Sunday 27 September 2020

উই উইল মিট এগেইন, তবে এখন বাড়িতে জামাআত



উই উইল মিট এগেইন, তবে এখন বাড়িতে জামা'আত  
 
এই অতিমারি শেষ হলে আবার দেখা হবে আমাদের, নিশ্চিত দেখা হবে ইন্‌ শা আল্লাহ্‌! তবে বর্তমানে আমরা যে সংকটময় সময় অতিবাহিত করছি, তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে হয়তো সবচেয়ে ভয়ানক ও কঠিন। আর এই কঠিন সময়ের মাঝেই আমাদের দ্বারে এসে উপস্থিত হয়েছে রমযান মাস। অত্যন্ত পবিত্র এবং আত্মশুদ্ধির মাস। এ মাসেই পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয়। এ মাসেই রয়েছে লায়লাতুল্‌ কাদ্‌র নামক পবিত্র রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
 
বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে এই মাসের। ইবাদতের (উপাসনার) এই মাসে মানুষ আত্মসমালোচনা, আত্মসমীক্ষা এবং বছর জুড়ে নিজ কর্মকাণ্ডের হিসেবনিকেশ করে। নিজের ভুলভ্রান্তি শুধরে নিয়ে আগামীতে আরও ভালো মানুষ হওয়ার ব্রত গ্রহণ করে। ফাজ্‌র (ঊষাকাল) হতে মাগ্‌রিব (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত পানাহার হতে বিরত থেকে সহজেই অনুমান করতে পারে অভাবী ও গরীবদুঃখীদের জ্বালা। তাই এ মাসে বেশী বেশী দান-খয়রাত করে, সাদ্‌কা দেয়, যাকাত আদায় করে, প্রতিবেশীর প্রতি সদয় হয়। সহজ করে বললে, উদাসীনতার খোলস ছেড়ে একটু একটু করে সচেতন হয় এবং এক পা-দু’ পা করে শান্তির পথে, সমৃদ্ধির পথে এগোতে থাকে।
 
তবে এবারের রমযান আর পাঁচটা রমযান থেকে অনেকটাই ভিন্ন রকমের। এই অতিমারির কারণে গত চারটে জুম’আ আমরা মসজিদে সালাত আদায় করতে পারিনি। এই রমযানে জুম’আ এবং তারাবিহ্‌র জামা’আতও হয়তো সম্ভব হবে না। তাই যেভাবে এতদিন ধরে পাঁচ-ওয়াক্ত নামায এবং জুম’আর বদলে যোহর বাড়িতে আদায় করে আসছি; একই ভাবে এই রমযানে আমাদেরকে তারাবিহ্‌র নামাযও হয়তো বাড়িতেই পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা যে যার বাড়িতে নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জামা’আত করে তারাবিহ্‌ ও অন্যান্য সালাত আদায় করতে পারি।
 
এই ছবিতে বাড়িতে জামা’আত করার পদ্ধতি অতিসংক্ষেপে দেখানো হয়েছে। তাই এবার হয়তো বাড়িতে জামা’আত করে নিজেরদের দুর্বলতা ও খামতিগুলো শোধরানর চেষ্টা করতে হবে; যতটা পারা যায়। সেই সাথে আমাদের এটাও ভেবে দেখতে হবে যে, এতদিন মসজিদ আমাদের ডাকতো, হাইইয়া ‘আলাস্‌ সালাহ্‌ (এসো সালাতের জন্য), হাইইয়া ‘আলাল্‌ ফালাহ্‌ (এসো সফল হওয়ার জন্য); কিন্তু আমরা অবহেলা করেছি। সাড়া দেয়নি সেই ডাকে। পাত্তা দিইনি দু’হাজার টাকা মাইনে পাওয়া মুয়াজ্জিনের। আর এখন মন কাঁদছে আমাদের মসজিদে যাওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব; বিশেষ করে রমযানে। কিন্তু মুয়াজ্জিন সাহেব এখন আর আমাদেরকে ডাকেন না এখন পাঁচ-ওয়াক্ত আযানে তিনি বলছেন, আস্‌-সালাতু ফি বুইউয়ুতেকুম (নামায বাড়িতেই পড়ুন)তাই যতদিন না এই অতিমারি শেষ হয় বাড়িতেই নামায পড়ুন এবং ধৈর্য ধরুন। সাথে সোশাল ডিস্টেন্সিং ও মেডিকেল নির্দেশিকা মেনে চলুন। বেঁচে থাকলে ‘উই উইল মিট এগেইন’!

 আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
১৭ এপ্রিল ২০২০
বাঁশকুড়ি, দঃ দিনাজপুর 

No comments:

Post a Comment