Wednesday 22 July 2020

আব্দুল মাতিন ওয়াসিমঃ ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জ়িন এক কৃষ্ণকায় আফ্রিকান দাস

ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জ়িন এক কৃষ্ণকায় আফ্রিকান দাস  

আব্দুল মাতিন ওয়াসিম 

৫৭০ খ্রিস্টাব্দে, নবীজির জন্মের এক বছর আগে, ইয়ামানের বাদশা আব্রাহা বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে মক্কার উপর আক্রমণ করল উদ্দেশ্য ছিল কাবা ঘর গুড়িয়ে দিয়ে সান'আতে তাঁদের তৈরিগ়ার্ক়াতুল্ক়ালীস”-এ তীর্থের জন্য উপস্থিত হতে মানুষকে একরকম বাধ্য করা সঙ্গে নিয়ে এসেছিল প্রচুর হাতি আরবে যেহেতু সাধারণত হাতি দেখা যায় না, তাই ইতিহাসের পাতায় তারা আস়্হ়াবুল্ফ়ীল” (হস্তিবাহিনী) নামে চিহ্নিত হল। বিশাল সৈন্যবাহিনী ও হাতি দেখে গোত্রপতি আব্দুল মুত্তালিব ও তাঁর লোকেরা ভয়ে নিজেদের অর্থসম্পদ নিয়ে পাহাড়ের আড়ালে আশ্রয় নিল তার আগে আব্দুল মুত্তালিব কাবার দেয়াল ধরে ফরিয়াদ করলেন, “আমি উটের মালিক উটগুলোকে বাঁচাবার মরিয়া চেষ্টা করছি তুমি এই ঘরের মালিকএই ঘর রক্ষা করার দায়িত্ব তোমার!” তা-ই হল, ঝাঁকে ঝাঁকে অতি ক্ষুদ্রাকারের পাখি (আবাবিল) নেমে এল আকাশ পথে, পায়ে ও ঠোঁটে দুটো করে পাথর নিয়ে তাদের আক্রমনে পরাস্ত হল আব্রাহা ও তাঁর হস্তিবাহিনী প্রচুর সেনা মারা গেল, অল্প কিছু পালাতে সক্ষম হল আর কিছু আরবদের হাতে বন্দী হল ঐতিহাসিকদের মতে, হ়ামামা, বাদশা আব্‌রাহার ভাইঝিও, তাদের সাথে বন্দী হয়ে ভাগ্যচক্রে হয়ে গেল দাসী আর খ়াল্ফের ঘরে ঠাই হল তাঁর বাঁদি রূপে ওই বাড়িতেই আবিসিনিয়ার আর এক দাস, রাবাহ়্-এরও ঠাই হল কিছু দিন পর তাঁদের বিয়ে হল এবং তাঁদের ঘরে জন্ম নিল এক শিশু, নাম রাখা হল বেলাল

মা-বাবার স্নেহ-ছায়ায় শিশু বেলালও বেশ তরতরিয়ে বড় হয়ে উঠছিলেন কিন্তু হঠাৎ করে একদিন তাঁর বাবা চলে গেলেন না-ফেরার দেশে বেলালকে রেখে গেলেন তাঁরা মনিব খ়াল্ফের কাছে ক্রীতদাস রূপে; দাসের ঔরসে ও দাসীর গর্ভে জন্মেছিলেন বলেই তিনিও হয়ে গেলেন দাস (কিছু বর্ণনায় রয়েছে, বাবার কিছু দিনের মধ্যে তাঁর মা হ়ামামাও মারা যান; আবার অন্য এক বর্ণনা অনুযায়ী, বেলাল ও তাঁর মা হ়ামামা একই সাথে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন) দাস রূপে শৈশব কাটিয়ে সবে কৈশোরে পা দিয়েছেন, এরই মাঝে একদিন মনিব খ়াল্ফও মারা গেল ফলে তার পুত্র উমাইয়া হল বেলালের নতুন মনিব সে ছিল বড্ড নির্মম একেবারেই পাষণ্ড এতটুকু ভুলত্রুটি হলে বেলালের উপর চলতো অকথ্য অত্যাচার বেলালের মনে হলো, মানুষের জীবন এমন হতে পারে নাবাঁচতে হলে মানুষের মতন সম্মান নিয়ে বাঁচতে হবে। মনের দুঃখ-যন্ত্রণা বুকে নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচার স্বপ্ন দেখতেন বেলালএসবেরই মাঝে একদিন তিনি হ়েরা পর্বতের পাদদেশে ছাগল ও মেষ চরাচ্ছিলেন। হঠাৎ সেখানে নবীজির সাথে তাঁর দেখা। অভুক্ত নবীজিকে বক্‌রির দুধ পান করালেন তিনিতারই ফাঁকে কিছু আলাপ-আলোচনা হল তাঁদের। গল্পছলে তিনি জানতে পারলেন নবীজির আদর্শের কথা, ইসলামের ইকুয়িটি ও হিউম্যান রেস্পেক্টের কথা জেনে মুগ্ধ হলেন। মন বিগলিত হল। সিদ্ধান্ত নিলেন, ইসলাম গ্রহণ করবেন। করেও নিলেন।

নবীজির পরামর্শ মতো তিনি খবরটা লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু চতুর্থ দিনের মাথায় কোনোভাবে তা প্রকাশ পেল এবং মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গেল। মনিব উমাইয়া ক্ষেপে আগুণ। অত্যাচারের মাত্রা চরম সীমায় পৌঁছালো। বেলালকে নির্দেশ দিল জন্তুর মতো চারপায়ে চলাফেরা করতে। অমান্য করলেই দেওয়া হতো কঠোর শাস্তি। গলায় দড়ি বেঁধে ছেলেদের হাতে তুলে দিলআর ছেলেরা তাঁকে মক্কার রাস্তায় রাস্তায় টেনে হিচড়ে নিয়ে বেড়ালোলোভ দেখানো হল, ইসলাম ত্যাগ করলেই শাস্তি বন্ধ হয়ে যাবে, আর না করলে, দিনদিন মাত্রা আর বাড়বে। কিন্তু বেলাল নবীজির আদর্শ থেকে একচুলও সরলেন নাফলে উমাইয়ার ক্রোধ ও নির্যাতন পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকলো কখনো বুকে উপর ভারি পাথর চাপিয়ে দিয়ে মরুভূমির অগ্নিতপ্ত বালির উপর চিৎ করে শুইয়ে রাখা হলো। বন্ধ করে দেওয়া হলো জল ও খাবার। চাবুকের আঘাতে জর্জরিত হয়ে গেল তাঁর দেহক্ষত-বিক্ষত দেহে লবণ ছিটিয়ে দেওয়া হলোকখনো চুবিয়ে রাখা হলো পানিতে। অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়লেন বেলাল, জ্ঞান হারালেন। তবুও অটল থাকলেন। মুহূর্তের জন্যও নবীর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলেন না। আর মনে মনে দুআ করতে থাকলেন মুক্তির জন্য।


এই ভয়াবহ নির্যাতনের খবর যখন নবীজির (সা) কানে পৌঁছালকেঁদে উঠলো তাঁর অন্তর। ভাবতে লাগলেন কী করা যায়? নিজ অনুগামীদের সাথে আলোচনা করলেন। শুনে আবু বাক্‌র (রা) বলে উঠলেনযেমন করেই হোক আমি বেলালকে মুক্ত করে আনবো,ন্‌ শাল্লাহ! তাতে যত টাকা লাগে লাগুক। যেমন কথা তেমন কাজ, ছুটে গেলেন উমাইয়ার কাছে এবং চড়া দামে কিনে নিলেন বেলালকে। অন্য এক বর্ণনা অনুযায়ী, দাসের বদলে দাস দিয়ে কিনে নিলেন তাঁকে। কিছু বর্ণনায় রয়েছে, আবু বাক্‌র (রা) যখন উমাইয়ার কাছে বেলালকে কেনার জন্য গেলেন, উমাইয়া বললতোমরাই তো এর মাথাটা নষ্ট করেছো। এবং বু বাক্‌র (রা) যেহেতু ইসলাম গ্রহণ করেছে, তিনি বেলালকে কিনে মুক্ত করে দেবেতাই তাঁর কাছে বেলালকে বিক্রি করতে রাজি হল না উমাইয়াহতাশ মনে ফিরে এলেন আবু বাক্‌র (রা) কিন্তু তিনি দমে যাওয়ার পাত্র নন, তাই নবীজির চাচা আব্বাস (রা)-কে বললেন। তিনি তখনো ইসলাম গ্রহণ করেননি, তিনি গিয়ে বললেন— “উমাইয়া, আমি এখনো ইসলাম গ্রহণ করিনিতুমি আমার কাছে বেলালকে বিক্রি করতে পারে তা-ই হলো। উমাইয়া রাজি হয়ে গেলোতবে অর্থ নয়, দাসের বিনিময়ে দাস নিয়ে। এই প্রথম মুক্তির স্বাদ পেলেন বেলাল (রা)। নবীজির (সা) সাহচর্যে শুরু হলো তাঁর নতুন জীবন। কিছু দিন পর, নবীজি আদেশ দিলেন আবিসিনিয়ায় হিজরত করারবেলালকে বলা হল সেখানে যেতে। কিন্তু নবীজিকে ছেড়ে কোথাও যেতে রাজি ছিলেন না তিনিতবে, তার কয়েক বছর পরে, মদিনা-হিজ্‌রতের সময় নবীজির আদেশে বাধ্য হয়ে মক্কা ত্যাগ করলেন।


প্রায় বছর দেড়েক পর, হিজ্‌রত করে নবীজি (সা) মদিনা গেলেন। নামা পড়ার জন্য সেখানে একটি মসজিদ তৈরি করা হলো যাতে সকলে মিলে সমবেত হয়ে সালাত আদায় করতে পারে কিন্তু সমস্যা দেখা দিলো লোকজনকে একত্রিত করা নিয়ে। কী করা যায় তা নিয়ে ভাবতে লাগলেন সবাই। এরই মাঝে একদিন আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ (রা) স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে আজ়ানের কথাগুলো শুনলেন। ছুটে গিয়ে নবীজিকে শোনালেন। তাঁরও খুব পছন্দ হলো। আবদুল্লাহ বিন যায়েদ (রা)-কে আদেশ দিলেন বেলাল (রা)-কে কথাগুলো শিখিয়ে দিতে অতঃপর বেলাল (রা) অত্যন্ত সুরেলা কণ্ঠে, উচ্চ স্বরে হাঁক ছাড়লেন, “আল্লাহু আক্‌বার আল্লাহু আক্‌বার...আর মদিনার আকাশে-বাতাসে মিশে গেলো আজ়ানের কালেমাতাঁর কণ্ঠ শুনে ছুটে আসলেন সকলে, সমবেত হলেন মসজিদ-ই-নববীতে। আর এভাবেই একজন কৃষ্ণকায় আবিসিনিয়ান দাস হয়ে গেলেন ইসলামী ইতিহাসের প্রথম মুয়াজ্জ়িনঅর্জন করে ফেললেন এক ঈর্শনীয় গৌরব। হয়ে গেলেন প্রিয়ভাজনেষু নবীজির কাছে, তাঁর সকল স়াহাবাদের কাছে, তা-কেয়ামত সকল মুসলমানের কাছে।


কিছুদিন পর, প্রায় দু’ বছরের মাথায় বদরের প্রান্তরে যুদ্ধ বাঁধলবেলাল ঐতিহাসিক ৩১৩-র ফৌজে শামিল হলেন। অন্যান্যদের সাথে তিনিও পাড়ি জমালেন সেখানেবীরত্বের সাথে অংশ নিলেন জিহাদে। ভাগ্যের এমনই লীলাখেলা, যে উমাইয়ার হাতে তাঁকে দিনের পর দিন অকথ্য অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল, বদরের রণভূমিতে সেই উমাইয়ার মৃত্যু হলো তাঁরই (রা) হাতে


আরও ছ’বছর পর, অষ্টম হিজ্‌রাব্দে মক্কা বিজিত হল। সবাইকে জান ও মালের নিরাপত্তা দেওয়া হল। তারপর কাবা ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হল। এবার তাতে আজ়ান দেওয়ার পালা। কিন্তু কে দেবে? স্থির করা হল, বেলাল (রা) দেবেন। ডাকা হল তাঁকে। উম্মতের শ্রেষ্ঠ দুই ব্যক্তি, ইসলামী ইতিহাসের প্রথম ও দ্বিতীয় খলিফা আবু বাক্‌রা ও উমার (রা)-এর কাঁধে চেপে তিনি উঠে পড়লেন কাবার ছাদে। উঠে কণ্ঠ উজাড় করে হাঁক ছাড়লেন— “আল্লাহু আক্‌বার – আল্লাহু আক্‌বার... কী অদ্ভুত, একবিংশ শতাব্দীতেও মানচিত্রের নানা প্রান্তে শুধু কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার কারণে রোজ কত মানুষকে কতরকম নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, অথচ মুসলিম উম্মাহ্‌র প্রথম মানুষ হিসেবে একজন কৃষ্ণকায় আফ্রিকান দাস উঠে পড়লেন পবিত্র কাবার ছাদে!


মক্কা বিজয়ের পর, বছর দুয়েকের মধ্যেই নবীজি (সা) অসুস্থ হলেন। তার কমাস পরে পাড়ি দিলেন চিরস্থায়ী জগতের পথেশোকে বিহ্বল হয়ে গেলেন বেলাল (রা) মদিনা ছেড়ে চলে যেতে চাইলেন। কিন্তু প্রথম খলিফা আবু বাক্‌র (রা)-এর অনুরোধে থেকে গেলেন। তবে যতদিন বেঁচে ছিলেন, তাঁর মুখে আর কোনোদিন হাসি দেখা যায়নি। তিনি আজ়ান দেওয়ায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন


যেহেতু তিনি দীর্ঘদিন নবীজির মুয়াজ্জ়িন ছিলেন, তাই তাঁর সুরেল-সুউচ্চ কণ্ঠ ও লোকেদের শ্রবণ পথের এক অদ্ভুত সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। সেজন্যই জনগণ আবারও তাঁর সুমধুর কণ্ঠে আজ়ান শুনতে উদগ্রীব হয়ে পড়লকিন্তু তিনি কোনো মতে রাজি হলেন না। শেষমেশ খলিফার অনুরোধে রাজি হলেন কিন্তু আজ়ান শেষ হওয়া মাত্রই বেহুশ হয়ে গেলেন। তারপর থেকে আজ়ান দেওয়া একেবারেই ছেড়ে দিলেন। আজ়ান দেয়ার জন্য অনুরোধ করলে বলতেন, “আমি যখন আজ়ান দেবো, তখনশ্‌হাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহবলা পর্যন্ত ঠিক থাকতে পারলেও, তারপর আর আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না।আশহাদু ন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহবলার সময় মসজিদের মিম্বারের দিকে তাকালে নবীজিকে (সাঃ) দেখতে পাবো না, তা সহ্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও কিছু স়াহাবা তাঁকে অনুরোধ করলেনকিন্তু তিনি (রা) আগেরই মত নিশ্চল। এবার তাঁরা একটা উপায় বের করলেন সকলে মিলে গিয়ে হ়াসান (রা) হ়ুসাইন (রা)-কে ধরলেনবেলাল (রা) নবী-দৌহিত্রদ্বয়ের অনুরোধ ফেলতে পারলেন না। শুরু করলেন, “আল্লাহু আক্‌বার আল্লাহু আক্‌বার...কিন্তু সম্পূর্ণ করতে পারলেন না। মাঝপথেই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়লেন মাটিতেটাই ছিলো তাঁর শেষ আজ়ান যদিও কিছু বর্ণনায় রয়েছে, উমার (রা) যখন বায়তুল মাক়্দিস জয় করলেন, বেলালকে বললেন আজ়ান দিতে। বেলাল আজ়ান দিলেন। আর তাঁর আজ়ান শুনে সেখানে উপস্থিত সকল স়াহাবী কেঁদে ফেললেন। সবচেয়ে বেশি কেঁদেছিলেন উমার (রা)  

নবীজিকে তিনি খুব ভালোবাসতেন আর তাই কিছুতেই নিজ স্মৃতি থেকে মদিনা ও নবীজিকে পৃথক করতে পারছিলেন না নবী-বিহীন মদিনায় জীবনযাপন অসহনীয় হয়ে উঠেছিলো তাঁর জন্য শেষে মদিনা ছেড়ে চলে গেলেন সিরিয়ায়। সেখানেই একসময় চিরবিদায়ের ডাক এলো। দামেস্কে ৬৪১ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করলেন এই কৃষ্ণকায় আবিসিনিয়ান দাস, ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জ়িন বেলাল বিন্রাবাহ়্ এবং সেখানেই বাবুস়্ স়াগ়ী সমাধিক্ষেত্রে দাফন করা হলো তাঁকে; তবে তিনি জীবিত আছেন এবং তা-ক়েয়ামত থাকবেন; এক কৃষ্ণকায় আবিসিনিয়ান-আফ্রিকান দাস রূপে নয়, ইসলামের প্রথম এবং নবীজির প্রিয় মুয়াজ্জ়িন রূপে প্রত্যেক মুয়াজ্জ়িনের হৃদয়ে, সকল নামাযীর স্মৃতিতে, প্রতিটা আজ়ানের সুরেরাদ়ি আল্লাহুআন্হু!

২৮-০৬-২০২০

বাঁশকুড়ি, দঃ দিনাজপুর

1 comment:

  1. গল্পটা খুব সুন্দর। গোল্পর মনেটা খুব গভীর। 😌

    ReplyDelete