৭৫) সূরাতু
আল্-ক়েয়ামাহ্ (মহাপ্রলয় ও পুনরুত্থান)
بِسْمِ
اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
لَا
أُقْسِمُ بِيَوْمِ الْقِيَامَةِ
আমি শপথ করছি প্রলয় ও
পুনরুত্থান দিবসের,
وَلَا
أُقْسِمُ بِالنَّفْسِ اللَّوَّامَةِ
আরও শপথ করছি তিরস্কারকারী
আত্মার (যে আত্মা ভুলভ্রান্তির পর নিজের সমালোচনা করে এবং নিজেকে তিরস্কার করে)—
أَيَحْسَبُ
الْإِنسَانُ أَلَّن نَجْمَعَ عِظَامَهُ
মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার অস্থিসমূহ
একত্রিত করতে পারবো না?
بَلَى
قَادِرِينَ عَلَى أَن نُّسَوِّيَ بَنَانَهُ
পরন্তু আমি তো তার আঙুলের
অগ্রভাগ পর্যন্ত সঠিক ভাবে পুনর্বিন্যস্ত ও সন্নিবেশিত করতে সক্ষম।
بَلْ
يُرِيدُ الْإِنسَانُ لِيَفْجُرَ أَمَامَهُ
তবুও মানুষ ভবিষ্যত জীবনেও ধৃষ্টতা
করতে চায়
يَسْأَلُ
أَيَّانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ
সে প্রশ্ন করে— কেয়ামত ও পুনরুত্থান কবে হবে?
فَإِذَا
بَرِقَ الْبَصَرُ
(পুনরুত্থান হবে) যখন দৃষ্টি চমকে যাবে,
وَخَسَفَ
الْقَمَرُ
চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে পড়বে,
وَجُمِعَ
الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ
এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে-
يَقُولُ
الْإِنسَانُ يَوْمَئِذٍ أَيْنَ الْمَفَرُّ
সেদিন মানুষ বলবে— আজ পালাবার জায়গা কোথায়?
كَلَّا
لَا وَزَرَ
না, কোথাও কোনো আশ্রয়স্থল নেই।
إِلَى
رَبِّكَ يَوْمَئِذٍ الْمُسْتَقَرُّ
তোমার প্রভুর কাছেই সেদিন দাঁড়াতে হবে।
يُنَبَّأُ
الْإِنسَانُ يَوْمَئِذٍ بِمَا قَدَّمَ وَأَخَّرَ
সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে সামনে কী প্রেরণ করেছে এবং পশ্চাতে
কী ছেড়ে এসেছে।
بَلِ
الْإِنسَانُ عَلَى نَفْسِهِ بَصِيرَةٌ
বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুষ্মান
ও সাক্ষী হবে (অর্থাৎ তার প্রতিটি অঙ্গ তার সম্পাদিত কর্মের খতিয়ান পেশ করবে)।
وَلَوْ
أَلْقَى مَعَاذِيرَهُ
যদিও সে (নিজ মিথ্যাচার ও পাপাচারিতা ঢাকতে) তার নানা ধরণের অজুহাত
পেশ করতে চাইবে।
لَا
تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ
(হে মুহাম্মদ সাঃ) তাড়াতাড়ি শিখে নেওয়ার জন্য তুমি দ্রুত ওহী (অর্থাৎ
আল্-কুর্আন) আবৃত্তি করো না।
إِنَّ عَلَيْنَا
جَمْعَهُ وَقُرْآنَهُ
এর সংরক্ষণ ও পাঠ আমারই দায়িত্ব।
فَإِذَا
قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ
অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি (অর্থাৎ
আমার তরফ থেকে জিব্রাইল আঃ পাঠ করে), তখন তুমি সেই পাঠের অনুসরণ করো।
ثُمَّ
إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ
আর এর বিশদ ব্যাখ্যা ও বর্ণনারও দায়িত্ব আমারই।
كَلَّا
بَلْ تُحِبُّونَ الْعَاجِلَةَ
কখনই না, বরং তোমরা পার্থিব জীবনকে (অধিক) ভালবাসো
وَتَذَرُونَ
الْآخِرَةَ
এবং পরকালকে উপেক্ষা কর।
وُجُوهٌ
يَوْمَئِذٍ نَّاضِرَةٌ
সেদিন অনেক মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হবে।
إِلَى
رَبِّهَا نَاظِرَةٌ
তারা নিজ পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
وَوُجُوهٌ
يَوْمَئِذٍ بَاسِرَةٌ
এবং অনেক মুখমণ্ডল সেদিন উদাস ও বিবর্ণ হবে।
تَظُنُّ
أَن يُفْعَلَ بِهَا فَاقِرَةٌ
এই আশঙ্কায় যে, তাদের সাথে কোমর-ভাঙ্গা আচরণ করা হবে।
كَلَّا
إِذَا بَلَغَتْ التَّرَاقِيَ
কখনই না, যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত হবে।
وَقِيلَ
مَنْ رَاقٍ
এবং বলা হবে, কে (তাকে) রোগমুক্ত করবে (অর্থাৎ কে তাকে মৃত্যু থেকে
রক্ষা করতে পারবে)?
وَظَنَّ
أَنَّهُ الْفِرَاقُ
এবং সে মনে করবে যে, তার বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে।
وَالْتَفَّتِ
السَّاقُ بِالسَّاقِ
এবং পায়ের গোছার সাথে গোছা জড়িয়ে যাবে
(অর্থাৎ মৃত্যুযন্ত্রণার সাথে পারলৌকিক জীবনের অনিশ্চয়তার উদ্বেগ তাকে আষ্টেপিষ্টে
ধরবে)।
إِلَى
رَبِّكَ يَوْمَئِذٍ الْمَسَاقُ
সেদিন, তোমার পালনকর্তার নিকট সবকিছু নিয়ে যাওয়ার দিন।
فَلَا
صَدَّقَ وَلَا صَلَّى
সে তো (পার্থিব জীবনে) না বিশ্বাস করেছিল আর না নামায পড়েছিল;
وَلَكِن
كَذَّبَ وَتَوَلَّى
পরন্তু (জীবনভর) মিথ্যারোপ করেছে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে।
ثُمَّ ذَهَبَ
إِلَى أَهْلِهِ يَتَمَطَّى
অতঃপর দম্ভ ভরে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে গেছে।
أَوْلَى
لَكَ فَأَوْلَى
এই দুর্ভোগ তোমারই জন্য প্রযোজ্য।
ثُمَّ
أَوْلَى لَكَ فَأَوْلَى
হ্যাঁ, তুমিই এর হকদার আর এটাই তোমার প্রাপ্য।
أَيَحْسَبُ
الْإِنسَانُ أَن يُتْرَكَ سُدًى
মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি নিরর্থক ছেড়ে দেয়া হবে (স্রষ্টার আদেশ মান্য করার
পুরস্কার এবং অমান্য করার কোনো শাস্তি তাকে দেওয়া হবে না)?
أَلَمْ
يَكُ نُطْفَةً مِّن مَّنِيٍّ يُمْنَى
সে কি (নারী ও পুরুষের) স্খলিত বীর্যের শুক্রবিন্দু ছিল না?
ثُمَّ
كَانَ عَلَقَةً فَخَلَقَ فَسَوَّى
অতঃপর সে ছিল রক্তপিণ্ড, তারপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং
সুঠাম ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
فَجَعَلَ
مِنْهُ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنثَى
অতঃপর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন জোড়া জোড়া নর ও নারী।
أَلَيْسَ
ذَلِكَ بِقَادِرٍ عَلَى أَن يُحْيِيَ الْمَوْتَى
তবুও কি তিনি মৃতদেরকে পুনর্জীবিত করতে সক্ষম নন?!
ভাবানুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
No comments:
Post a Comment