Sunday 3 June 2018

বদিউর রহমানঃ তাঁর দৃষ্টিতে আমি...

তাঁর দৃষ্টিতে আমি...  
বদিউর রহমান

লিঙ্গুইস্টিকের অধ্যাপক কিশোর কুমার রাড়হির ফোন। ও প্রান্ত থেকে হঠাৎ আমার ভূয়সী প্রশংসা শুনে কিংকর্তব্য বিমুঢ়। ফোনে কথা বন্ধ করে আমার ফ্ল্যাটে আসতে বললাম। বললেন, এখন তো আমি লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের কাছে রয়েছি। জিজ্ঞাসা করলাম কোন সেমিনারে না বক্তৃতা করতে। বললেন, না শর্মিষ্ঠার জন্য অপেক্ষা করছি। শর্মিষ্ঠা ল্যাঙ্গুইস্টিকে এম এ । ডবলু বিসি এস করে রেভিনিউ অফিসার। কিশোর বাবু আমার লেখা সবই মায়া-র পুনরায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন। একজন বিদগ্ধ খ্যাতনামা অধ্যাপকের প্রশংসায় বড় কুণ্ঠিত হয়ে বাঁচার জন্য বললাম, আসুন না, সাক্ষাতে কথা হবে।
ঘণ্টা খানেক পর উনার পদধূলি আমার ফ্ল্যাটে। ঢোকা মাত্র আমার স্ত্রীকে বললেন, বৌদি আপনি ভাগ্যবান। দাদা কি সুন্দর লেখেন। আপনি ভাগ্য করে অমন রত্নধন পেয়েছেন। আমি বুঝলাম, এ আর এক ধরণের অতিরঞ্জন। আমার স্ত্রী ঐ স্রোত বাক্যে কর্ণপাত না করে কিশোর বাবুকে বসতে বলে উঠে চা বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। যখন চা দিতে এলেন কিশোর বাবু আবার বললেন, দাদা খুব সুন্দর লিখেছেন। আপনাদের মগলাম্পুর ও শক্তিগড়ের তাঁতখণ্ড দেখার ইচ্ছে রইল। আর গদা চাচাটা কে? তবে যাই বলুন, আরবি সাহিত্যের লোক হয়েও বাংলায় কি সুন্দর লেখেন। সত্যি বলছি, দাদাকে আমি নানা কারণে ভালোবাসি। লেখালেখির জন্য মনে হচ্ছে দাদা আমার রত্নধন।
গল্পগুজব করে উনি চলে গেলেন উপরে তাঁর ফ্ল্যাটে। স্বভাবসিদ্ধ ধারায় আমাকে বকুনি দেওয়া থেকে বিরত থাকার অস্ত্র হিসেবে ঐ শব্দটা ব্যবহার করে বাঁচতে চেষ্টা করলাম কয়েক বার। বললাম, অতি গুণীজন রত্নধন বলেছেন। আর তুমি আমার প্রাপ্য মর্যাদা দিচ্ছ না। প্রথম দুয়েক বার ওষুধে কাজ হল। দ্বিতীয় দিনে একই অস্ত্র প্রয়োগ করলে উত্তর এলো, উনি ভুল বলেছেন। তুমি বাস্তবে গোবরধন। আমার গর্বের ফানুস এক লহমায়...।   

১০ মে, ২০১৮।

No comments:

Post a Comment