Wednesday 11 May 2022

আব্দুল মাতিন ওয়াসিমঃ শিক্ষকের কাছে মার খেয়ে যা করতাম


শিক্ষকের কাছে মার খেয়ে যা করতাম
 
আমাদের সময় এলাকায় কোনো নার্সারি বা কেজি স্কুল ছিল না একটা ছিল খানিকটা দূরে, মহিপালে স্বভাবতই আমরা সবাই দল বেঁধে পাশের পাড়ায় অবস্থিত প্রাইমারী স্কুলে যেতাম নাম কদমডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় এমনি দিনে সকালে মক্তব করে তারপর স্কুলে যেতাম আর গ্রীষ্মকালে যখন মর্নিং স্কুল হতো তখন মক্তবে যেতাম বিকেলে
 
আমাদের সময় ওই প্রাইমারী স্কুলে মাত্র দুজন শিক্ষক ছিলেন একজন মুনিরুদ্দিন আহমেদ, আমার জ্যাঠতুতো দাদা আরকেজন সোলেমান মিয়াঁ, আমার বড় বোনাই আমার জ্যাঠতুতো বড়দির স্বামী দুজন দুরকম স্বভাবের মানুষ ছিলেন দাদা ছিলেন ভীষণই গম্ভীর এবং অত্যন্ত সোফিস্টিকেটেড তাঁর সব কিছু গুছনো আর দুলাভাই ছিলেন ভীষণই মজার লোক প্রচণ্ড কৌতুকপ্রিয়
 
আমি যেহেতু বাড়ির ছেলে তাই আমার প্রতি দুজনেরই ভালোবাসার পাশাপাশি ছিল কড়া নজরদারি কঠোর শাসনবলতে গেলে চোখেচোখে রাখতেন আমাকে। স্কুলে কোনোরকমের দুষ্টুমি করলে শাসনের পাশাপাশি বাড়িতে রিপোর্ট হয়ে যেতো আর বাড়িতে কোনো দুষ্টুমি করলে তার জের আমাকে স্কুলে পোয়াতে হতো কিন্তু আমিও ছিলাম সেয়ানে সেয়ানে যেদিন দাদা স্কুলে আমাকে মারতেন বাড়ি এসে আমি দাদার বাগানের ডাল ভেঙ্গে দিতাম কখনও বাড়িতে না বলে গাছের আম পেড়ে খেয়েছি, দাদা জানতে পেরে বাড়িতে আমাকে কিছুই বলেননি কিন্তু স্কুলে শাস্তি দিয়েছেন
 
সবথেকে যেটা মজার ঘটনা, দুলাভাই মানে আমার বোনাই যেদিন যেদিন আমাকে পড়া না-পারার জন্য স্কুলে শাস্তি দিতেন বা কোনোরকমের দুষ্টুমির জন্য পেটাতেন, আমি বাড়ি এসে সোজা বোনাইর বাড়ি চলে যেতাম আর সুযোগ বুঝে ছোট ভাগ্নিকে ধরে মারতাম আর যখন ভাগ্নি কান্নাকাটি চিৎকার চেঁচামেচি করতো, “মামা আমাকে কেন মারছগোছের প্রশ্ন করতো আমি সপাটে জবাব দিতামতোমার আব্বা আমাকে আজকে স্কুলে মেরেছে, তাই!
 
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
০৪-০৫-২০২২
বাঁশকুড়ি, দঃ দিনাজপুর

No comments:

Post a Comment