মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ধর্মীয় সংস্কারঃ সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লহর প্রতিনিধি হিসেবে আগমন করেন। তিনি এক আল্লাহর বাণী প্রচার করেন তিনি আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান জানান, তিনি ঘোষণা করেন, “আল্লাহর ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।”
ইসলাম আগমনের পূর্বে আরববাসী ছিল পৌত্তলিকতায় আকন্ঠ নিমজ্জিত। তারা পবিত্র কাবাগৃহে ৩৬০ টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। তারা বিভিন্ন জড় পদার্থ ও প্রাকৃতিক শক্তিকে উপাসনা করত। মুহাম্মদ (সাঃ) অন্ধকারে নিমজ্জিত সমাজে আল্লাহর একত্ববাদের কথা শোনান। তাদের মাঝে তাওহীদের (একেশ্বরবাদ) বীজ বপন করেন। ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করেন।
আল্লাহ সকল ক্ষমতার অধিকারী- তিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রক্ষাকর্তা, রিযিকদাতা, আইনদাতা এই সার্বভৌমত্বের বিশ্বাস মহানবী (সাঃ) প্রচার করেন। তিনি ঘোষণা করেন, “সার্বভৌমত্বের অধিকার একমাত্র আল্লাহর।” তিনি আরো বলেন, “আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই।”
ইসলাম পূর্ব যুগের আরবগণের মৃত্যুর পরবর্তী জীবন, পুনরুত্থান দিবস, আখিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। মহানবী (সাঃ) তাদের মধ্যে আল্লাহর বাণী প্রচার করলেন। তিনি বললেন, ‘এই দুনিয়ার জীবনই শেষ নয়। এই পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। মৃত্যুর পর সকলের কৃতকর্মের হিসাব নেওয়া হবে’।
মহানবী (সাঃ) পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের উপর ঈমান আনার আহবান জানান। তারা সকলেই এক আল্লাহর বাণী প্রচার করে গেছেন। তাই আল্লাহর উপর ঈমান আনতে হলে পূর্ববর্তী নবী-রাসূলের প্রতি ঈমান আনা আবশ্যক।
মহানবী (সাঃ) মানব জাতিকে এক আল্লাহর ইবাদতে নিযুক্ত হতে আহবান জানালেন। তিনি প্রচার করলেন যে, মহান আল্লাহ একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্যই মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। জড় উপাসনা, পৌত্তলিকতা ও মিথ্যা ধর্ম বিশ্বাস সমাজ হতে তিরোহিত করে তিনি এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান জানান।
মহানবী (সাঃ) ইসলামী শরীয়তের ৫ টি প্রধান স্তম্ভ- ঈমান, সালাত, সাওম, জজ্জ্ব ও যাকাত সম্পর্কে শিক্ষা দেন। শরীয়তের মূলনীতিকে তিনি বিশ্ববাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দেন। যা বিশ্ববাসীকে আলোর পথে চলতে সাহায্য করে।
মহানবী (সাঃ) মনাবজাতির সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য কুরআন ও হাদীসকে রেখে গেছেন। কুরআন আল্লাহর বাণী। ওপর দিকে মহানবী (সাঃ) এর কথা, দৃষ্টান্ত ও মৌন সম্মতি নিয়ে হাদীস রচিত হয়েছে। এ দুটি গ্রন্থ মাওনবজাতির ইহকালীন জীবনের পথ নির্দেশক ও পরলৌকিক মুক্তির পাথেয়। যা মানব জাতিকে যুগে যুগে সঠিক পথে পরিচালিত করে চলেছে।
মহানবী (সাঃ) ইসলামকে মানব জাতির পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। এটিই হচ্ছে মানবজাতির একমাত্র মুক্তির সনদ। ব্যক্তি জীবন, সামাজিক জীবন, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবন, অর্থনৈতিক, নৈতিক ও দর্শন সব কিছুর পথ নির্দেশের এক চূড়ান্ত দলিল হচ্ছে ইসলাম। যা মহানবী (সাঃ) এর মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করেছে।
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
No comments:
Post a Comment