৬১) সূরাতু আস়্-স়াফ়্ফ় (সারি)
আল্লাহ্র নামে (আরম্ভ করছি), তিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
যা কিছু নভোমণ্ডল আছে এবং যা কিছু ভূমণ্ডলে আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ
হে বিশ্বাসী
লোকেরা! যে কাজগুলো তোমরা নিজেরা করো না সে-সব কাজের কথা তোমরা কেন বলো?
كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ أَن تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ
যে কাজগুলো করো না, তার সম্বন্ধে তোমাদের কথা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنيَانٌ مَّرْصُوصٌ
যারা আল্লাহ্র পথে শীশা-গোলানো প্রাচীরের
মতো সারিবদ্ধ ভাবে লড়াই ও সংগ্রাম করে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাদেরকে
ভালোবাসেন।
وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ لِمَ تُؤْذُونَنِي وَقَد تَّعْلَمُونَ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ فَلَمَّا زَاغُوا أَزَاغَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ
(স্মরণ কর,) যখন মূসা (আঃ)
তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! তোমরা তো জানো যে,
আমি তোমাদের
কাছে আল্লাহর রাসূল (অর্থাৎ বার্তাবাহক) রূপে
এসেছি, তাহলে তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দিচ্ছ? অতঃপর তারা যখন (তাঁর কথা
অমান্য করে, আল্লাহ্র দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে) বক্র ও কুটিল পথ অবলম্বন করলো, তখন আল্লাহ
তাদের অন্তরকে আরও বক্র করে
দিলেন। আর আল্লাহ অবাধ্য ও পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
وَإِذْ قَالَ
عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًا
لِّمَا بَيْنَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِن بَعْدِي
اسْمُهُ أَحْمَدُ فَلَمَّا جَاءهُم بِالْبَيِّنَاتِ قَالُوا هَذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ
(আরও স্মরণ কর,) যখন মরিয়ম-তনয়
ঈসা (আঃ) বলেছিলেন, হে ইসরাইলের বংশধরেরা! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল,
আমার পূর্ববর্তী (নবীর নিয়ে আসা) তাওরাতের
সত্যায়নকারী এবং এমন একজন রাসূলের
সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে পৃথিবীতে আসবেন। তাঁর নাম হবে আহ্মাদ। কিন্তু তিনি (আহ্মাদ
সাঃ) যখন স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে তাদের কাছে পৌঁছলেন, তারা বলল— এ তো প্রকাশ্য যাদু।
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى
اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعَى إِلَى الْإِسْلَامِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ
الظَّالِمِينَ
যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও
আল্লাহর সম্পর্কে
মিথ্যা কথা বলে; তার চাইতে অধিক জালিম ও অপরাধী আর কেউ হতে পারে না। আর আল্লাহ জালিম (অর্থাৎ পৌত্তলিক, অবাধ্য ও অবিশ্বাসী) সম্প্রদায়কে পথ
প্রদর্শন করেন না।
يُرِيدُونَ لِيُطْفِؤُوا نُورَ اللَّهِ
بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর
আলো (অর্থাৎ ইসলাম, আল্-কুর্আন ও নবী
মুহাম্মদ সাঃ-কে) নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেনই; যদিও অবিশ্বাসীরা তা অপছন্দ করে।
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى
وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ
তিনিই তাঁর রাসূলকে (অর্থাৎ মুহাম্মদ সাঃ-কে) পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে এই সত্যধর্মটিকে তিনি অন্যান্য সকল ধর্মের উপর প্রবল ও বিজয়ী করে দেন; যদিও মুশরিকরা (অর্থাৎ পৌত্তলিক ও অবিশ্বাসীরা) তা অপছন্দ করে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا هَلْ
أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
হে ঈমানদার
লোকেরা!
আমি কি তোমাদেরকে
এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দেবো, যা তোমাদেরকে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে?
تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ
فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ
تَعْلَمُونَ
(সেই লাভদায়ক
বাণিজ্যটি হল এই যে,)
তোমরা আল্লাহ ও
তাঁর রাসূল (মুহাম্মদ সাঃ)-এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের
ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে জেহাদ ও সংগ্রাম করবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম ও কল্যাণকর।
যদি তোমরা তা বুঝতে!
يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ
جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ
ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
(যদি তোমরা তা
করো, তাহলে) তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন। অতঃপর তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নদ-নদী প্রবাহিত এবং (তোমাদেরকে) ‘আদ্ন (অর্থাৎ চিরস্থায়ী) স্বর্গের উত্তম বাসগৃহে (রাখবেন)। এটাই প্রকৃত ও মহা সাফল্য।
وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِّنَ
اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
এছাড়া তোমরা
পছন্দ করো এমন আরও একটি অনুগ্রহ (তিনি তোমাদেরকে) দান করবেন, আর তা হল— (তোমাদের জন্য
তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে) আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন
বিজয়। অতএব তুমি (হে মুহাম্মদ সাঃ)
বিশ্বাসীদেরকে এই সুসংবাদটি দিয়ে দাও।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُونوا أَنصَارَ اللَّهِ كَمَا
قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّينَ مَنْ أَنصَارِي إِلَى اللَّهِ قَالَ
الْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ اللَّهِ فَآَمَنَت طَّائِفَةٌ مِّن بَنِي إِسْرَائِيلَ
وَكَفَرَت طَّائِفَةٌ فَأَيَّدْنَا الَّذِينَ آَمَنُوا عَلَى عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوا
ظَاهِرِينَ
হে বিশ্বাসী লোকেরা, তোমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী হয়ে যাও; যেমন মরিয়ম-পুত্র ঈসা (আঃ) নিজ শিষ্যদেরকে বলেছিলেন, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? শিষ্যরা বলেছিল, আমরা আল্লাহর পথে আপনার সাহায্যকারী। অতঃপর ইসরাইলের বংশধরদের মধ্য থেকে একদল ঈমান আনলো এবং একদল অস্বীকার করলো। ফলে যারা ঈমান নিয়ে আসলো, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তিশালী করে তুললাম, আর তাই তারা বিজয়ী হল।
ভাবানুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
اللهم اغفر له وارحمه.....
ReplyDelete
ReplyDeleteاللهم أغفر له وأرحمه وأدخله جنة بلا حساب..اللهم آمين يا رب العالمين