Monday 25 April 2016

Critical Appreciation বা কাব্য সমালোচনা কীভাবে করবো?



Critical Appreciation বা কাব্য সমালোচনা কীভাবে করবো?
কাজী মোহাঃ মাকীন
 
কাব্য সমালোচনা কী?
শুরুতেই একটা কথা বলে নেওয়া প্রয়োজন, কাব্য সমালোচনা (Critical Appreciation) বলতে প্রচলিত যে সমালোচনা বোঝায় তা কিন্তু নয়। বরং একটা কবিতাকে বিভিন্ন দিক থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করাই হল কাব্য সমালোচনা বা critical appreciation কবিতার অর্থ, প্রসঙ্গ, উদ্দেশ্য, লেখ্যরীতি, অলংকার, তুলনামূলক আলোচনা, বর্ণনাভঙ্গী ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত।
 
কেন করবো?
যে কোনো বিষয়েই সামগ্রিক ধারণা তৈরিতে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ পঠনের প্রয়োজন আছে। একজন শিক্ষার্থী কাব্য সমালোচনার জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করলে পঠিত বিষয়টি সে ভালভাবে রপ্ত তো করবেই, পাশাপাশি তার লেখাতেও নিজস্ব সৃজনশীলতা তৈরি হবে।
 
কীভাবে করবো?
যে সমস্ত বিষয়গুলো এজন্য কমপক্ষে আবশ্যক সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল—
 
১) SETTING (পটভূমি/আবহ) প্রত্যেক কবিতা, গল্প, নাটক, উপন্যাসের একটি নির্দিষ্ট পটভূমি থাকে। সেটা সমুদ্র, পাহাড়, মরুভূমি হতে পারে বা কোনো প্রাসাদ, বাড়ি, যুদ্ধের ময়দানও হতে পারে। রচনার উদ্দেশ্য বা অর্থে আবহেরবিশেষ প্রভাব থাকে। যেমন আহমাদ শাওকীর مناجاة الأهرام কবিতায় কবি মিশরীয় আশ্চর্য পিরামিড তথা তার পরিপার্শ্বকে পটভূমি হিসেবে নিয়েছেন। অনুরূপভাবে খলীল মুত্বরান তার المساء কবিতায় আলেকজান্দ্রিয়ার এক বৈকালিক সমুদ্রতটকে আবহের রূপ দিয়েছেন।
 
) CONTEXT (প্রেক্ষাপট) কোন সময় বা স্থানের প্রেক্ষাপটে কবিতাটি লেখা সেটা নির্ণয় করতে হবে কেননা কবিতা রচনার সমসাময়িক স্থান-কাল-পরিস্থিতি অবগত থাকলে কবিতা সহজবোধ্য হবে যেমন আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদের سكران কবিতা থেকে তৎকালীন পরাধীন মিশরের ভাবনা ফুটে ওঠে আহমাদ শাওকীর صدى الحرب কবিতায় অটোমান-তুর্কী যুদ্ধ পরিস্থিতির আভাস পাই
 
) SPEAKER (কথক) কবিতার কথক কে এটা নির্ণয় করাটাও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কারণ এটা না বুঝতে পারলে আমরা কবিতার ভূমিতে আন্দাজে বিচরণ করব কথক যেমন কবি নিজে হতে পারে, তেমন অন্য কোনো ব্যক্তি, বস্তু, প্রাণী, প্রকৃতিও হতে পারে যেমন হাফিয ইবরাহীমের في لسان حال اللغة العربية কবিতায় আরবী ভাষাকেই কথকরূপে পাই
 
) GENRE (কবিতার শ্রেণী) কবিতাটি কোন ধারা বা কোন শ্রেণীর সেটাও নির্ণেয় কারণ শ্রেণীবৈচিত্র্যে কবিতার চরিত্রও পালটে যায় আর এই বৈচিত্র্য একদিকে অর্থগতও হতে পারে, যেমন প্রশংসা, শোক, প্রেম, প্রকৃতি, স্বাধীনতা, শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়কেন্দ্রিক; অপরদিকে গঠনগতও হতে পারে, যেমন মহাকাব্য, কাব্য, কবিতা, সনেট, রুবাইয়াত, মুক্তছন্দ কবিতা প্রভৃতি
 
) MEANING (কবিতার অর্থ) এটাকে কাব্য সমালোচনার প্রধান অংশ বলা যায় কবিতাটি একাধিকবার পড়ে একটি স্পষ্ট ধারণা তৈরি করতে হবে যে, কবি এখানে কী বলতে চেয়েছেন কবিতায় ব্যবহৃত কঠিন বা দুর্বোধ্য শব্দগুলির যথাযথঅর্থ বার করতে হবে। কবিতার নামকরণ থেকেও অনেক সময় কবির উদ্দিষ্ট চিন্তাধারার আভাস পাওয়া যায়। যেমন হাফিয ইবরাহীমের الأمّ مدرسة কবিতায় তিনি যে নারীজাতির শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন, তা প্রদত্ত নাম থেকেই অনুধাবন করা যায়।
 
৬) INTERTEXTUALITY (তুলনামূলক আলোচনা) কোনো দুই বা ততোধিক কবিতায়, বর্ণনা বা কবির চিন্তাধারার মেলবন্ধন ঘটেছে কিনা সেটা তুলে ধরাই হল intertextuality যেমন শাওকীর الرقّ والحرّية ও হাফিযের الأمّ مدرسة তে নারীর উদ্দাম নয়, বরং যথার্থস্বাধীনতার সমর্থনে তাদের চিন্তাধারার মিল খুঁজে পাই। এটা থেকে পাঠকের পড়াশোনা বা তার উপলব্ধির পরিসর কতটা তার পরিচয় পাওয়া যায়।
 
৭) LANGUAGE (ভাষা) কবিতায় ব্যবহৃত ভাষা হল কবির চিন্তাশক্তির উৎকৃষ্টতম বাহন। বাক্যের গঠন, বর্ণনার ভঙ্গী, এমনকী বাক্য বা কবিতাটির দৈর্ঘ্যও লক্ষ্যণীয়। কবিতার মধ্যে কোথায় বর্ণনা বা প্রসঙ্গের পরিবর্তন ঘটছে; কোথায় নতুন চিন্তার সংযোজন হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে হবে। এছাড়াও আছে বাক্য-শব্দ-অর্থালংকারের প্রয়োগ। এর থেকে কবির ভাষাগত দক্ষতা ও কবিতার ভাষাগত উৎকর্ষের ধারণা পাওয়া যায়।
 
৮) RHYME SCHEME (ছন্দ প্রকরণ) ছন্দ হল কবিতার একদম স্বতন্ত্র একটি বৈশিষ্ট্য। কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত (ছন্দোবদ্ধ কবিতার ক্ষেত্রে) তা নির্ণয় করাটাও প্রয়োজন। সুন্দর ছন্দের ব্যবহার কবিতার আবৃত্তিতে অপরূপ শ্রুতিমাধুর্য তৈরি করে। অতএব ছন্দনির্ণয় হল কবিতা পাঠের জন্য সহায়ক।
 
প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি উপরের আটটি বিষয় তোমরা পড়ে নিয়েছ। কিন্তু একটি বিষয় লক্ষ্য করেছ কি? সেটা হলপ্রথম তিনটি কবিতার বাহ্যিক উপকরণ; তারপরের তিনটি কবিতার অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর শেষ দুটি কবিতার ভাষার গঠনগত আলোচনা।
 
এখন, ছাত্রছাত্রীদের করণীয় হল, শিক্ষকের প্রদত্ত ভাষণ মনোযোগ দিয়ে শোনা, জিজ্ঞাসা থাকলে জেনে নেওয়া। এবার এই আটটি বিষয় পাশে নিয়ে একটা একটা করে মিলিয়ে পড়তে থাকো। আশা করি, একবারেই পঠিত বিষয়টি হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হবে এবং তোমাদের নোট-নির্ভরতাও কমবে।
 
বিঃদ্রঃ এটি কোনো তত্ত্ব-তথ্য ভরা প্রবন্ধ নয়। ছাত্রাবস্থায় নিছকই নিজের একটি অসুবিধার প্রতিকার পরবর্তীদের সুবিধার্থে তুলে ধরলাম। আশা করি স্ব-চেষ্টায় সচেষ্ট হয়ে তারা উপকৃত হবে।

Friday 15 April 2016

العصر الجاهلي - الشاعر الحكيم زهير بن أبي سلمى: سؤالا وجوابًا


 
الشاعر الحكيم زهير بن أبي سلمى: سؤالا وجوابًا 
(520 – 609 م)
س: من هو الشاعر الحكيم؟
ج: الشاعر الحكيم هو زهير بن ربيعة بن رباح المزني.
س: إلى أي قبيلة ينتمى زهير بن أبي سلمى؟
ج: ينتمى زهير بن أبي سلمى إلى قبيلة بني غطفان.
س: هو شاعر جاهلي، خاله بشامة بن غدير الذي كان صاحب الوثوق في الرأي وكان غنيا ومشتهرا بكثرة ماله وشعره الرفيع، أخذ منه الشعر – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: من هما السيدان الذان مدحهما زهير بن أبي سلمى في معلقته؟
ج: هما حارث بن عوف وهرم بن سنان.
س: من هو الشاعر الذي لم يزل يقل الشعر في مدح هرم بن سنان؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: هو شاعر جاهلي كان يؤمن بالله وباليوم الآخر – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.
س: متى توفي زهير بن أبي سلمى؟
ج: توفي قبيل بعثة النبي محمد صلى الله عليه وسلم بسنة واحدة.
س: هو شاعر جاهلي، من أصحاب المعلقات، أسلم ابناه كعب وبجير – من هو؟
ج: هو زهير.  
س: هو عريق في الشاعرية: كان أبوه ربيعة بن رباح المزني يكنى بأبي سلمى وأختاه سلمى وخنساء وابناه كعب وبجير كلهم من الشعراء – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: كان ينظم القصيدة في أربعة أشهر، ثم يهذبها في أربعة، ثم يعرضها على أصحاب الفن في أربعة، وهكذا لا يعرضها على الناس إلا بعد سنة كاملة. فتسمت تلك القصائد بالحوليات. وسمي هو بصاحب الحوليات – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.   
س: هو شاعر جاهلي من أصحاب المعلقات، امتاز بالحكمة في الشعر، فتسمى شاعر الحكمة – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: ما كان اسم حبيبة زهير بن أبي سلمى التي ذكرها في معلقته وكنيتها؟
س: اسمها ليلى وكنيتها أم أوفى.
س: هو شاعر جاهلي، معلقته ميمية، شبّه فيها الموت بوطأة جمل أعمى يسير ليلا – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: هو شاعر من أصحاب المعلقات، قال فيه عمر بن الخطاب رضي الله عنه لبعض أولاد هرم بن سنان: قد ذهب ما أعطيتموه وبقى ما أعطاكم – من هو؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: من هو أشعر الناس إذا رغب؟
ج: هو زهير بن أبي سلمى.  
س: ما مطلع معلقة زهير بن أبي سلمى؟
ج: مطلع معلقته:  
        أَمِنْ أُمِّ أَوْفَى دِمْنَةٌ لَـمْ تَكَـلَّــمِ       بِحَوْمانَة الدَّرَّاجِ فَالْمُتَثَلَّمِ
س: فلا تكتمن اللّه ما في صدوركم       ليخفي ومهما يكتم اللّه يعلم              
     يؤخر فيوضع في كتاب فيدخـر      ليوم الحساب أو يعجـل فينقم
من قال ذلك؟
ج: قاله زهير بن أبي سلمى. 
س: من هو بطل معلقة زهير بن أبي سلمى؟
ج: السيدان هرم بن سنان والحارث بن عوف.

الجمع والإعداد: عبد المتين وسيم الدين

Wednesday 6 April 2016

আবু হাফস উমার ইব‌নুল‌ ফারিদ


আবু হ়াফ়্স়্ ‘উমার ইব্‌নুল্‌ ফারিদ়্
(১১৮১ ১২৩৫ খ্রি)
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
 
পরিচিতি ও জন্মঃ   
ইব্‌নুল্‌ ফারিদ়্ আব্বাসী যুগের অন্যতম প্রতিভাধার কবি। তিনিই সর্বপ্রথম আরবী সাহিত্যে সফল ভাবে সাংকেতিক পন্থার প্রবর্তন করেন। আরবি কাব্যজগতের একমাত্র সূফি কবি তিনিই। তাঁর প্রকৃত নাম ‘উমার, উপনাম আবু হাফ্‌স, উপাধি শার্‌ফুদ্দীন ও সুল্‌তানুল্‌ ‘আশেকীন (প্রেমিককুলের সম্রাট)। পিতার নাম ‘আলি, উপাধি আল্‌-ফারিদ়্কবি ১১৮১ খ্রিস্টাব্দের ২২শে মার্চ মিশরের রাজধানী কায়রোতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষরা সিরীয়ার হামাত-এর অধিবাসী ছিলেন। এজন্যই তাঁর নামের শেষে আল্‌-হামাবী যোগ করা হয়।
 
প্রতিপালন ও বিদ্যার্জনঃ
তিনি এক ধার্মিক উচ্চ শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন উচ্চ আদালতের একজন প্রধান বিচারপতি। তাই তিনি, বাল্যকালে পিতার নিকটেই প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন। আর সেই সঙ্গে তাঁর ধর্মীয় অনুশীলনও চলতে থাকে। যৌবনকালে তিনি কায়রোয় উপকন্ঠে অবস্থিত আল্‌-মুকাত্তাম পর্বতে গিয়ে তপস্যা করে কাটাতেন।
 
সূফিতত্ত্বে দীক্ষাঃ
ধর্মতত্ত্বের জ্ঞানার্জনের পর তাঁর মন সূফিতত্ত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। ক্রমাগতভাবে সূফিতত্ত্বের প্রতি তাঁর বিশ্বাস দৃঢ় হতে দৃঢ়তর হয়। তাই তিনি সূফিতত্ত্বে অনুসন্ধান ও অনুশীলনের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করেন।
 
মক্কার পথেঃ
যৌবনে পদার্পন করে তিনি কায়রোর সায়ফিয়া কলেজের তোরনের পাশে এক দরবেশ মুদীর কথা অনুযায়ী হজ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। হজ্জপালনের পর, পবিত্রভূমির প্রেমে আবদ্ধ হয়ে জীবনের পনেরটি বসন্ত মক্কা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে অতিবাহিত করলেন।
 
প্রত্যাবর্তন ও পরোলকগমনঃ
মক্কা নগরীতে দীর্ঘকাল অবস্থানের পর তিনি মাতৃভূমি মিশর প্রত্যাবর্তন করেন। অবশিষ্ট জীবন তিনি সন্মানের সহিত মিশরেই অতিবাহিত করেন। অবশেষে ১২৩৫ খ্রিস্টাব্দে ২৩শে জানুয়ারি তিনি মৃত্যু বরণ করেন। আল্‌-মুকাত্তাম পাহাড়ের পাদদেশে তাঁকে সমাহিত করা হয়
 
তাঁর গুনাবলীঃ
তিনি অত্যন্ত সুশ্রী, আল্লহ্‌ভীরু ও দরবেশ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তাঁর নগরবাসীরা তাঁর প্রচুর সম্মান করত। তিনি পথ দিয়ে যাওয়ার সময় লোকেরা তাঁর নিকট একত্রিত হয়ে তাঁর কাছে দুয়ার আবেদন করত।
 
কাব্য প্রতিভাঃ
আরব বিশ্বের সুফি কবি তিনিই। যৌবনে পদার্পন করেই কবি তা রচনা আরম্ভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মরমী কবি। তাই তাঁর প্রায় সমস্ত কবিতাই আধ্যাত্মগান্ধী। আরবি কাব্য-জগতে আত্‌-তারীকাতুর্‌ রাম্‌যিয়্যাহ্‌ বা সাংকেতিক পন্থার প্রবর্তক তিনিই। তাঁর কাব্য প্রতিভা সম্পর্কে আহ্‌মাদ হাসান যাইয়্যাত বলেছেন, তিনি (ইব্‌নুল ফারিদ) আরব কবিদের মধ্যে সর্বাধিক কালাম-এর ব্যবহারে ও প্রয়োগে যত্নশীল ছিলেন। অলংকার শাস্ত্রের বাদী’, জেনাস ও তিবাকের অধিক ব্যবহার তাঁর কবিতায় লক্ষ্য করা যায়।
 
কাব্যিক বৈশিষ্টাবলীঃ
তাঁর কবিতার ভাষা সহজ-সরল ও তাঁর রচনাশৌলী প্রশংসনীয়। তাঁর অধিকাংশ কবিতার ভাব দ্ব্যার্থবোধক। তাঁর বহু কবিতা বাহ্যতঃ সুরসঙ্গীত বলে প্রতীয়মান হয়। অথচ আভ্যন্তরীন মর্ম সূফীতত্ত্বমূলক। তাই সেগুলি মুর্‌শিদ ও মাদকাসক্ত উভয় শ্রেণীর নিকট সমাদৃত তাই তাঁর কবিতা যেমন যিক্‌রের মাহ্‌ফিলে পঠিত ও পরিবেশিত হতো ঠিক তেমনই পানশালায় সুরার আসরে হতো। কবিতা রচনার পূর্বে তাঁকে অবচেতন অবস্থা আচ্ছন্ন করে রাখতো। সেই অবচেতন অবস্থা কখনো কখনো দশ দিন পর্যন্ত দীর্ঘ হতো। সেই অবস্থায় তিনি খাওয়াদাওয়া কোনো কিছুই করতেন না। তার পর সম্বিৎ ফিরে পেলে গড়গড় করে কবিতা ডিক্টেট করতেন। তিনি তাঁর এক বিখ্যাত কবিতার সূচনায় মদের প্রশংসায় বলেছেন
شربنا على ذكر الحبيب مدامة                    وسكرنا لها من قبل أن يخلق الكرم
ওই কবিতাতেই মদের প্রভাবকে তিনি এভাবে ব্যক্ত করেছেন
ولو قولوا من جانها مقعدامشى                   وتنطق من ذكرى مذاقتهاالبكم
তিনি একজন সফল গজল রচয়িতাও ছিলেন। যেমন তিনি তাঁর এক কবিতায় বলেছেন
وأسأل نجوم الليل هل زاري الكرى               جفني؟ وكيف يزور من لم يعرف

Tuesday 5 April 2016

আহমাদ শাওকিঃ দাসত্ব ও স্বাধীনতা


দাসত্ব স্বাধীনতা
আহ্মাদ শাওকি, মিশর
অনুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
 
[মালাক হাফ্নি নাসিফ, মিশরীয় নারীবাদী এই লেখিকা নারী পর্দা বিষয়ে বহু লেখালেখি করেছেন। তিনি এসবই লিখেছেনবাহেসাতুল্বাদিয়াছদ্মনামে। সেই প্রেক্ষিতকে সামনে রেখে কবি শাওকি এই কবিতাটি রচনা করেছেন।]
 
হে কানারী পাখীদের রাজা, হে বুলবুলিদের নেতা! তুমি গান গাও;

কেননা আমি তোমার মধ্যে খুঁজে পাই উমাইয়া যুগের বিখ্যাত গায়ক মাবাদকে এবং শুনতে পাই ইব্রাহিম ইব্নু ইসহাক আল-মুসিলির কণ্ঠ। 

আমার মনে হয়, আমার জন্য দাউদ (আঃ)-কে প্রদান করা হয়েছিলো বাঁশির মতো সুরেলা কণ্ঠ এবং ছন্দময় আবৃত্তি।

তুমি তো কখনই পদার্পণ করোনি কোনো সিংহাসনে বা কোনো মঞ্চের উপরে;

ট্যারা চাহনি বিশিষ্ট ব্যাক্তির সংকীর্ণ দৃষ্টি-সমরে তোমার পদচারণা স্বর্ণমুদ্রার কম্পনের মতো  

তুমি যদি কোনোদিন কোনো রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হতে তাহলে আর কোনো গায়কই সুযোগ পেতো না।

তোমার গানের মুখড়া কবি ফারায্দাকের মতো আর অন্তরা কবি জার্ওয়ালের মতো।

তুমি দুপুরের সূর্যের নিকট হতে গ্রহন করেছো উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের পোষাক ও গহনা।  

অতঃপর নিজেকে প্রকাশ করেছ গীর্জার দেবদাসীদের মতো শুভ্র পোষাকে।  

হে বন্দী পাখি! আমি জানতে চাই, তোমার হৃদয় ভারাক্রান্ত না কি (দুশ্চিন্তা) মুক্ত?

তুমি কি অনিদ্রার দোসর, যে সকাল পর্যন্ত ঘুমাও না?

যদিও তুমি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবস্থান করছো তালাবদ্ধ খাঁচায়।

আমার লোভ হয় তোমাকে ভালবাসতে; আর কোনো ব্যক্তি যখন কোনো মূল্যবান রত্ন পায় তখন সে কৃপন হয়ে যায়।

তবে প্রয়োজনীয়তা বড় বড় দানশীল ব্যাক্তিদের মধ্যেও কৃপনতার জন্ম দেয়।  

শোনো, যদি আমি তোমাকে সোনার খাঁচায় রেশমে মুড়ে রাখি,

লিলি ফুল জড়িয়ে ও লবঙ্গের গন্ধে ভরে,

এবং তার চারিদিকে জ্বালাই সুগন্ধময় অতি মূল্যবান চন্দন কাঠ,

আর সেই খাঁচাকে নিয়ে যাই কোনো ঝর্নার ধারে বা কোনো ছোটো নদীর মোহনায়,

আর আহ্বান জানাই প্রত্যেক শুভ্র পদ ও ঝুটি বিশিষ্ট পক্ষিরাজকে,

অতঃপর প্রফুল্ল চিত্তে ও মহাসমারোহে তোমার নিকট আগমন করে সকল প্রশংসাকারী পাখী,

তারপর আমার পুত্র আমার আদেশ মতো তোমার সঙ্গে উজ্জ্বল বদনে সাক্ষাৎ করে,  

ডান হাতে এমন এক ফালুদা নিয়ে যা খলিফা মুতাওয়াক্কিলকেও দেওয়া হয়নি

এবং (বাম হাতে) রূপার এক পানপাত্র নিয়ে যা স্বচ্ছ পানীয় দ্বারা পরিপূর্ণ,

হে গায়ক পাখী! তাহলেও কি আমি তোমার নিকট দাতা ও অনুগ্রহশীল ব্যাক্তি বলে বিবেচিত হবো না?  

যদি জীবন-সুধা পরাধীনতার সঙ্গে মিশে যায় তাহলে তা হাঞ্জাল ফলের মতো তিক্ত হয়ে যায়।

আর পিঞ্জর বা খাঁচা মুক্তো-খচিত হলেও তা অসহনীয়ই হয়,

হে কানারী পাখী! যদি লোকেরা আমাকে উন্মাদ না বলতো, তাহলে আমি তোমাকে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে বলতাম। 

শোনো, অনেক সময় এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সংক্ষিপ্ত বর্ণনার মতো তোমাকে উপকৃত করবে না।  

তুমি কঠিন অবস্থার মধ্যেও ধৈয্য ধারণ করো। আর তা নাহলে তোমার যা ভাল লাগে তা-ই করো।  

তুমি তো প্রকৃতিগত ভাবে তোমার নিজস্ব মতের অধিকারী, যা অপরিবর্তনীয়।

যদিও তোমাকে সর্বদা বন্দী করে রাখার ও হত্যার ভয় দেখানো হয়। 

তবে তুমি যদি আমার আশ্রয় থেকে উড়ে যাও তাহলে নির্বোধ চিলের শিকারে পরিণত হবে।

হে কানারী পাখী! তুমি এসব উপমা থেকে শিক্ষা লাভ করো। কেননা জ্ঞানী ব্যক্তিরা উপমার মর্মার্থ উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়।  

আর তোমার পৃথিবীর একটাই রীতি, তুমি তার সাথে থাকবে না যার নিকট অস্ত্র নেই;  

আথবা যার বুদ্ধি নেই, যদিও সে ভবিষ্যতের আশা পোষণ করতে দ্বিধা করে।

আর স্বাধীন ব্যাক্তির এক অদ্ভুদ স্বভাব, সে নিজে বিপদে পড়বে এবং অন্যকেও বিপদে ফেলবে।  

সে জীবন যুদ্ধের ক্ষেত্রে কষ্টে পড়বে এবং অন্যমনস্ক ভাবে অন্যকেও কষ্টে ফেলবে,

সে সিংহের মত শক্তি একত্রিত করে, অতঃপর যদি সে মূর্খের মতো আক্রান্ত হয় সেও মূর্খের মতো আক্রান্ত করে।

তুমি কি ইসলামের ইতিহাসের জান্দালের ঘটনার দিনের সেই দুই মীমাংসাকারীর কথা শুনেছো?  

সেই ঘোরতর বিপদের সময়, যদি তারা চালাকি না করতো তাহলে হয়তো যুদ্ধের আগুন জ্বলত না!

সেদিন রাসূলের সাহাবীগণ মহান আল্লাহ্কর্তৃক অবতারিত কুরআন-এর বিধান ফয়সালা সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিয়েছিল। 

তাঁরা ছিলেন প্রেরীত নবী (সঃ)-এর হাদিস বর্ণনাকারী উজ্জ্বল প্রদীপ স্বরূপ।   

তাঁরা আল্‌-কুরআন-এর আয়াত পরিবেশন করেছেন। অতঃপর বহু জন তার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে তৎপর হয়েছে।   

ফলস্বরূপ, মুআবিয়া (রাঃ)-এর খলিফা হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে এবং আলী (রাঃ)-এর পথ সংকীর্ণ হয়েছে।    

অতঃপর তারা অত্যাচারের সেই পথে ফিরে গেছে যে পথ তাদের মনের মধ্যে দৃঢ়মূল হয়েছিল প্রকৃতির মতো করে।

তারা সেদিন সেই সুচতুর ব্যক্তির শক্তিশালী বিচার ফয়সালার নিকট মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছিল।

হে গায়ক! তুমি বিশ্বাস করো আর না করো আমি যা বলছি সবই সত্য।

তুমি (এখন) একটি সিক্ত উদ্যানের প্রতিবেশী হয়েছো এবং একটি আড়ম্বরপূর্ণ আবাসে অবতরণ করেছো;  

তুমি সেখানে হুসাইন (রাঃ) কতৃক সম্বর্ধিত হয়ে আলী (রাঃ)-এর স্নেহ ও পরিচর্চা লাভ করেছো।  

তাছাড়া, তুমি সেখানে শৈশবে প্রাপ্ত মা আমিনার মাতৃস্নেহ লাভ করেছ।  

অতএব তুমি প্রভাতের গান গাও এবং মিশরের সন্তানসন্ততিদেরকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সুসংবাদ প্রদান করো।  

এবং মিসরের জন্য প্রার্থনা করো, যাতে মিশরের বুকে ঊর্ধ্বাকাশ (অর্থাৎ আল্লাহ্‌র নিকট) হতে নিরাপত্তা শান্তি নেমে আসে।  

তুমি বলো, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি (আমাদের জন্য) তোমার করুণার দ্বার উন্মুক্ত করো এবং (আমাদের জন্য) তোমার নিকট হতে কল্যাণ প্রেরণ করো।  

হে প্রভু, তুমি মহৎ আরবদের তরে তোমার কল্যাণ প্রেরণ করো এবং (আমার) এই প্রার্থনা কবুল করো।

 

صداح يا ملك الكنار

أحمد شوقي بك – مصر
 
صداح يا ملك الكنا             ر ويا أمير البلبل

قد فزت منك بمعبد              ورزقت قرب الموصلي

وأتيح لي داود مز               مارا وحسن ترتل

فوق الأسرة والمنا                بر قط لم تترجل

تهتز كالدينار في               مرتج لحظ الأحول

وإذا خطرت على الملا          عب لم تدع لممثل

ولك ابتداءات الفرز             دق في مقاطع جرول

ولقد تخذت من الضحى         صفر الغلائل والحلى

ورويت في بيض القلا           نس عن عذارى الهيكل

يا ليت شعري يا أسير           شج فؤادك أم خل

وحليف سهد أم تنا              م الليل حتى ينجلى

بالرغم منى ما تعا               لج في النحاس المقفل

حرصي عليك هوى ومن        يحرز ثمينا ينجل

والشح تحدثه الضرو             رة في الجواد المجزل

أنا إن جعلتك في نضا          ر بالحرير مجلل

ولففته في سُوسن                وحففته بقَرنفل

وحرقت أزكى العود حو          لَيه وأغلى الصندل

وحملته فوق العيو               ن وفوق رأس الجدول

ودعوت كل أغر في             ملك الطيور محجل

فأتتك بين مُطارح               ومحبذ ومدلل

وأمرت بابني فالتقا              ك بوجهه المتهلل

بيمينه فالوذج                   لم يهد للمتوكل

وزجاجة من فضة               مملؤة من سلسل

ما كنت يا صدّاح عنـ           ـدك بالكريم المفضل

شهد الحياة مشوبة               بالرق مثل الحنظل

والقيد لو كان الجما              ن منظما لم يحمل

يا طير لولا أن يقو              لوا جُن قلت تعقل

اسمع فرب مفصل              لك لم يفدك كمجمل

صبرا لما تشقى به              أو ما بدا لك فافعل

أنت أبن رأى للطبي             عة فيك غير مبدل

صداح حق ما أقو               ل حفلت أم لم تحفل

جاورت أندى روضة             وحللت أكرم منزل

بين الحفاوة من حسيـ            ـن والرعاية من على

وحنان آمنة كأمـ                 ـك في صباك الأول

صح بالصباح وبشر الـ          ـأبناء بالمستقبل

واسأل لمصر عناية             تأتي وتهبط من عل

قل ربنا افتح رحمة              والخير منك فأرسل

أدرك كنانتك الكريـ               ـمة ربنا وتقبل