৭৭) সূরাতু আল্-মুর্সালাত (প্রেরিত বায়ু)
পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু আল্লাহ্র নামে (আরম্ভ করছি)।
وَالْمُرْسَلَاتِ عُرْفًا
কল্যাণের
জন্য প্রেরিত বায়ুর (অথবা মানুষের কল্যাণার্থে একের পর এক প্রেরিত নবী বা
ফেরেশতাদের) শপথ,
فَالْعَاصِفَاتِ عَصْفًا
প্রবল বেগে
প্রবাহিত ঝটিকার শপথ,
وَالنَّاشِرَاتِ نَشْرًا
মেঘ বহনকারী
ও বিস্তৃতকারী বায়ুর শপথ,
فَالْفَارِقَاتِ فَرْقًا
মেঘপুঞ্জ
বিতরণকারী বায়ুর (বা ভালোমন্দ ও আলো-অন্ধকারের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণকারী
আয়াতসমূহের) শপথ,
فَالْمُلْقِيَاتِ ذِكْرًا
ওহী (অর্থাৎ আদেশ
ও প্রত্যাদেশ) নিয়ে অবতরণকারী ফেরেশতাদের শপথ
عُذْرًا أَوْ نُذْرًا
(যারা ওহি
নিয়ে অবতরণ করে) ওজর-আপত্তির অবকাশ না রাখার জন্য অথবা সতর্ক করার জন্য।
إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَوَاقِعٌ
তোমাদেরকে
যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
فَإِذَا النُّجُومُ طُمِسَتْ
অতঃপর যখন
নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে,
وَإِذَا السَّمَاء فُرِجَتْ
যখন আকাশ
ফেটে চৌচির হয়ে যাবে,
وَإِذَا الْجِبَالُ نُسِفَتْ
যখন
পর্বতমালাকে ধুনিত ও চূর্ণবিচূর্ণ করা হবে
وَإِذَا الرُّسُلُ أُقِّتَتْ
যখন রাসূলদেরকে
নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত করা হবে,
لِأَيِّ يَوْمٍ أُجِّلَتْ
কোন্ দিনের
জন্য এসব বিষয় স্থগিত রাখা হয়েছে?
لِيَوْمِ الْفَصْلِ
(এসবই স্থগিত
রাখা হচ্ছে শুধুমাত্র) বিচার দিবসের জন্য (যেদিন কে স্বর্গবাসী কে নরকবাসী স্পষ্ট করে
দেওয়া হবে)।
وَمَا أَدْرَاكَ مَا يَوْمُ الْفَصْلِ
চূড়ান্ত
বিচার দিবস সম্বন্ধে তুমি কী জানো?
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয়
ও পুনরুজ্জীবন সবন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
أَلَمْ نُهْلِكِ الْأَوَّلِينَ
আমি কি পূর্ববর্তীদেরকে
ধ্বংস করিনি?
ثُمَّ نُتْبِعُهُمُ الْآخِرِينَ
অতঃপর আমি
পরবর্তী লোকেদেরকে তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করবো।
كَذَلِكَ نَفْعَلُ بِالْمُجْرِمِينَ
অপরাধী,
অবিশ্বাসী ও পৌত্তলিকদের সাথে আমি এরূপ আচরণই করি।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয়
ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
أَلَمْ نَخْلُقكُّم مِّن مَّاء مَّهِينٍ
আমি কি
তোমাদেরকে তুচ্ছ জল থেকে সৃষ্টি করিনি?
فَجَعَلْنَاهُ
فِي قَرَارٍ مَّكِينٍ
অতঃপর আমি ওই জলবিন্দুকে রেখেছি
এক সংরক্ষিত আধারে (অর্থাৎ গর্ভে),
إِلَى قَدَرٍ
مَّعْلُومٍ
নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত,
فَقَدَرْنَا
فَنِعْمَ الْقَادِرُونَ
অতঃপর আমি পরিমিত আকারে সৃষ্টি ও গঠন করেছি, আর আমি কত নিপুণ স্রষ্টা ও
নিরূপণকারী?
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
أَلَمْ نَجْعَلِ
الْأَرْضَ كِفَاتًا
আমি কি পৃথিবীকে ধারণকারী রূপে সৃষ্টি করিনি,
أَحْيَاء وَأَمْوَاتًا
(যা) জীবিত ও মৃতদেরকে (ধারণ করে)?
وَجَعَلْنَا
فِيهَا رَوَاسِيَ شَامِخَاتٍ وَأَسْقَيْنَاكُم مَّاء فُرَاتًا
আমি তাতে স্থাপন করেছি মজবুত ও সুউচ্চ
পর্বতমালা এবং তোমাদেরকে তৃষ্ণা নিবারণকারী সুপেয় জল পান করিয়েছি।
وَيْلٌ يوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
انطَلِقُوا
إِلَى مَا كُنتُم بِهِ تُكَذِّبُونَ
(সেদিন অবিশ্বাসীদেরকে বলা হবে,) যে জিনিসকে তোমরা মিথ্যা মনে
করতে তারই দিকে চলো।
انطَلِقُوا
إِلَى ظِلٍّ ذِي ثَلَاثِ شُعَبٍ
তোমরা চলো (ঊর্ধ্বগামী নরকাগ্নির) তিন কুণ্ডলীবিশিষ্ট ছায়ার দিকে,
لَا ظَلِيلٍ
وَلَا يُغْنِي مِنَ اللَّهَبِ
যে ছায়া না তো সুনিবিড় না শীতল, আর না অগ্নিশিখা থেকে রক্ষা করবে।
إِنَّهَا تَرْمِي
بِشَرَرٍ كَالْقَصْرِ
বরং তা অট্টালিকা সদৃশ বৃহৎ স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করবে।
كَأَنَّهُ
جِمَالَتٌ صُفْرٌ
দেখে মনে হবে হলুদ বর্ণের উট।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
هَذَا يَوْمُ
لَا يَنطِقُونَ
আর তা এমনই একটা দিন যে, সেদিন কেউ কিছু বলতে পারবে
না।
وَلَا يُؤْذَنُ
لَهُمْ فَيَعْتَذِرُونَ
(সেদিন) কাউকেই অনুশোচনা বা অজুহাত প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হবে
না।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
هَذَا يَوْمُ
الْفَصْلِ جَمَعْنَاكُمْ وَالْأَوَّلِينَ
আর তা হল চূড়ান্ত বিচারের দিন, আমি (সেদিন)
তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে একত্রিত করবো।
فَإِن كَانَ
لَكُمْ كَيْدٌ فَكِيدُونِ
অতএব তোমাদের কাছে যদি কোনো
অপকৌশল থাকে তা আমার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করো।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
إِنَّ الْمُتَّقِينَ
فِي ظِلَالٍ وَعُيُونٍ
(সেদিন) আল্লাহ্ভীরু ও সংযমশীল লোকেরা অবশ্যই নিবিড় ছায়া ও
প্রস্রবণসমূহের মাঝে অবস্থান করবে।
وَفَوَاكِهَ
مِمَّا يَشْتَهُونَ
তারা (সেখানে) যে ফলমূলই কামনা করবে পাবে।
كُلُوا وَاشْرَبُوا
هَنِيئًا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
(এবং তাদেরকে বলা হবে,) তোমরা (পৃথিবীতে) যে সব সৎকর্ম করতে তার
বিনিময়ে তৃপ্তি সহকারে পানাহার করো।
إِنَّا كَذَلِكَ
نَجْزِي الْمُحْسِنينَ
এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণ লোকেদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
كُلُوا وَتَمَتَّعُوا
قَلِيلًا إِنَّكُم مُّجْرِمُونَ
(অতএব হে অসৎ ও অবিশ্বাসী লোকেরা) তোমরা
কিছুদিন (এই পৃথিবীতে) পানাহার ও ভোগবিলাস করে নাও; তোমরা তো অপরাধী।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ
لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয় ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ
হবে।
وَإِذَا قِيلَ
لَهُمُ ارْكَعُوا لَا يَرْكَعُونَ
(কেননা) যখন তাদেরকে বলা হয়, রুকু’ করো বা নত হও (অর্থাৎ সালাত আদায় করো), তারা নত হয় না বা সালাত আদায় করে না।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন (প্রলয়
ও পুনরুজ্জীবন সম্বন্ধে) মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
فَبِأَيِّ حَدِيثٍ بَعْدَهُ يُؤْمِنُونَ
তাহলে, তারা এর পরে (অর্থাৎ আল্-কুর্আনের পরিবর্তে) আর কোন্ কথায় বিশ্বাস স্থাপন করবে?
ভাবানুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
No comments:
Post a Comment