Monday 19 November 2018

ইবরাহীম আব্দুল কাদির আল-মাযিনী


ব্‌রাহীম আল্‌-মাযিনী
(১৮৮৯ ১৯৪৯ খ্রি)
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
 
পরিচিতি ও জন্মঃ
আল্‌-মাযিনী একজন অন্যতম মিসরীয় কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সমালোচক ও ঔপন্যাসিক ছিলেন। তৎকালীন সাহিত্য সাধনায় নিয়োজিত ব্যক্তিসমূহের মধ্যে একটি উজ্জ্বল নাম। বিখ্যাত দীওয়ান গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার। তাঁর নাম ইব্‌রাহীম। পিতার নাম মুহাম্মদপিতামহের নামআব্দুল কাদির১৮৮৯ সালে কায়রোয় তাঁর জন্ম। তাঁর পূর্বপুরুষরা আল্‌-মানূফাহ্‌ প্রদেশের কূম মাযিন গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। তাই তাঁকে আল্‌-মাযিনী বলা হয়।    
 
প্রতিপালনঃ
মাধ্যমিক স্তরের লেখাপড়া সম্পূর্ণ করে তিনি তাঁর এক আত্মীয়ের পরামর্শে চিকিৎসা শাস্ত্র অধ্যয়নে মনোনিবেশ করেন। সালাতুত্‌ তাশ্‌রীহ ()- প্রবেশ করা মাত্রই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি চিকিৎসা ছেড়ে আইন বিদ্যা অর্জনে মন স্থির করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে খরচ বেশি হওয়ায় অবশেষে তিনি সাধারণ শিক্ষা অর্জন করে শিক্ষকতার পেশাকে চয়ন করেন।
 
ব্যস্ততাঃ
১৯০৯ সালে তিনি শিক্ষকরূপে নিজ কর্ম জীবন শুরু করেন। কিছুদিন পর বাধ্য হয়ে তা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতার কাজ আরম্ভ করেন। প্রথমে তিনি জারীদাতুল্‌ আখ্‌বার পত্রিকায় আমীন আর্‌-রাফেয়ীর সঙ্গে কাজ করেছেন অতঃপর সাপ্তাহিক জারীদাতুস্‌ সিয়াসাহ্‌ এবংআব্দুল কাদির হাম্‌যাহ্‌র সঙ্গে জারীদাতুল্‌ বালাগে কাজ করেন। তিনি ইংরেজিতে বেশ দক্ষ ছিলেন। ইংরেজি হতে আরবীতে বেশ কিছু কবিতার অনুবাদ করেন। এছাড়া তিনি কায়রোর মাজ্‌মাউল্‌ লুগাতুল্‌ আরাবিয়্যাহ্‌ (আরবি ভাষা পর্ষদ) এবং মিশরের আল্‌-মাজ্‌মাউল ইল্‌মী আল্‌-‘আরাবী (আরবি সাহিত্য পর্ষদ)-এর সদস্য ছিলেন। ১৯৪৯ এর আগস্টে তাঁর মৃত্যু হয়।
 
তাঁর রচনা ও বিশেষত্বঃ
তাঁর অনুবাদ শৈলী অপূর্ব। তাঁর অনূদিত পদ্য ও গদ্য সম্পর্কে আক্কাদ বলেছেন, আমি যতগুলো অনুবাদ সাহিত্য অধ্যয়ন করেছি তার ভিত্তিতে, পদ্য ও গদ্য অনুবাদের ক্ষেত্রে আমার নজরে এমন কেউ নেই যে আল্‌-মাযিনীকে ছাপিয়ে যাবে। 
 
তিনি বিখ্যাত দীওয়ান গ্রুপের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্যতিনি কবিতাকে আল্‌ওযান (ছন্দ) ও আল্‌-কাওয়াফী (অন্ত্যমিল)-এর বন্ধন হতে মুক্ত করার কাজ করেন। আশ্‌-শেরুল্‌ মুর্‌সাল বা ছন্দমুক্ত কবিতার সফল যাত্রার সূচনায় তাঁর অবদান অসামান্য তিনি পাশ্চাত্য সাহিত্যের বহু ভাব ও উপজীব্য দ্বারা আরবী গদ্য সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেনবিদ্রূপ ও বিনোদন তাঁর রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য১৯১৭ সালে তাঁর দ্বিতীয় দীওয়ান প্রকাশের পর তিনি কবিতা লেখা বন্ধ করে দিয়ে গল্প, প্রতিবেদন ও প্রবন্ধ লেখা আরম্ভ করেন।   
 
রচনাসমূহঃ
তিনি একজন সৃজনশীল ব্যক্তি ছিলেনগদ্য ও পদ্য উভয় ক্ষেত্রেই সমান পারদর্শী ছিলেন। তাঁর বিখ্যাত ও মূল্যবান রচনা হল— () ইব্‌রাহীম আল্‌-কাতিব ও () ইব্‌রাহীম আস্‌-সানী (দুটি উপন্যাস), () আহাদীসুল্‌ মাযিনী (তাঁর প্রবন্ধ সংকলন), () হাসাদুল্‌ হাশীম (সমালোচনা বিষয়ক), () রিহ্‌লাতুল্‌ হিজায () দীওয়ানুল্‌ মাযিনী () খুইয়ূতুল্‌ আন্‌কাবূত () সুন্দূকুদ্‌ দুনিয়া (রাজনীতি ও সামাজিকতা প্রসঙ্গে), () মিনান্‌ নাফেজাহ্‌ (১০) কিসসাতু হায়াতিন্‌ (১১) আল্‌-কিতাবুল্‌ আব্‌ইয়াদ (১২) কাব্‌দুর্‌ রীহ (১৩) ‘আউদুন্‌ আলা বিদ্‌ইন্‌ (১৪) আল্‌-জাদীদু ফিল্‌ আদাবিল্‌ আরাবী (১৫) হাদীসুল্‌ ইজাআহ্‌। এছাড়া (১৬) আদ্‌-দীওয়ানু ফিল্‌ আদাবি ওয়ান্‌-নাক্‌দ, যেটি আক্কাদের সাথে যৌথভাবে ১৯২১ সালে প্রকাশ করেন, ব্যাপক প্রচার ও সাফল্য পেয়েছিল। এছাড়া তাঁর অনূদিত গল্প ও কবিতাগুলিরও একটি সংকলন রয়েছে।

No comments:

Post a Comment