Saturday 4 December 2021

ফারাজদাকঃ সবাই তাঁকে চেনে

 

সবাই তাঁকে চেনে

ফ়ারাজ়্দাক়

[একদা আলি যাইনুল আবেদিন কাবা ঘরের প্রদক্ষিণ করছিলেন। এমন সময় শ্রদ্ধাভরে জনসাধারণ তাঁর পথ প্রশস্ত করে দিচ্ছিল। এসব দেখে খলীফা হিশাম বিন আব্দুল মালিক অবজ্ঞার স্বরে জিজ্ঞেস করেন— ব্যক্তিটি কে? তারই উত্তরে কবি ফ়ারাজ়্দাক় যাইনুল আবেদিনের প্রশংসায় উক্ত কবিতাটি রচনা করেন।]

ইনি সেই ব্যক্তি যার পদক্ষেপকে চেনে (মক্কার) প্রশস্ত উপত্যকা, চেনে (পবিত্র) কাবা শরীফ এবং (মক্কা ও মদিনার) হালাল ও হারাম এলাকাও চেনে।

তিনি সমগ্র সৃষ্টিকূলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি (নবী সাঃ)-এর বংশধর। তিনি আল্লাহভীরু ও সংযমশীল, নির্মল চরিত্রের অধিকারী, পুতঃপবিত্র এবং নেতৃস্থানীয়।

কোরায়েশরা যখন তাঁকে দেখে, তখন তাদের কথক বলে— এঁর মহৎ গুণাবলীর কাছে গিয়ে সমস্ত মাহাত্ম্য শেষ হয়ে গেছে (অর্থাৎ তাঁর মর্যাদার উচ্চতাকে কেউ অতিক্রম করতে পারবে না)।

তিনি সম্মানের এমন উচ্চতায় আরোহণ করেছেন, যে-উচ্চতা অর্জনে আরব-অনারব সকল মুসলিম অক্ষম ও অপারগ হয়ে পড়েছে।

যখন তিনি দূর থেকে (হাজ্‌রে আস্‌ওয়াদকে) চুমু খাওয়ার মনঃস্থির করেন তখন হাতিমের রুকন অর্থাৎ হাজরে ইস্‌মায়িল তার হাতের কল্যাণ (অর্থাৎ তাঁর দানশীলতা)-এর কারণে তাকে সেখানে যেন আটকে রাখে।

তাঁর হাতে কল্যাণের এক উৎস রয়েছে, যার মুনাফা ও কল্যাণ ছড়িয়ে পড়েছে কল্যাণময় হাত থেকেই; আর তাঁর নাকে একটা উঁচু অংশ আছে অর্থাৎ তিনি সম্ভ্রান্ত।

তিনি লজ্জায় দৃষ্টি অবনত রাখেন এবং (তাঁর সামনে) তাঁর ভয়ে দৃষ্টি অবনত রাখা হয় (এবং তাঁর জন্য স্থান প্রশস্ত করে দেওয়া হয়), তিনি মুখে মৃদু হাসি ছাড়া কথা বলেন না।

তাঁর শুভ্র ললাট হতে হেদায়েত ও সুপথের আলো নির্গত হয়ে বেরিয়ে আসে, যেমন সূর্য উদয় হলে মেঘাচ্ছন্ন অন্ধকার কেটে যায়।

তাঁর বংশ লতিকা আল্লাহ্‌র রাসূল (মুহাম্মদ সাঃ) হতে নির্গত হয়েছে। ফলে বংশ কৌলীন্যে ও স্বভাব-চরিত্রে তিনি উত্তম ও উৎকৃষ্ট।

আপনার অবজ্ঞা ভরা প্রশ্ন, ইনি কে? তাঁর কোনো ক্ষতি করবে না, আপনি যাকে চিনতে অস্বীকার করেছেন, তাঁকে আরব-অনারব সকলেই চেনে।

তাঁর উভয় হাতই সাহায্যকারী, তিনি অবিরাম দান করেন, ফলে তাঁর উপকার (সকলকে) ব্যপ্ত হয়েছে, তবে কখনই দারিদ্র্য তাঁর হাতকে স্পর্শ করে না।

স্বভাবগত ভাবে তিনি সহজ সরল, তাঁর থেকে কোনোরকম উগ্র আচরণের আশঙ্কা নেই। দু’টি বিষয় তাঁকে (ও তাঁর ব্যক্তিত্বকে) আরও সুন্দর করে তুলেছে— তাঁর সচ্চরিত্র ও জন্মগত স্বভাব।

তিনি শাহাদাৎ পাঠ করার সময় ছাড়া আর কখনো ‘না’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি, যদি তাশাহ্‌হুদ অর্থাৎ শাহাদাৎ পাঠ করার বিষয়টি না থাকতো তাহলে তাঁর ‘না’ শব্দটিও ‘হ্যাঁ’-এ পরিণত হতো।

তাঁর সদয়তা, অনুগ্রহ ও উপকার সমগ্র সৃষ্টিকূলের উপর ব্যপ্ত হয়েছে; আর তাই (তাঁর) সমাজ থেকে অন্ধকার, রিক্ততা ও দারিদ্র্য সব দূরে সরে গেছে।

অনুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম 

 

هَذا الّذي تَعرِفُ البَطْحاءُ وَطْأتَهُ

الفرزدق همام بن غالب التميمي

قال يمدح سيدنا عليا زين العابدين حين سأل عنه الخليفة هشام بن عبد الملك وقد رآه يطوف بالكعبة ورأى إجلال الناس له فتجاهل معرفته وقال من هذا؟
 
هَذا الّذي تَعرِفُ البَطْحاءُ وَطْأتَهُ          وَالبَيْتُ يعْرِفُهُ وَالحِلُّ وَالحَرَمُ

هذا ابن خير عباد الله كلهم              هذا التّقيّ النّقيّ الطّاهِرُ العَلَمُ

إذا رَأتْهُ قُرَيْشٌ قال قائِلُها:                إلى مَكَارِمِ هذا يَنْتَهِي الكَرَمُ

يُنمى إلى ذروة العزّ التي قصُرتْ        عن نيلها عرب الإسلام والعجم

يَكادُ يُمْسِكُهُ عِرْفانَ رَاحَتِهِ                رُكْنُ الحَطِيمِ إذا ما جَاءَ يَستَلِمُ

بِكَفّهِ خَيْزُرَانٌ رِبْحُهُ عَبِقٌ                 من كَفّ أرْوَعَ، في عِرْنِينِهِ شمَمُ

يُغْضِي حَياءً وَيُغضَى من مَهابَتِه         فَلا يُكَلَّمُ إلاّ حِينَ يَبْتَسِمُ

يَنْشَقّ نور الهدى عن نورِ غرّتِهِ          كالشمس تَنجابُ عن إشرَاقِها الظُّلَمُ

منشقة مِنْ رَسُولِ الله نَبْعَتُهُ               طَابَتْ عناصره والخِيمُ وَالشّيَمُ

وَلَيْسَ قَوْلُكَ: مَن هذا؟ بضَائرِه            العُرْبُ تَعرِفُ من أنكَرْتَ وَالعَجمُ

كِلْتا يَدَيْهِ غِيَاثٌ عَمَّ نَفعُهُمَا               تسْتَوْكَفانِ وَلا يَعرُوهُما عَدَمُ

سَهْلُ الخَلِيقَةِ، لا تُخشى بَوَادِرُهُ            يَزِينُهُ اثنانِ: حُسنُ الخَلقِ وَالشّيمُ

ما قال: لا قطُّ إلاّ في تَشَهُّدِهِ              لَوْلا التّشَهّدُ كانَتْ لاءَهُ نَعَمُ

عَمَّ البَرِيّةَ بالإحسانِ فانْقَشَعَتْ             عَنْها الغَياهِبُ والإمْلاقُ والعَدَمُ 

1 comment: