Monday 20 November 2017

খালীল মুতরানঃ সন্ধ্যাবেলায়

সন্ধ্যাবেলায়  

মূল- খালীল মুত্‌রান, লেবানন

অনুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম

 

স্পর্শ করেছে আমায় এক যাতনা।               
ভেবেছিলাম, এতেই হয়তো
লাভ করবে আরোগ্য
আমার প্রেম-দাবানল;  
কিন্ত তা হয়নি; তীব্রতর হয়েছে
অন্তঃক্ষরণ।  
ওরা দু’জনেই দুর্বল! তা সত্ত্বেও-                             
ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে আমাকে;                                     
আর দুর্বলের কর্তৃত্ব বরণ
ভীষণই পীড়াদায়ক, সবাই তা জানে ! 
তাছাড়া, বাসনা
বিগলিত করেছে হৃদয়কে                           
ঔষধ করেছে জীর্ণ শরীরকে। 
আর এদু’য়ের মাঝে প্রাণ পাখীটি  
ভিতর-বাহির করে চলেছে
নিঃশ্বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে । 
আর প্রদীপতুল্য মেধা শক্তি 
ঢেকে যাচ্ছে দুর্বলতার অমোঘ মেঘে। 
দেহ, মন, এমনকি নিঃশ্বাসেও 
এটুকুই আজ অবশিষ্ট রেখেছো, তুমি! 
তোমাতেই বিলীন করেছি দু-দু’টি জীবন,
তাই আজ কেঁদে বেড়াই সারাক্ষণ,
কিন্তু তুমি সুবিচার করোনি!  
বিলীন হয়েছে আমার যৌবন,                                             
অমর-লেখনী শক্তিও;                                                       
তুমি যে তাতেই হয়েছ মৃত্যুঞ্জয়ী। 
মূর্খের মতো সুখ ভোগ করতে পারিনি                                 
পারিনি জ্ঞানীর মতো মূল্যায়ন করতে
নিজ জীবনের   
তুমি উজ্জ্বল তারকা, তুমি পথ দেখাও –                               
ভ্রষ্টতার আকাশের ও কপটতার পৃথিবীর।                   
তুমি যে মরীচিকা;  মেটাও তৃষ্ণা                                         
কেবল ধ্বংসের আর মৃত্যুর।                                               
হে পুষ্প, তোমার সুরভী  
সজীব করে, মনে প্রেম জাগায়; 
আবার ধ্বংস করে দেয়  নির্মমভাবে
প্রেমিক-মনকে।              
না, তোমায় দোষ দেব না; ভুল তো আমারই-             
প্রেমে কি কখনও সুখ পাওয়া যায়!                          
কখনই না; প্রেম যে সদাই
একটি বিপদ, প্রীতিকর!                 
আর এ বিপদ ধার্য
সকল সৃষ্টির তরে ।                                   
পথ হারিয়ে যদি দেখা পাই
আমার সেই তারকার                                
ছুতে পাই তার ঔজ্জ্বল্যকে
তা-ই হবে আমার পথপ্রাপ্তি।           
মরীচিকার এক বিন্দু  জলে
যদি তৃষ্ণা মেটে আমার;                
কি উৎকৃষ্ট সেই জল, সে-ই তো আরোগ্য!                            
সেই কাননের বিচ্ছুরিত সৌরভ-ঘ্রাণে                        
কাটিয়েছি যে জীবন, উত্তম সে জীবন।                                  
এক অচেনা জায়গায়  বাস করেছি দীর্ঘদিন                             
আরোগ্য লাভের আশায়
পাড়াপড়শির কথা শুনে।               
জীর্ণদেহটি, সেখানকার কোমল বাতাসে
সজীব হয়েছিল কিঞ্চিৎ;                
কিন্তু অন্তঃক্ষরণ বিন্দুমাত্র কমেনি।                           
সেখানকার মনোরম দৃশ্যেও
আটকা পড়েনি আমার মন;
মন যে বিরহে নিয়ন্ত্রণ হারায়, হয়তো তা-ই।                           
ব্যর্থ হয়েছে আমার দেশ ভ্রমণ                                            
আর আরোগ্যের আশায় নির্বাসন                                          
বর্ধিত করেছে মনের দহনকে।        
আমার ভালোবাসায়, আমার হতাশায়,                                   
আমি যে নিঃসঙ্গ, আমার দুঃখেও।                                        
সমুদ্রের নিকট অভিযোগ করি অস্থির চিত্তের              
আর তার উত্তর দেয় ভারী সমুদ্র-তুফান;                                 
এক শক্ত পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ।                                       
হায়, আমার হৃদয় যদি হতো
সেই পাথরের ন্যায়!                      
আছড়ে পড়ে ঢেউগুলি তার উপর
আমার দুঃখের ন্যায়,         
তবে সে বিক্ষিপ্ত করে দেয়  উত্তাল তরঙ্গগুলিকে                   
যেমনটা করেছে জীর্ণতা আমার দেহকে।
আর সন্ধ্যাবেলায় সমুদ্র-সংকীর্ণতা
এক করে দেয় সমুদ্রতীরকে ও আমার ভারাক্রান্ত মনকে।                      
অন্ধকার নেমে আসে ধরণীর বুকে;                          
হৃদয়ের মেঘ দৃষ্টিকে আচ্ছন্ন করেছে যেন।                
দিগন্ত ঢেকে গেছে অন্ধকারে                                             
আর আমি অদ্ভুতভাবে চেয়ে আছি বিভীষিকা পাণে।               
এই অস্তমিত সূর্য বয়ে এনেছে বেদনা                                  
প্রেমিকের তরে আর জ্ঞানীর তরে শিক্ষা;                              
না, আলোর অন্ত্যেষ্টিতে ঘোষিত হয়েছে                              
দিনের অবসান ও সূর্যের পরাজয়?                                        
না, বিশ্বাসের গায়ে আঘাত হেনেছে আর                              
উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে অন্ধকার-আবরণে সন্দেহের?                
নাকি মিটিয়ে দিয়েছে অস্তিত্বকে আর                                  
ধ্বংস করে দিয়েছে চিহ্নগুলিকে?                                      
আর সেক্ষেত্রে সূর্যের প্রত্যাবর্তন হবে                                  
পুনর্জন্ম বা নবজন্ম।                                                           
দিনান্তে তোমাকে স্মরণ করেছি,                                         
মন তখন টলমল আশা-হতাশার সাগরে;                               
আমার আহত হৃদয় নিজ চোখে                                          
রক্তিম মেঘের ন্যায় রঙিন।                                     
তাই আজ নির্গত হচ্ছে অশ্রু                                   
গায়ে মেখে অস্তমিত সূর্যের গোধূলি আলো;                         
দিগন্তে কৃষ্ণ মেঘপুঞ্জের উপর                                            
ঝরে পড়ছে সোনালী সূর্যরশ্মি।                                            
অবশেষে দুখণ্ড মেঘের মধ্য দিয়ে               
ঝরে পড়ল সেই রক্তিম অশ্রুবিন্দুটি।                                     
যেন সেটি ছিল প্রকৃতির অন্তিম অশ্রুবিন্দু                               
সাঙ্গ করে আমার অশ্রুজলের শেষাংশকে।                             
দেখলাম আমার সময় শেষ; আরও দেখলাম, 
প্রকৃতির সান্ধ্য-দর্পণে নিজ জীবনসন্ধ্যার প্রতিচ্ছবি।    
 

 

কবি পরিচিতি

খালীল মুত্রান (১৮৭২-১৯৪৯) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ১লা জুলাই লেবাননের বালবাক শহরে জন্ম গ্রহণ করেন স্বনামধন্য কবিসাহিত্যিক খলীল মুতরান। পিতা আব্দুল মুতরান ছিলেন খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী এবং গন্যমান্য ব্যবসায়ী। যাহ্‌লা শহরের আল-কুল্লিয়াতুশ শারক্বিয়াহ (ওরিয়েন্টাল কলেজ) নামক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষার্জনের পর বেইরুতের একটি বিশপ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে আরবী ভাষার পাশাপাশি ফরাসীতেও যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। এখানে অধ্যায়নবস্থাতেই তার কাব্য প্রতিভার স্ফুরন ঘটে। যার ফল স্বরূপ স্বদেশবাসীর উপর উসমানী শাসকদের অত্যাচারের প্রতিবাদে মা’রাকাতু আইয়ানা (আইয়ানা সংঘর্ষ) শীর্ষক কবিতা রচনা করলে তা শাসক দলের কুনজরে পড়ে। সরকার তাকে বিদ্রোহী, অস্থিরতা সৃষ্টিকারী রূপে চিহ্নিত করে।

সরকারী গোয়েন্দাদের কুদৃষ্টি এবং আক্রম থেকে আত্মরক্ষার তাগিদে ১৮৯০ সালে তিনি প্যারিস যাত্রা করেন। সেখানে তিনি ফরাসী সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসেন। এখানেও একটি তুর্কী সরকার বিরোধী সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে তুর্কী সরকারের দূতাবাস তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। ফলে প্যারিস ত্যাগ করে লাতিন আমেরিকা যাবার মনস্থ করেও পরে ১৮৯২ সালে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া অভিমুখে যাত্রা করেন।

সাংবাদিকতাঃ মিশরে পৌঁছেই সেখানকার দৈনিক ‘আল-আহরাম’ পত্রিকার সম্পাদক সেলিম তাকলার মৃত্যুতে একটি শোকগাথা রচনা করলে তা তার ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।। তিনি ১৮৯৩ সালে কবিকে উক্ত পত্রিকার সাংবাদিক নিযুক্ত করেন। এর পাশাপাশি তিনি আল-লিওয়া ও আল-মুয়াইয়িদ পত্রিকাতেও লেখালেখি করেছেন।

সম্পাদনাঃ আল্‌-আহরামে সাংবাদিকতার কিছুকাল পর সম্পাদক পদে উন্নীত হন। এছাড়া ১৯০০ সালে তিনি নিজে একটি পাক্ষিক প্রকাশ করেন আল-মাজাল্লাতুল মিসরিয়া নামে। ১৯০২ সালে শায়খ ইউসুফের সঙ্গে মিলিত হয়ে এটিকে দৈনিক আল-জাওয়ায়িবুল মিসরিয়াতে রূপান্তরিত করেন।

এছাড়াও ১৯১২ সালে কৃষিসংঘের সহকারী সচিব নিযুক্ত হন। মাঝে কিছুদিন ব্যবাসায়ে মনোনিবেশ করেন। আবার ১৯৩২ সালে শাওকীর মৃত্যুর পর অ্যাপোলোর সভাপতি নিযুক্ত হন। ১৯৩৫ সালে জাতীয় নাট্যদলের সভাপতি হন।

স্বভাব কবি মুতরান বহু সাহিত্যি সেবার পর বাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪৯ সালের ১লা জুলাই ৭৭ বছর বয়সে কায়রোতে মৃত্যু বরন করেন।

তিনি ছিলেন সহজাত কবি প্রতিভার অধিকারী। তার কবিতায় ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয় ঘটে। তার অনুভূতি বোধ ছিল সূক্ষ্ম, প্রখর বিশ্লষণ ক্ষমতা তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট। অত্যন্ত স্বচ্ছ কাব্যশৈলীর অধিকারী ছিলেন। তার কোনো কবিতাতে বিষয়বস্তু বিক্ষিপ্তভাবে আলোচিত হয়নি। পাশ্চাত্য তথা ফরাসী কবিদের সাহচর্যে তিনি ফরাসী রোমান্টিকতায় প্রভাবিত হন, যা তার বিভিন্ন প্রেম মূলক কবিতায় পরিস্ফুটিত হয়। তিনি নিজেই বলেন- আমার কবিতার তিন চতুর্থাংশই হল প্রেমের কবিতাতিনিই সর্বপ্রথম কাহিনীনির্ভর কবিতা (আশ-শি’রুল ক্বাসাসি)-র প্রবর্তন করেন।

তার অসংখ্য সাহিত্যকীর্তি আরবী সাহিত্য ভাণ্ডারের উজ্জ্বল রত্ন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- দীওয়ানুল খলীল (চার খণ্ডে সমাপ্ত তার কাব্য সংকলন) আল-মুজায ফি ‘ইল্মিল ইক্বতিস্বাদ (অর্থনীতিঃ সংক্ষিপ্ত আলোচনা, ফরি থেকে আরবিতে অনুদিত হাফিয ইবরাহিমের সঙ্গে যুগ্মভাবে) মিরআতুল আইয়াম ফি মুলাখখাসিত তারিখিল ‘আম (কালদর্পণঃ ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত বিবরণী)ইলাশ-শাবাব (যুবকদের প্রতি, উপদেশমূলক কাব্যসংকলন)শেকস্‌পীয়রের বিখ্যাত নাটক যথাওথেলো, মার্চেন্ট অব ভস, ম্যাকবেথ, হ্যামলেট ইত্যাদি-র আরবী অনুবাদ করেন 

তাঁর এই বিপুল সাহিত্য সেবার জন্য ১৯৪৭ সালে মিসরের অপেরা হাউসে তাঁর সম্মানার্থে এক সাহিত্য সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে তাকে শায়েরুল-ক্বুত্বরাইন (দুই ভূখণ্ডের কবি) ও শায়েরুল আক্বত্বারিল ‘আরাবিয়াহ (আরব ভূখণ্ডের কবি) উপাধিতে ভূষিত করা হয়।     

কবি জীবনসন্ধায় শারীরিক জীর্ণতা ও মানষিক অবসাদ হতে আরোগ্য লাভের আশায় আলেকজান্দ্রিয়ার এক সৈকতে স্বাস্থ্য উদ্ধারে গিয়েছিলেন। সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়ে, বিকেলের পড়ন্ত রৌদ্রে গোধূলি আলোর মধ্য দিয়ে সূর্যের অস্তমিত হওয়ার দৃশ্য এবং পৃথিবী-বুকে নেমে আসা আলোআঁধারির খেলা দেখে তাঁর মনের ক্যানভাসে যে অনুভূতিগুলি ভেসে উঠেছিল এই কবিতায় সেগুলিকে  শব্দের আবরণে অমর করেছেন 

[ প্রকাশিত- ঋঌ, ১ম বর্ষ, ২য় সংখ্যা, ২০১৫ ISSN NO : 2394 – 8213

 

 

المساء

خليل مطران - لبنان  

داءٌ ألَمَّ فَخِلْتُ فِيهِ شَفَائِي                 مِنْ صَبْوَتِي فَتَضَاعَفَتْ بُرَحَائِي

يَا لَلضَّعِيفَيْنِ اسْتَبَدَّا بِي وَمَا              فِي الظُّلْمِ مِثْلُ تَحَكُّمِ الضُّعَفَاءِ

قَلْبٌ أَذَابَتْهُ الصَّبَابَةُ وَالْجَوَى              وَغِلاَلَةٌ رَثَّتْ مِنِ الأَدْوَاءِ

وَالرُّوْحُ بيْنَهُمَا نَسِيمُ تَنَهُّدٍ                 فِي حَالَيَ التَّصْوِيبِ وَ الصُّعَدَاءِ

وَالعَقْلُ كَالمِصْبَاحِ يَغْشَى نُورَهُ             كَدَرِي وَيُضْعِفُهُ نُضُوبُ دِمَائِي

هَذَا الَّذِي أَبْقَيْتِهِ يَا مُنْيَتِي                 مِنْ أَضْلُعِي وَحَشَاشَتِي وَذَكَائِي

عُمْرَيْنِ فِيكِ أَضَعْتُ لَوْ أَنْصَفْتِنِي         لَمْ يَجْدُرَا بِتَأَسُّفِي وَبُكَائِي

عُمْرَ الْفَتَى الْفَانِي وَعُمْرَ مُخَلَّدٍ           بِبيَانِهِ لَوْلاَكِ في الأَحْيَاءِ

فغَدَوْتَ لَمْ أَنْعَمْ كَذِي جَهْلٍ وَلَمْ           أغْنَمْ كَذِي عَقْلٍ ضَمَانَ بَقَاءِ

يَا كَوْكَباً مَنْ يَهْتَدِي بِضِيائِهِ             يَهْدِيهِ طَالِعُ ضِلَّةٍ وَرِيَاءِ

يا مَوْرِداً يَسْقِي الوُرُودَ سَرَابُهُ              ظَمَأً إِلى أَنْ يَهْلِكُوا بِظَمَاءِ

يَا زَهْرَةً تُحْيِي رَوَاعِيَ حُسْنِهَا              وَتُمِيتُ نَاشِقَهَا بِلاَ إِرْعَاءِ

هَذا عِتَابُكِ غَيْرَ أَنِّيَ مُخْطِيءٌ            أَيُرَامُ سَعْدٌ فِي هَوَى حَسْنَاءِ

حَاشَاكِ بَلْ كُتِبَ الشَّقَاءُ عَلَى الْورَى      وَالْحُبُّ لَمْ يَبْرَحْ أَحَبَّ شَقَاءِ

نِعْمَ الضَّلاَلَةُ حَيْثُ تُؤْنِسُ مُقْلَتِي         أَنْوَارُ تِلْكَ الطَّلْعَةِ الزَّهْرَاءِ

نِعْمَ الشَّفَاءُ إِذَا رَوِيْتُ بِرشْفَةٍ              مَكْذُوبَةٍ مِنْ وَهْمِ ذَاكَ المَاء

نِعْمَ الْحَيَاةُ إذا قضَيْتُ بِنَشْقَةٍ             مِنْ طِيبِ تِلكَ الرَّوْضَةِ الغَنَّاءِ

إِنِّي أَقَمْتُ عَلى التَّعِلَّةِ بِالمُنَى            فِي غُرْبَةٍ قَالوا تَكُونُ دَوَائِي

إِنْ يَشْفِ هَذَا الْجِسْمَ طِيبُ هَوَائِهَا        أَ يُلَطَّف النِّيرَانَ طِيبُ هَوَاءِ

أَوْ يُمْسِكِ الْحَوْبَاءَ حُسْنُ مُقَامَهَا          هَلْ مَسْكَةٌ فِي البُعْدِ للْحَوْبَاءِ

عَبَثٌ طَوَافِي فِي الْبِلاَدِ وَعِلَّةٌ             فِي عِلَّةٍ مَنْفَايَ لاِسْتشْفَاءِ

مُتَفَرِّدٌ بِصَبَابَتِي مُتَفَرِّد                    بِكَآبَتِي مُتَفَرِّدٌ بَعَنَائِي

شاكٍ إِلى البَحْرِ اضْطَرابَ خَوَاطِرِي       فَيُجِيبُنِي بِرِيَاحِهِ الهَوْجَاءِ

ثاوٍ عَلَى صَخْرٍ أَصَمَّ وَلَيْتَ لِي          قَلْباً كَهَذِي الصَّخْرَةِ الصَّمَّاءِ

يَنْتَابُهَا مَوْجٌ كَمَوْجِ مَكَارِهِي               وَيَفُتُّهَا كَالسُّقْمِ فِي أَعْضَائِي

وَالبَحْرُ خَفَّاقُ الْجَوَانِبِ ضَائِقٌ            كَمَداً كصَدْرِي سَاعَةَ الإِمْسَاءِ

تَغْشَى الْبَريَّةَ كُدْرَةٌ وَكَأَنَّهَا                صَعِدَتْ إِلى عَيْنَيَّ مِنْ أَحْشَائي

وَالأُفْقُ مُعْتَكِرٌ قَرِيحٌ جَفْنُهُ                يُغْضِي عَلَى الْغَمَرَاتِ وَالأَقْذَاءِ

يا لَلْغُرُوبِ وَمَا بِهِ مِنْ عِبْرَةٍ              للِمْسْتَهَامِ وَعِبْرَةٍ لِلرَّائي

أَوَلَيْسَ نَزْعاً لِلنَّهَارِ وَصَرْعَةً              لِلشَّمْسِ بَيْنَ مَآتِمِ الأَضْوَاءِ

أَوَلَيْسَ طَمْساً لِلْيَقِينِ وَمَبْعَثاً              للِشَّكِّ بَيْنَ غَلاَئِلِ الظَّلْمَاءِ

أَوَلَيْسَ مَحْواً لِلْوُجُودِ إِلى مَدىً            وَإبَادَةً لِمَعَالِمِ الأَشْيَاءِ

حَتَّى يَكُونَ النُّورُ تَجْدِيداً لَهَا             وَيَكونَ شِبْهَ الْبَعْثِ عَوْدُ ذُكَاءِ

وَلَقَدْ ذَكَرْتُكِ وَالنَّهَارُ مُوَدِّعٌ               وَالْقَلْبُ بَيْنَ مَهَابَةٍ وَرَجَاءِ

وَخَوَاطِرِي تَبْدُو تُجَاهَ نَوَاظِرِي             كَلْمَى كَدَامِيَةِ السَّحَابِ إزَائِي

وَالدَّمْعُ مِنْ جَفْنِي يَسِيلُ مُشَعْشَعاً         بِسَنَى الشُّعَاعِ الْغَارِبِ المُتَرَائِي

وَالشَّمْسُ فِي شَفَقٍ يَسِيلُ نُضَارُهُ           فَوْقَ الْعَقِيقِ عَلى ذُرىً سَوْدَاءِ

مَرَّتْ خِلاَلَ غَمَامَتَيْنِ تَحَدُّراً              وَتَقَطَّرَتْ كَالدَّمْعَةِ الحَمْرَاءِ

فَكَأَنَّ آخِرَ دَمْعَةٍ لِلْكَوْنِ قَدْ               مُزِجَتْ بِآخِرِ أَدْمُعِي لِرِثَائِي

وَكأَنَّنِي آنَسْتُ يَوْمِيَ زَائِلاً               فَرَأَيْتُ فِي المِرْآةِ كَيْفَ مَسَائي


No comments:

Post a Comment