নবী (সাঃ)—আমলের সামরিক অভিযানঃ কিছু কথা
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
ইসলাম যে কোনো প্রকারের কলহ-বিবাদ, দমনপীড়ন ও ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপকে নিষিদ্ধ
ঘোষণা করেছে। এবং শান্তির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এমন সকল কাজকে নিরুৎসাহিত করেছে।
তবে ক্ষেত্র বিশেষে ইসলাম যুদ্ধের অনুমতি দিয়েছে; আর তা সত্য-প্রচার, ন্যায়বিচার ও সুশাসন-প্রতিষ্ঠা করা এবং মানবাধিকার সংরক্ষনের ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে।
রাসূল (সাঃ) যখন
মক্কায় ইসলামের নীতিনৈতিকতার প্রচার আরম্ভ করেন দাম্ভিক কোরায়েশ নেতারা তাঁর
বিরোধী হয়ে যায়। তাঁর ও তাঁর
অনুগামীদের প্রতি অকথ্য
অত্যাচার আরম্ভ করে। বাধ্য হয়ে তিনি মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় আশ্রয় নেন; একে একে তাঁর অনুগামীরাও। অন্যদিকে,
মদিনায় তাঁদের আপ্যায়ন ও সমর্থন দেখে কোরায়েশ নেতারা তাঁদের বিরুদ্ধে নানাবিধ
চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করতে শুরু করে। আর তখনই তাদের ওই আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য
অস্ত্র ধারণের অনুমতি দেওয়া হয় [সূরা আল্-হাজ্জ ৩৯]।
তবে, রাসূল (সাঃ) যুদ্ধের সময় কিছু সুনির্দিষ্ট
নীতি অনুসরণ করে চলতেন এবং নিজ অনুগামী ও অনুসারীদেরকেও
সেই নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেন। তিনি (সাঃ) তাঁদেরকে আদেশ করেন যুদ্ধের সময় কোনো নারী,
শিশু,
ধর্মীয় পুরোহিত (পাদ্রী), শ্রমিক,
যুদ্ধ হতে বিরত সাধারণ মানুষ এবং
আত্মসমর্পণকারী সৈনিকদের হত্যা না করার। তিনি তাঁদেরকে এও আদেশ করেন যে, তাঁরা যেন
অন্য ধর্মের লোকেদের ধর্মস্থল গির্জা-মন্দির, সাধারণ সম্পত্তি, শস্যখেত, ফলদায়ক
গাছ, বাগান ইত্যাদি ধ্বংস না করে। এমনকি সামান্য ক্ষতিও না করে। যুদ্ধ চলাকালীন
কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যাতে কোনো প্রাণীসম্পদ ধ্বংস না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখর
নির্দেশ দেন তিনি (সাঃ) [বুখারি
৩০১৪, মুসলিম ১৩৬৪, আবু দাউদ ২৬৬৯, আস্-সিয়াসাতুশ্ শার্‘ইয়্যাহ্ ইব্নু
তাইমিয়াহ্ ১৬৬]।
তাঁর
জীবদ্দশায় বহু রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে। তিনি নিজেও একাধিক লড়াইয়ে শামিল
হয়েছেন। ঐতিহাসিক ও সীরাত-পণ্ডিত আল্লামা সাইয়েদ সুলায়মান মান্সুরপুরী নিজ গ্রন্থ
রাহ্মাতুল্ লিল্-‘আলামীন-এ মোট ৮২টি
অভিযানের তালিকা দিয়েছেন যেগুলি
নবী-আমলে সংঘটিত হয়েছিল। তাঁর ওই তালিকার সাথে আর এক
বিদগ্ধ সীরাত-রচয়িতা আল্লামা সাফিউর রাহ্মান মুবারকপুরী’র নিজ কালজয়ী
রচনা আর্-রাহ়ীক়ুল্ মাখ্তূম-এ প্রদত্ত তালিকা মেলালে মোট ৮৬টি অভিযানের তথ্য পাওয়া যায়।
মদিনা-জীবনের আট বছরে সংঘটিত ওই ৮৬টি অভিযানের মধ্যে ২৯টি ছিল গায্ওয়াহ, যে অভিযানগুলিতে নবী (সাঃ) নিজে শরীক হয়েছিলেন [বুখারি
৩৯৪৯] এবং বাকি ৫৭টি সারিইয়াহ্, যে অভিযানগুলিতে নবী (সাঃ) নিজে শরীক হননি; তাঁর অনুমতিতে তাঁর
অনুগামীরা পরিচালনা করেছিলেন। এই ৮৬টি অভিযানে উভয় পক্ষের নিহত ও শহীদদের যে তালিকা আল্লামা মান্সুরপুরী দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, মুসলিম পক্ষে শহীদ হয়েছেন ২৫৯ জন এবং অমুসলিম পক্ষে নিহত হয়েছে ৭৫৯ জন। উভয়পক্ষে সর্বমোট নিহতের
সংখ্যা ১০১৮ জন। কিন্তু তাঁর
সাথে মুবারকপুরীর বর্ণনা মেলালে দেখা যাচ্ছে, মুসলিম পক্ষে ৩৩৯ জন এবং অমুসলিম পক্ষে ১০৯১ জন নিহত হয়েছে। এই মতপার্থক্য এই জন্য যে,মান্সুরপুরী সারিইয়া
ইবনু আবিল আওজা-তে মুসলিম পক্ষে ৪৯ জন শহীদ বলেছেন, যা ৩৩৯ জন নিহতের হিসাবে ধরা হয়েছে। কিন্তু মুবারকপুরী এ বিষয়ে কিছু
বলেননি। অন্যদিকে, গায্ওয়া বানু
কুরায়যাতে ইহুদীপক্ষে নিহতের সংখ্যা মানসুরপুরী ৪০০ বলেছেন। কিন্তু মুবারকপুরী ৬০০ থেকে ৭০০-এর
মধ্যে বলেছেন। এছাড়া ৭টি সারিইয়ায় প্রতিপক্ষের নিহতের সংখ্যা উল্লেখ না
করে বলা হয়েছে ‘কিছু লোক’। অতএব অমুসলিম পক্ষে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উল্লেখ্য যে, সবচেয়ে বড় ৯টি যুদ্ধে অর্থাৎ বদর, উহুদ, খান্দক়, খায়বার, মুতা, মক্কা বিজয়, হোনায়েন, ত়ায়েফ ও তাবূক যুদ্ধে মুসলিম পক্ষে যথাক্রমে ১৪, ৭০, ৬, ১৮, ১২, ২, ৬, ১২, ০০ মোট ১৪০ জন এবং কাফের
পক্ষে ৭০, ৩৭, ১০, ৯৩, ০০, ১২, ৭১, ০০, ০০ মোট ২৯৩ জন সহ
সর্বমোট ৪০৩ জন নিহত হয়েছে। তবে তাবূক যুদ্ধে কোনো পক্ষে হতাহত হয়নি।
এই অভিযানগুলির মধ্যে মোট ২১টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে কোরায়েশদের বিরুদ্ধে, ৮টি ইহুদীদের বিরুদ্ধে, ৬টি খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে এবং ৫১টি পরিচালিত হয়েছে নাজ্দ ও অন্যান্য
এলাকার বেদুঈন গোত্র ও সন্ত্রাসী-ডাকাত দলের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে তিনটি (২৪- বা’সুর্ রাজী’, ২৫- বীর মা’উনাহ্ ও ৩৭-
হুদায়বিয়া) ছিল স্রেফ তাবলীগী কাফেলা বা প্রচারণামূলক অভিযান। ২৪ ০ ২৫ উভয় অভিযানে ওই অঞ্চলের লোকেরা নবী
(সাঃ)-এর কাছে ইসলামের নীতিমালা শেখাতে পারবেন এমন কিছুজনকে পাঠাতে অনুরোধ করেছিল।
কিন্তু প্রতারণা করে যাদেরকে
নবীজি ইসলাম ও শিষ্টাচার শেখানোর জন্য প্রেরণ করেছিলেন তাদের প্রায় সবাইকে হত্যা করা হয়।
প্রথম দিকে কোরায়েশদের মূল লক্ষ্য ছিল নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) ও মুষ্টিমেয় মুসলমানদের নির্মূল করা। এবং তাদের এই আক্রোশের মূলে ছিল ধর্মবিশ্বাসের
দ্বন্দ্ব। হিজ্রত-পরবর্তী সময়ে, মুসলমানদের সাথে তাদের সংঘর্ষের প্রধান লক্ষ্য ছিল মদিনা হয়ে সিরিয়া যাওয়ার তাদের বাণিজ্যিক পথকে নিরাপদ ও কণ্টকমুক্ত করা। সেই সাথে ভূখণ্ড জুড়ে
নিজেদের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করা। তাদের বহিষ্কৃত
সন্তান তাদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে, এটা তারা মেনে
নিতে পারেনি। তাদের এই ক্ষোভ ও বিদ্বেষকে কাজে লাগিয়ে যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ জ্বালাতে
সদা তৎপর ছিল সে-সময়ের অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তাই কারণ, স্থান ও পটভূমির নিরিখে মক্কা
বিজয়-পূর্বের এই অভিযানগুলির অধিকাংশই ছিল প্রতিরোধমূলক। বদর সহ প্রথম দিকের ৯টি অভিযানের উদ্দেশ্য
ছিল কোরায়েশদের বাণিজ্য কাফেলায় আঘাত করে তাদের আর্থিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেওয়া এবং মুসলমানদের
বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ প্রস্ত্ততি ভন্ডুল করা।
অন্যদিকে, ইহুদিদের বিরুদ্ধে করা অভিযানগুলি ছিল তাদের চুক্তিভঙ্গের কারণে এবং অবিরত চক্রান্ত ও
ষড়যন্ত্রের কারণে। মদিনায় খ্রিস্টানদের
তেমন কোনো তৎপরতা ছিল না। তবে সিরিয়ার নিকটবর্তী দূমাতুল জান্দালে প্রথম যে
অভিযানটি তাদের দিকে প্রেরিত হয়েছিল, সেটি ছিল প্রচারণা
মিশন। এবং তাতে গোত্র নেতাসহ সকলে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। পরবর্তীতে যে মুতার যুদ্ধ হয়েছিল, সেটি ছিল রোমান গভর্নর শোরাহ্বীলের মুসলিম দূত
হত্যার প্রতিশোধ স্বরূপ। এবং তাবূক অভিযান ছিল আগ্রাসী রোম-সম্রাটের বিরুদ্ধে, তার প্রেরিত বিশাল সেনাবাহিনীর হাত থেকে মদিনাকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু রোমানরা ভয়ে পিছু হটে যাওয়ায় কোনো যুদ্ধ হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তৃতীয় হিজরিতে উহুদ যুদ্ধের প্রাক্-মুহূর্তে
মুনাফিকরা দলত্যাগ করে মুসলিম সেনাবাহিনীর মনোবল দুর্বল করার চক্রান্ত করেছিল। ফলে রাসুল (সাঃ) তাদেরকে আর কোনো যুদ্ধে শরিক হবার অনুমতি দেননি। কিন্তু আব্দুল্লাহ ইবনু উবাই ও তার দলের প্রকাশ্যে তওবা
ও বারবার অনুরোধ করার কারণে তাদেরকে পঞ্চম হিজরিতে বানুল্
মুস়্তালিক যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেন। কিন্তু তারা আবারও বিশ্বাসঘাতকতা করে। তাই পরবর্তী আর কোনো অভিযানে তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে তাবূক অভিযানে তাদের ১২ জন গোপনে ঢুকে পড়ে ও রাসূল (সা)-কে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা করে।
মক্কায় ইসলাম ছিল প্রচার পর্বে। আর মদিনায় প্রচারের পাশাপাশি প্রতিরোধ পর্বে। তাই এই পর্বে হারাম (নিষিদ্ধ) মাসেও যুদ্ধ করার
অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে। যার সূত্রপাত ঘটেছিল নাখলা যুদ্ধে। এবং এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয়েছে সূরা আল্-বাকারাহ্র ২১৭ নং আয়াতটি (তারা তোমাকে নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে
জিজ্ঞেস করছে; তুমি তাদের বলে দাও, এই নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করা মহা অন্যায়। আর
আল্লাহ্র পথে বাধা সৃষ্টি করা, আল্লাহ্কে অস্বীকার করা, পবিত্র মসজিদের পথে বাধা
দেওয়া এবং সেখান থেকে তার অধিবাসীদের বহিষ্কার করা আল্লাহ্র নিকট গুরুতর অপরাধ।
এবং হত্যা অপেক্ষা ফেতনা-ফাসাদ অধিক গুরুতর পাপ। তারা সক্ষম হলে তোমাদেরকে তোমাদের
ধর্ম থেকে বিমুখ না করা পর্যন্ত সর্বদা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে।)।
সপ্তম শতাব্দীর
ওই ইসলামী বিপ্লবের পর, পৃথিবী অনেক দূর এগিয়েছে। জন্ম নিয়েছে বহু মতবাদ। পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে সংঘটিত হয়েছে একাধিক বিধ্বংসী যুদ্ধ। যার তাণ্ডবলীলায়
বলি চড়েছে অসংখ্য প্রাণ ও প্রাণীর। কেবল ১ম বিশ্বযুদ্ধেই (১৯১৪-১৯১৮) প্রাণ হারিয়েছে ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ— রাশিয়ায় ১৭ লাখ, জার্মানীতে ১৬ লাখ, ফ্রান্সে ১৩ লাখ ৭০ হাজার, ইতালিতে ৪ লাখ ৬০ হাজার, অষ্ট্রিয়ায় ৮
লাখ, গ্রেট বৃটেনে ৭
লাখ, তুরষ্কে ২ লাখ
৫০ হাজার, বেলজিয়ামে ১ লাখ
২ হাজার, বুলগেরিয়ায় ১
লাখ, রুমানিয়ায় ১ লাখ,
সার্বিয়া-মন্টিনিগ্রোতে ১ লাখ, আমেরিকায় ৫০ হাজার; মোট ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার। অন্য এক হিসাবে— নিহত ৯০ লাখ, আহত ২ কোটি ২০ লাখ এবং নিখোঁজ প্রায় ১ কোটি।
আর ২য় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৪১-১৯৪৫) প্রায় ৩ কোটি। একা সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রায় ৮৯ লাখ সৈন্য হারিয়েছে। হিটলার কর্তৃক জার্মানীতে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে ৬০ লক্ষ ইহুদীর নৃশংস হত্যার ক্ষত আজও দগদগে। এ সময়ে ৬ আগষ্ট, ১৯৪৫-এর সকাল ৮-১৫তে জাপানের হিরোশিমাতে আমেরিকার ‘লিটল বয়’ পরমাণু বোমার তাণ্ডবে নিহত হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬৬১ জন এবং ১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ধ্বংসস্তূপের ছাইয়ে পরিণত হয় (হিরোশিমা
মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান ১৯৪৯-এর ২০শে আগষ্ট
এক ঘোষণায় বলেন, ৬ আগষ্টের ওই বোমা হামলায় মৃত্যু বরণকারীর সংখ্যা ২ লক্ষ ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজারের মধ্যে)। তিনদিন পর, ৯ই আগষ্ট বুধবার দ্বিতীয় বোমাটি নিক্ষিপ্ত হয়
জাপানের নাগাসাকি শহরে। যার
তাণ্ডবলীলায় প্রাণ হারায় প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। এবং তেজষ্ক্রিয়তার
ফলে ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য
ব্যধিতে আজও মানুষ মরছে সেখানে। বহু শিশু পঙ্গু ও প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মাচ্ছে।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে (১৯৫৫-১৯৭৩) মার্কিন আগ্রাসনের কারণে নিহত হয়েছে ৩৬ লাখ ৭২ হাজার মানুষ, ১৬ লাখ মানুষ
পঙ্গু হয়েছে এবং ৯ লাখ শিশু অনাথ। এই ভিয়েতনাম যুদ্ধে
রাসায়নিক অস্ত্র হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ‘এজেক্ট অরেঞ্জ’ স্প্রে করেছিল। যার কারণে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মানোর পাশাপাশি ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন মারণরোগে প্রায় ৩০
লাখ মানুষ রোগাক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়া জন ডেভেনপোর্ট-এর মতে, কেবলমাত্র খ্রিস্টান ধর্মীয় আদালতের নির্দেশে খ্রিস্টান নাগরিকদের নিহতের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। একা স্পেন সরকার ৩
লাখ ৪০ হাজার খ্রিস্টানকে হত্যা করেছে; যার মধ্যে ৩২ হাজারকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে।
এবং সম্প্রতি ইরাক-ইরান যুদ্ধে (১৯৮০-১৯৮৮) উভয় পক্ষের প্রায় দশ লাখ লোকের
প্রাণহানি ঘটেছে। এমনকি বর্তমানেও বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সোমালিয়া, সার্বিয়া, কসোভো, সূদান, শ্রীলংকা, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, মায়ানমার সহ
আমাদের কাশ্মীরে নিত্যদিন নানা অজুহাতে অসংখ্য মানুষের রক্ত ঝরছে। তবুও, এই নির্মম
বাস্তবতা চোখে দেখেও কিছু মানুষ প্রশ্ন তোলে, কাঠ গোঁড়ায় দাঁড় করায় ইসলাম ও তার
অনুসারীদেরকে। আঙুল তোলে নবী-আমলের সামরিক অভিযানগুলির দিকে। তাদের শুভ বোধের উদয়
হোক, এই প্রার্থনা করি।
No comments:
Post a Comment