Sunday 25 November 2018

আব্দুল মাতিন ওয়াসিমঃ শ্রাবণ, তোমাকে বলছি...


শ্রাবণ, তোমাকে বলছি... 
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম

শ্রাবণ, প্রতি রাতে ঘড়ির কাঁটাটা এগারোটায় পৌঁছোলে তুমি কি এখনো অনলাইন হও? তোমার হোয়াট্‌সঅ্যাপ্‌টা একবার চেক করো, আমি কোন ম্যাসেজ পাঠিয়েছি কি না? আমার ফেসবুক ওয়াল খুলে দেখো, কী পোস্ট করেছি? কোনো মেয়ের ছবিতে লাইক দিয়েছি নাকি? বা আমার ব্লগটা, কোনো কবিতা বা ছোটগল্প পোস্ট করেছি কি না?

বিশ্বাস করো, আমি রোজ নিয়ম করে অনলাইন হই। হোয়াট্‌সঅ্যাপ্‌-ফেসবুক সব জায়গায় তোমাকে খুঁজি। ফেসবুকে তোমার নামে যতগুলো প্রোফাইল আছে প্রায় সব ক’টায় ঢুঁ মেরে দেখি। কিন্তু, তোমার কোনো হদিশ পাই না। তুমি যে শুধু আমায় ব্লক করেছ তা নয়, নিজের একাউন্টটিও ডিলিট করেছ, অনেক পরে তা জানতে পেরেছি...। 

এত কিছুর পরেও, যে যাই বলুক, আমি কিন্তু তোমাকে এখনো ভালোবাসি; একেবারে অন্তরের অন্তঃকোণ থেকে। তুমি আজও বেঁচে আছো আমার স্বপ্নে, আমার কল্পনায়। আছো জড়িয়ে আমার নিঃশ্বাসে-বিশ্বাসে। থাকবে অনন্তকাল; যতদিন বেঁচে থাকবে বর্ণ, গন্ধ ও বৃষ্টি। আকাশ-বাতাস মুখোরিত হবে যতদিন পাখীর গানে, নদীর কলতানে ও ডুডুমার ডাকে। যতদিন বাঙালীর কণ্ঠে গীত হবে 'কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই'। যতদিন ভোরের তবলায় বেজে উঠবে 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে'। যতদিন কোনো পাড়াগাঁয়ের কলেজ-পড়ুয়ার কল্পনায় কোনো ইরানি বালিকা শুকনো পাতার নূপুর পায়ে নাচবে ঘূর্ণিবায়। যতদিন বেদে-তাঁতির মেয়ে জ্যোৎস্নারা কাঁখে কলস নিয়ে জলতরঙ্গে ঝিলিমিলি ঢেউ তুলে হেঁটে পৌঁছবে হৃদয়-প্রাসাদে...। 

মাঝে মাঝে মনে হয়, জীবনের এই স্রোতে, কোথাও কোনো দিন কোনো পথের বাঁকে দেখা হবে আমাদের। দেখা হবে হয়তো কোয়েস্‌টের বাইরের সেই বসার সিঁড়িতে, নয়তো সেভেন পয়েন্টে আরসালানের বাইরের ফাঁকা জায়গাটায়। স্বামী-সন্তানের সাথে তুমি দাঁড়িয়ে সেখানে। স্বামী যেই না মিষ্টি আনতে যাবে মিঠাইয়ে না হয় যুগলসে, আগের মতোই পাখীর নীড়ের মতো চোখ তুলে অভিমানী কণ্ঠে আমায় জিজ্ঞেস করবে- এতদিন কোথায় ছিলে...!  

1 comment: