অপেক্ষা করা শ্রেয় বলে থানার বারান্দার চেয়ারে বসে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আনিস সাহেবের সদ্য পাঠান প্রফেসর যুবাইয়ের সিদ্দিকী সম্পর্কে ওয়াট্ আপ ম্যাসেজ সিদ্দিকী সাহেবেরতারিখে তাদউইনে হাদিসএর ভূমিকা ও ইন্ট্রোডাকশন ইত্যাদি পড়ে নিতে থাকি প্রফেসর যুবাইর সম্পর্কে আমার জানা জ্ঞানের পরও আরও অন্যান্য বিষয়ে এক বিদেশী গবেষকের কৌতুহল নিবারণ করার দায়িত্ব পড়েছিল আমায় মোবাইলে আবিষ্ট থাকা দেখে এক কনস্টেবল উপদেশ দেনওই পাশে একটা চায়ের দোকান আছে চা খেয়ে আসুন আমি চা পাগল মানুষ চায়ের কথা বলাতে আমার নেশা ধরে গেল চায়ের দোকানের খোঁজে চলি চলি পা পা’ করে এগোতে থাকি এক মা মেয়ের চায়ের দোকান অনেকেই অমলেট, টোষ্ট ইত্যাদি দিয়ে ব্রেকফাষ্ট সারছেন উনাদের সুঠাম লম্বা-চওড়া চেহারা আর চুলের ছাঁট দেখে সহজেই অনুমান করা যায় যে উনাদের বেশির ভাগই পুলিশ স্বাভাবিক ভাবেই আমার শুধুমাত্র চায়ের অর্ডার বলে অন্যদের অগ্রাধিকার দিয়ে আমার চা পেতে একটু দেরি হল চা শেষ করে আবার পায়ে পায়ে থানার বারান্দার চেয়ারে আসীন হলাম মোবাইল থেকে শুরু হল যুবাইর সিদ্দিকী তাঁর হাদিস চর্চার পর্যালোচনা প্রায় দশটা নাগাদ আই.. এলেন আজ আর উর্দিতে নেই ট্রাকস্যুটে একটা হাল্কা পিঙ্ক ফুল স্লিভে তাঁকে সুন্দর মানাচ্ছিল পুলিশরা যে সবসময় কেন এমন মিষ্টি দেখায় না বুঝিনা উর্দি চড়ালেই দেখি উনাদের অন্য মূর্তি বুক ঢিপ ঢিপ করে আই. . আমাকে বারান্দা থেকে থানার ভিতরে তাঁর চেম্বারে বসালেন সুন্দর করে সাজান পরিপাটি চেম্বার একজনকে ডেকে এক কাপ চায়ের কথা বললেন ভেবেছিলাম সেটা নিজের জন্য আনাচ্ছেন সেখানে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে বললাম গতকাল ছিনতাই যাওয়া যে হারটার ছবি দেখান হল তার থেকে আরও পরিস্কার দুটা ছবি পেয়েছি দেখালাম সে ছবিগুলো উনি তৎক্ষণাত সেগুলোর ছবি নিয়ে রাখলেন আরও সংযোজন করলাম হারটা যে আড়াই ভরির তার বিলও পেয়েছি চা এল দেখি সেটা আমাকে দিতে বললেন যদিও মনে মনে খুশি হলাম তা সত্বেও ভদ্রতা করে বললামএই ক’দিন আমাদের ফ্লাটে আপনারা কয়েকবার গিয়েছেন কিন্তু আমরা চা খাওয়াইনি আমার খুব বিব্রত লাগছেদেখি চায়ের প্লেটে দুটো বিস্কুট আই.. কে বললাম অন্ততঃ একটা বিস্কুট আপনি নিন উনি বললেনএখনই ইলিশ ভাজা দিয়ে গরম ভাত খেয়ে এলাম বললেনএই যে অফিসে এলাম আর খাওয়া দাওয়া বা কোন কিছুর সময় হবেনা রাত পর্যন্ত চলবে কাজ আর ব্যস্ততা তারপর উনি বললেনআপনাদের কাজটার অগ্রগতি ভালই হচ্ছে দুজন চোরই ধরা পড়েছে তাদের মটর সাইকেলটা আমাদের জিম্মায় রয়েছে তবে হারটার ব্যাপারে তারা একবার বলছে ঘুটিয়ারির এক পাত্তাখোরকে বিক্রি করেছে; কখনো বলছে শিয়ালদায় একজনকে বেচে দিয়েছে, আবার কখনো বলছে হাতিবাগানের একজনকে বিক্রি করেছে শ্যামবাজারের কথাও বলছে আমরা আমাদের লোক লাগিয়ে দিয়েছি হারটার সন্ধান বের করবই তারপর যা বললেন সেটা না শুনলে আপনাদের ভালো লাগবে না তা ল—
আপনাদের হার ছিনতাইকারী মোটর বাইকের স্টান্ট মনোজ একজন পেশাদার ক্রিমিনাল সে কয়েকবার হাজতবাস করে একটা কেসে প্রায় বৎসর জেলে ছিল জেলে থাকাকালীন একটা সরকারি ভাতা দেওয়া হয় ওর জেল থেকে বেরোনোর সময় প্রায় সত্তর-আশি হাজার টাকা হয়েছিল সেই টাকা দিয়ে আর লোন করে দুটো ছোট ভ্যান কিনে বিভিন্ন লোকের মালপত্র, সামগ্রী ডেলিভারি করে সংসারটা বেশ চালাচ্ছিল আমরাও ভেবেছিলাম শোধনাগারে গিয়ে হয়ত সুনাগরিকের মত জীবন যাপন করবে কিন্তু অতিমারিতে ওর মালবাহনের কাজটা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় দারিদ্রতা চরমে পৌঁছালে তার স্ত্রী অন্যত্র চলে যায় বর্তমানে আবার শুরু করেছে তার পুরোনো অপকর্ম।”
 
কথাগুলো শুনে আমার খারাপ লাগল অতিমারিতে সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা আমি উপলব্ধি করি বললাম আপনার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছে আবার ধরা পড়ে জেলে গিয়ে আবার কিছু উপার্জন করতে চাইতেও পারে কখনো কখনো এক আধজন মানুষের ইচ্ছে হয় জেলে যাওয়ার অন্যদিকে ভারতবর্ষের অনেক প্রাতঃস্মরণীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকারীকে দেখেছি ব্রিটিশ সরকার তাদেরকে জেলে পুরে স্বাধীনতা আন্দোলন স্তব্ধ করতে চেষ্টা করেছে অবশ্য সে রকম স্বাধীনতাকামি ভারতীয় নেতারা জেলে বসে ভাল ভাল বই লিখেছেন নেহেরুজি, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখরা সে রকম নিদর্শন রেখে গেছেন আবার বিশেষ ব্যক্তিগত কারণেও কখনো কখনো জেলের চার দেওয়ালে সরকারি আতিথেয়তা বরণ করতে আগ্রহী হয়েছেন কিছু পাগল সেই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল বিখ্যাত ছোটগল্প লেখক . হেনরির লেখাদি কপ্অ্যান্ড অ্যানথিমগল্পটাআই.. গল্পটা ছোট্ট করে শুনতে চাইলে বললামপার্কের বেঞ্চে ঘুমিয়ে শেষ রাতের দিকে ভবঘুরে মানুষটার মনে হল শীত বোধ হয় আগত প্রায় পুরানো খবরের কাগজ জড়িয়ে ঠান্ডা রোখা যাচ্ছেনা তখনই তার মনে পড়ে গত বছরের শীতটা জেলে ভালই তো কাটল মাথার উপর ছাদ ছিল খোলা হাওয়া আটকানোর জন্য কারাগারের দেওয়াল ছিল মেঝেতে বিছানোর জন্য কম্বল ছিল ছিল গায়ে দেওয়ার আলাদা কম্বল খাওয়া দাওয়া জুটত সময় মত তাই তিনি ভাবলেন ঠান্ডা পড়ার আগেই যে কোনভাবে জেলে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে একটা কাঁচের ঝাঁ-চকচকে শোকেশ দেখে তিনি সেটায় মারলেন একটা থান ইট ঝনঝন করে ভেঙ্গে পড়ল শোকেশ ভিতর থেকে ছুটে এলেন দোকানের মালিক কে এমন কান্ড করল তার খোঁজে তিনি চারিদিক লক্ষ করে চলেছেন অথচ কালপ্রীটের দিকে ভ্রুক্ষেপই করছেন না তখন সেই অপকর্ম করা হতদরিদ্র মানুষটি নিজের দিকে দেখিয়ে বললেন কাজটা আমি করেছিকিন্তু শোরুমের মালিকের তা বিশ্বাস হয়না তিনি দোকানের ভিতর চলে যান আশা ছিল অপকর্মকারিকে ধরা হবেপুলিশে দেওয়া হবে কিছুই হলনা
 
একবার বিফল হলেন তো কি! রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন আর ভাবছেন কী করলে লোকে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় হঠাৎ তাঁর নজরে পড়ল একটা দোকানের বাইরে খরিদ্দারদের রাখা বেশ কিছু ভিজে ছাতা দরজার বাইরে রাখা আছে ইংল্যান্ডের আবহাওয়াটা এমন যে যখন তখন বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় সে জন্য অনেকে সঙ্গে ছাতা নিয়ে বের হন সেই হাভাতা ভদ্রলোকের মাথায় খেলে গেল এক আইডিয়া সেই অনুযায়ী ছাতার পাত্র থেকে একটা বেশ রংচঙে ছাতা তুলে নিয়ে সোজা হাঁটা দিলেন দোকান থেকে একজন বেরিয়ে এলেন ঠিকই কিন্তু তিনি সেই ভবঘুরেকে বললেন ওটা যদি আপনার হয় তাহলে নিতে পারেন কেননা কিছুক্ষণ আগে আমি ওই ছাতাটা একটা দোকানের বাইরে অনেক্ষণ পড়ে থাকতে দেখে ভেবেছিলাম ওটার মালিক হয়ত ভুলে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে তাই ওটা আমি সেখান থেকে হস্তাগত করি তা ছাতাটা যদি আপনার হয় আপনি নিতে পারেন কি আর করা তখনকার মত ছাতাটা বগলদাবা করে রাস্তা ধরে এগিয়ে চললেন ভবঘুরে মনে মনে আক্ষেপ করতে লাগলেন যে ছাতা চোর বলে ধরা পড়লেন না কিন্তু ছাতাপ্রাপ্তি তো তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না তিনি তো চেয়েছিলেন ছাতার আসল মালিক তাঁকে ছাতা চোর বলে পুলিশের হাতে তুলে দেবে আর তখন জেলে যাওয়ার সুযোগ হবে সেরকম যখন হল না তখন তিনি কিছুদুর যাওয়ার পর ছাতাটা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এভাবে বিফল মনোরথ হয়ে শহরের এক নির্জন এলাকায় পৌছালেন সেই ভবঘুরে বিকালের সূর্য অস্তমিত প্রায় হাল্কা আলো আঁধারিতে গলি ধরে এগোতে তিনি একটা পার্কের কাছে পৌঁছলেন। একটা চার্চ থেকে ক্রিসমাস ক্যারোলের মিষ্টি ধ্বনি ভেসে আসছিল ভবঘুরে থমকে উঠলেন তাঁর মনে পড়ল ওই ক্যারোলগুলো তাঁর মা ক্রিসমাসের আগে কয়েকদিন ধরে তাঁর সব বাচ্চাদের শেখাতেন তাঁর মনে পড়ল মায়ের কত আশা ছিল যে তাঁর সন্তানেরা বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে; সত্যিকারের মানুষ হবে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই তাঁর গভীর অনুশোচনা হল মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন এবার থেকে সৎ পথে থেকে মায়ের স্বপ্নপূরণ করবেন এমন সময় তাঁর পিঠে একটা হাত পড়ল ফিরে তাকিয়ে দেখেন একজন ষন্ডামার্কা পুলিশ তিনি বললেনব্যাটা এখানে ঘাপ্টি মেরে দাঁড়িয়ে আছ ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে! চল্বেটা জেলের হাওয়া খাবি
 
হয়ত গল্পের শেষটার মত কখনো কোন অপরাধির ভাগ্যে অমনটাও ঘটে থাকে হয়ত কিছু অপরাধ প্রবণ এমন আছেন যিনি সুস্থ সামাজিক মুক্ত জীবন পছন্দ করেন না তাঁদের জেলের চার দেওয়ালের অন্যরকম নিশ্চিন্ত জীবন বেশি পছন্দের বিশেষতঃ শোধনাগারে থাকলে খাওয়া পরা থেকে আরম্ভ করে হাতখরচের টাকাও যখন নিশ্চিতভাবে জমতে থাকে তখন বাইরের জগতে খেটে খাওয়ার প্রয়োজন কি! তাছাড়া  আজকাল তো একশো দিনের কাজেরও কোন নিশ্চয়তা নেই তাছাড়া দীর্ঘদিন চার দেওয়ালে বন্দী থাকলে সে জগতেও ছিঁচকে চোরদের সম্ভ্রম আদায় করে হাত-পা টিপিয়ে আয়েশও করা যায় বন্দি জীবন খারাপ কী শান্তি না থাকলেও সুখ আছে বন্দিত্যের মেয়াদ শেষে হাতে টাকাও আসবে ইচ্ছে হলে সেই টাকা দিয়ে বিয়ে করুন, সংসার পাতুন যখন ব্যাজার লাগবে আবার চার দেওয়ালের ভিতর চলে যান
 
কথাগুলো আই.. মন দিয়ে শুনছিলেন তিনি বললেন, যাই বলুন স্যার আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি আপনাদের হারটা উদ্ধার করে আপনাদের ফিরিয়ে দিতে” বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত করলাম তেমন কোন সুসংবাদ পাইনি ব্যাপারটা নিস্পত্তি না হয়ে পড়ে থাকলে সকলের স্মৃতি থেকে ছিনতাইয়ের হারটার কথা বিস্মৃত হতে বাধ্য পুলিশের একটা ওয়াল থেকে ছিনতাইকারী ধরা পড়ার খবরে অনেকের ধারণা হারটা পেয়ে গেছি সে ব্যাপারে আমার যে হার হয়েছে তা মুষ্টিমেয় কয়েকজন জানেন অবশ্য আই.. আমাকে যে প্রত্যয়ের সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে আমি কিছুটা হলেও আশাবাদী যদিও জানিআশায় মরে চাষাবলেও একটা কথা আছে তবে আমার কেন যেন আই.. এর কথা থেকে মনে হয়েছে উনি আমাকে শুধু আশা দেননি বরং আমার মনে হয়েছে তিনি হার ফিরিয়ে দিতে অঙ্গিকারবদ্ধ অবশ্য গালিব প্রেমাস্পদের অঙ্গিকারকে কখনও বিশ্বাস করেন নি তাঁর কবিতার ছোট্ট একটা উদ্ধৃতি দিয়ে হার ছিনতাই বৃত্তান্তর ইতি টানব গালিব বলেনঃ 
তেরে ওয়াদে পে জিয়ে হাম তু ইয়ে জান ঝুট জানা
কে খুশি সে মার না জাতে আগার তেবার হোতা
তবুও বলি কিবিশ্বাসে মিলায় বস্তু”!
(২৪ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত)
 
বিঃদ্রঃ কথায় আছে নানা-উম্মিদী কুফ্ হ্যায় তাই উম্মিদ আশা ছাড়িনিবিশ্বাসে মিলায় বস্তু উপর বিশ্বাসও রেখেছিলাম ফলও মিলেছে বহুদিন বাদে ছিনতাই হওয়া হারটার তিনটে টুকরো ফিরে পেয়েছি। আর বাকিটা রয়েছে অজানার গহ্বরে