আল্-‘উস্বাতুল ’আন্দালুসিয়্যাহ্
(স্পেনীয়
সংঘ)
আব্দুল মাতিন
ওয়াসিম
পরিচিতি
আল্-‘উস্বাতুল ’আন্দালুসিয়্যাহ্ (العصبة الأندلسية) একটি সাহিত্য
সংগঠন। ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরে ১৯৩৩-এর জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়, সে-দেশে বসবাসকারী আরবি কবিসাহত্যিকদের সম্মিলিত
উদ্যোগে। তবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন মাহ্জার (প্রবাসী) কবি মীশাল নু’মান মা’লূফ।
প্রতিষ্ঠা
এ সংগঠনটি প্রকৃত পক্ষে শুক্রুল্লাহ আল-জার্র (شكر الله الجر)-এর মস্তিষ্কপ্রসূত। তবে একে বাস্তব রূপ দান করেন লেবাননের অধিবাসী প্রবাসী
কবি মীশাল নু’মান
মা’লূফ (ميشال المعلوف)। আর তাঁর যথাযোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন সে-দেশের প্রবাসী কবি ও সাহিত্যিকগণ। এই সংগঠনের সাহিত্য পত্রিকাটি ছিল অত্যন্ত উন্নতমানের। আর এর সম্পাদক ছিলেন সাহিত্যিক হাবীব মাস্‘উদ ( حبيب مسعود)। আর সাওপাওলোতে সাহিত্যের যে আসর গুলি বসত, তাতে সভাপতিত্ব
করতেন শাফীক্ব আল্-মা’লূফ (شفيق المعلوف)।
উদ্দেশ্য
এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল- উপসাগরীয় অঞ্চলগুলিতে আরবি ভাষার হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনা (إعادة أمجاد الشعر العربي في ما وراء البحار)। আর এক্ষেত্রে সত্যিই অসামান্য অবদান রেখেছেন এই সংগঠনের
সদস্যগণ; বিশেষত- আশ্-শায়েরুল
ক্বারাবী (الشاعر القروي/ পল্লীকবি) রাশীদ সালীম আল্-খূরী
( رشيد سليم الخوري), ইল্ইয়াস ফার্হাত (إلياس فرحات), ফাওযী আল্-মা’লূফ (فوزي
المعلوف), ও শুক্রুল্লাহ আল-জির্র (شكر الله الجر)। তাঁদের কবিতা, প্রবন্ধ ও রচনায় এই সংগঠনের পত্রিকাটি সমৃদ্ধ হয়েছিল।
এছাড়া, এ সংগঠনের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য ছিল ব্রাজিলে বসবাসকারী
আরবি সাহিত্যিকদের একত্রিত করা ও তাঁদের মাঝে সম্প্রীতি গড়ে তোলা; যাতে সেখানে
সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সাহিত্যচর্চা
অব্যাহত থাকে। আর পাশ্চাত্য সাহিত্য ও শিল্প দ্বারা আরবি সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করা
সম্ভব্যপর হয়।
কীর্তি
উক্ত সংগঠনটির একটি সাহিত্য পত্রিকা ছিল, নাম মাজাল্লাতুল্ ‘উস্বাহ্ (مجلة
العصبة); যার সম্পাদক ছিলেন হাবীব মাস্‘ঊদ। পরবর্তীতে শাফীক্ব আল্-মা’লূফ। এর পাশাপাশি, ১৮৯৪ সালে আল্-ফাইহ্বা (الفيحاء) ছাড়াও এই সংগঠন কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছিল আরও চারটি সাহীফা (জার্নাল), যথা- ১৮৯৭-এ আর্-রাক্বীব (الرقيب), ১৮৯৮-এ আল্-বারাযীল (البرازيل), ১৮৯৯-এ আল্-মানাযীর (المناظر) এবং ১৯০০ সালে আস্-স্বাওয়াব (الصواب)।
বৈশিষ্ট
এই সংগঠনের সাহিত্যিকদের একটি বৈশিষ্ট এই যে, তাঁরা আল্-মুওয়াশ্শাহাত (الموشحات) দ্বারা ব্যাপক প্রভাবিত ছিলেন। তাঁরা প্রাচীন ও আধুনিক আরবি কবিতার মাঝে সেতুবন্ধনের কাজ
করেছিলেন। তাঁদের গদ্যেও
ছন্দের প্রবাহ লক্ষ করা যায়। আর তাঁদের
বিষয়বস্তু ছিল বিভিন্ন প্রকৃতির।
সদস্যগণ
দক্ষিণ আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি প্রবাস-সাহিত্যধারার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই সংগঠনের
সঙ্গে সে-দেশে বসবাসকারী বহু কবিসাহিত্যিক যুক্ত ছিলেন। নীচে তাঁদের কয়েকজনের নাম
উল্যেখ করা হল-
শুক্রুল্লাহ্ আল্-জির্র (شكر الله الجر), রাশীদ আল্-খূরী (رشيد الخوري), নাযীর যায়তূন (نظير زيتون), জাওরাজ আল্-মা’লূফ (جورج المعلوف), তাওফীক্ব ক্বুর্বান (توفيق قربان), ইস্কান্দার কির্বাজ ( إسكندر كرباج), ইল্ইয়াস ফারহাত (إلياس فرحات), হাবীব মাস্‘উদ (حبيب مسعود), আনীস আর্-রাসী (أنيس الراسي), জার্জিস কারাম (جرجس كرم), নাজীব ইয়া’ক্বূব (نجيب يعقوب), শাফীক্ব আল্-মা’লূফ (شفيق المعلوف), তাওফীক্ব যা‘উন (توفيق ضعون), ক্বায়সার আল্-খূরী (قيصر الخوري), নাস্বার সাম্আ’ন (نصر سمعان), ইউসুফ আস্আ’দ গানিম (يوسف أسعد غانم), ইউসুফ আল্-বায়ি’নী (يوسف البعيني), জাওরাজ হাসুন আল্-মা’লূফ (جورج حسون المعلوف) প্রমুখ।
দক্ষিণ আমেরিকায়ঃ একটি প্রবাসী আরবি সাহিত্য সংগঠন |
No comments:
Post a Comment