Friday 8 April 2022

আব্দুল্লাহ ইবনুল মুকাফফাঃ বিধির বিধান


 
বিধির বিধান
‘আব্দুল্লাহ ইব্নুল মুক়াফ়্ফ়া
 
কথিত আছে, একবার চার বন্ধু একসাথে যাত্রা আরম্ভ করলো তাদের একজন ছিল রাজার ছেলে, দ্বিতীয় জন এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, তৃতীয় জন বণিক পুত্র আর চতুর্থ জন চাষার ছেলে তারা সকলে নিঃস্ব অভাবী ছিল সেবার তারা চরম বিপদে পড়েছিল তাদের কাছে পরনের কাপড়চোপড় ছাড়া আর কিছুই ছিল না তারা হাঁটতে হাঁটতে (নানা বিষয়ে) কথা বলছিল; হঠাৎ করে রাজার ছেলে বলে বসলোপৃথিবীর সবকিছুই ভাগ্যের দ্বারা সংঘটিত হয় বণিক পুত্র বললবুদ্ধি সব কিছুর ঊর্ধ্বে সম্ভ্রান্ত ঘরের ছেলেটি বললতোমাদের উল্লেখিত বিষয় অপেক্ষা সৌন্দর্য উত্তম শ্রেষ্ঠ অবশেষে কৃষকের ছেলে বললসর্বাপেক্ষা উত্তম হল পরিশ্রম (এসব আলোচনা করতে করতেই) তারা এগিয়ে চলল মাতূন নামক শহরের দিকে
 
অতঃপর তারা যখন ওই শহরে পৌঁছলো, ওই শহরেরই এক প্রান্তে অবস্থান করলো তারপর সকলে কৃষক পুত্রকে বললযাও, তোমার পরিশ্রম দ্বারা আমাদের জন্য আজকের খাবার উপার্জন করে নিয়ে আসো সে বেরিয়ে পড়লো (রাস্তায় লোকজনকে) জিজ্ঞেস করলো, এমন কী কাজ আছে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি যে কাজটা করলে এক ব্যক্তি চারজনের খাবার উপার্জন করতে পারবে লোকেরা তাকে জানালো, শহরে (এই মুহূর্তে এক্ষেত্রে) জ্বালানীর কাঠ সংগ্রহ অপেক্ষা উপযুক্ত আর কোনো কাজ নেই। তাতে মাথা পিছু এক দিরহাম। কৃষক পুত্র ওই এক দিরহাম দিয়ে (তাদের জন্য) খাবার কিনল এবং (ফেরার পথে) শহরের মেইন ফটকের উপরে লিখে দিল— একদিনের পরিশ্রমের মূল্য অর্ধেক দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা)। অতঃপর যা কিছু কিনেছিল সে-সব নিয়ে তাদের কাছে হাজির হল এবং সকলে মিলে তা (গোগ্রাসে) খেলো।
 
পরের দিন সকাল বেলা, তারা সম্ভ্রান্ত ঘরের ছেলেটিকে বলল— (আজ) তুমি যাও, তোমার সৌন্দর্য দিয়ে কিছু উপার্জন করে নিয়ে এসো; যা দিয়ে আমাদের আজকের খাবার (কেনা) হবে। সে (সেখান থেকে) বেরিয়ে পড়লোঅতঃপর মনে মনে ভাবতে লাগলো, আমি তো কোনো কাজই ভালো ভাবে করতে জানি না (তাহলে কীভাবে কী করবো)অন্যদিকে খাবার ছাড়াই (খালি হাতে) বন্ধুদের কাছে ফিরে যেতে লজ্জা বোধ করতে লাগলো। অবশেষে স্থির করলো, সে (আর সেখানে ফিরবে না) তাদের থেকে আলাদা হয়ে দূরে চলে যাবে। সে (এধরণের নানা কথা ভাবতে ভাবতে) বিষণ্ণ মনে শহরের একটি বিশাল বড় গাছের তলায় ঠেস দিয়ে বসে পড়লো। ঘটনাচক্রে তার পাশ দিয়ে শহরেরই এক সম্ভ্রান্ত ও বিত্তশালী পরিবারের এক যুবতী অতিক্রম করলো। তার রূপ ও চেহারা দেখে যুবতী মোহিত হয়ে গেলো। (বাড়ি ফিরে) পরিচারিকা মারফৎ তাকে ডেকে পাঠাল। পরিচারিকা তাকে সাথে করে নিয়ে এলো। যুবতীর আদেশ অনুযায়ী তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে (সুন্দর ও দামী কাপড়চোপড় দিয়ে) সাজানো হল। অতঃপর সে ওই যুবতীর সাথে সারাটা দিন বেশ আরাম-আয়েশের সাথে অতিবাহিত করলো। সন্ধ্যায় যখন সে ফিরতে উদ্যত হল, যুবতী তাকে বিনিময় স্বরূপ পাঁচ শ স্বর্ণমুদ্রা প্রদান করলো। তা নিয়ে সে বন্ধুদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। এবং (ফেরার সময়) শহরের ফটকের উপর লিখে দিল— একদিনের সৌন্দর্যের মূল্য পাঁচ শ’ স্বর্ণমুদ্রা।
 
তৃতীয় দিন সকাল বেলা, তারা বণিক পুত্রকে বলল— (আজ) তুমি যাও, তোমার বুদ্ধি ও ব্যবসার মাধ্যমে আমাদের আজকের জন্য কিছু উপার্জন করে নিয়ে এসো। সে রওয়ানা দিল। অল্প কিছু দূর যেতেই সে দেখতে পেলো, একটি বিশাল বড় জাহাজ সমুদ্রে নোঙর ফেলে শহর থেকে অনতিদূরে সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে আছে। তাতে প্রচুর দ্রব্যসামগ্রী রয়েছে। শহরের বণিক দল ওই জাহাজের নিকট হাজির হয়েছে, দরদাম করার জন্য। তারা জাহাজের মালিকদের সাথে দর কষাকষি করে নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করলো, চলো আজ আমরা সকলে ফিরে যাই, আজ আমরা কিছুই কিনবো না, যাতে বাধ্য হয়ে এরা জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আমাদের কাছে সস্তায় বিক্রি করে। তারা তাই করলো। কিন্তু বণিক পুত্র তাদের বিপরীত পথে হাঁটল। সে ধারে এক লাখ স্বর্ণমুদ্রায় সব কিনে নিলো। অতঃপর প্রচার করলো, সে এসব জিনিসপত্র অন্য শহরে নিয়ে যাবে। যখন এ খবর শহরের বণিক দলের কাছে পৌঁছল, তারা ভয় পেয়ে গেল, সবই তো তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যাবে। তারা ছুটে ছুটে বণিক পুত্রের কাছে আসলো। তাকে কেনা দামের চেয়ে মুনাফা স্বরূপ এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা প্রদান করলো। বণিক পুত্র তাদের থেকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা নগদ আদায় করলো; আর বাকি এক লাখ স্বর্ণমুদ্রা সহ তাদেরকে জাহাজের মালিকদের নিকট পাঠিয়ে দিল। তারপর নিজ বন্ধুদের নিকট ফিরে গেলো। (ফেরার পথে) যখন সে শহরের ফটক দিয়ে অতিক্রম করলো, তাতে লিখে দিল— একদিনের বুদ্ধির মূল্য এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা। অতঃপর তারা ওই টাকায় যা কিছু পেলো, সেসব তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে খানিকটা সজীব ও চাঙ্গা হয়ে উঠলো।
 
চতুর্থ দিন সকালে তারা রাজার ছেলেকে বলল— আজ তুমি যাও, আমাদের জন্য বিধির বিধান দিয়ে কিছু উপার্জন করে আনো। সে বেরিয়ে পড়লো। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই শহরের দরজার আকছে পৌঁছে গেল। সেখানে অনেকগুলো দোকান ছিল। একটা দোকানের পাশে বসে পড়লো। ঘটনাচক্রে সেদিন শহরের রাজার মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর কোনো উত্তরাধিকারী ছিল না, না সন্তান, না ভাই, না অন্য কোনো নিকটাত্মীয়। তাঁর জানাযা নিয়ে লোকজন ওই দোকানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলো। তাদের মধ্য থেকে একজন লক্ষ্য করলো বাদশাহ পুত্রকে, চুপচাপ বসে, না নড়াচড়া করছে, আর না রাজার মৃত্যুতে দুঃখ পেয়েছে। তাকে জিজ্ঞেস করলো— তুমি কে? তুমি কেন এখানে বসে আছো বা কে তোমাকে এখানে বসিয়ে রেখেছে? তাছাড়া তুমি রাজার মৃত্যুতে দুঃখী নও কেন? সে কোনো উত্তর দিলো না। তাই তাকে ধমক দিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিল। কিন্তু তারা যখন সেখান থেকে প্রস্থান করলো। বাদশাহ পুত্র আবার সেই জায়গায় এসে বসে পড়লো। অতঃপর তারা যখন (রাজাকে দাফন করে) ফিরল, সেই ব্যক্তি যে পূর্বে তার সাথে অমন আচরণ করেছিল, তাকে ওই জায়গায় দেখতে পেয়ে বলল— আমি তো তোমাকে নিষেধ করেছিলাম এই জায়গায় বসতে? তারপর তার দিকে অগ্রসর হয়ে তাকে ধরে বন্দী করে দিল।
 
পরের দিন তারা সকলে একত্রিত হল। নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিয়ে তাদের রাজা করবে ভেবে। যে ব্যক্তি বাদশাহ পুত্রকে বন্দী করার আদেশ করেছিল সে দাঁড়িয়ে গতকালের পুরো ঘটনা সকলের সামনে তুলে ধরল। বলল— আমি আশংকা করছি, সে হয়তো কোনো গুপ্তচর। এ কথা শুনে তার কাছে লোক পাঠানো হল। তারা তাকে নিয়ে আসল। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করলো— তুমি কে? কী ব্যাপার তোমার? কে তোমাকে এখানে পাঠিয়েছে? বাদশাহ পুত্র উত্তর দিল— আমি (পার্শ্ববর্তী রাজ্যের) কির্‌দনাদ বাদশার ছেলে। পিতার মৃত্যুর পর আমার ভাই আমাকে পরাজিত করে রাজপাঠ দখল করে নিয়েছে। আর আমি প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েছি এবং ঘুরতে ঘুরতে আপনাদের কাছে এখানে পৌঁছে গেছি।
 
তার কথা শুনে তারা তার সত্যতা জানতে পারলো, তাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তির ওই রাজ্যে যাতায়াত ছিল সে তাকে চিনতেও পারলো। তারা সকলে তার পিতার সুশাসনের কথা স্মরণ করে ভূয়সী প্রশংসা করলো। অতঃপর তাকে নিজেদের রাজা বেছে নিল। তাদের একটা প্রথা ছিল, যাকে তারা রাজা নির্বাচন করতো তাকে (সাদা) হাতির পীঠে চাপিয়ে সাড়া শহর ঘুরিয়ে দেখাতো। ফলে যখন সে শহরের ফটক দিয়ে অতিক্রম করলো, লক্ষ্য করলো তার বন্ধুরা কী লিখে রেখেছে। অতঃপর সেও আদেশ করলো এবং তাতে লেখা হল— পরিশ্রম, সৌন্দর্য, বুদ্ধি এমনকি মানুষ (জীবনে) যা কিছু পায় ভালো অথবা মন্দ সবই (আল্লাহ্‌ কর্তৃক নির্ধারিত) বিধির বিধান অনুযায়ী হয়। মহান আল্লাহ্‌ তার অসীম করুণা ও অনুকম্পার মাধ্যমে আমাকে যে কল্যাণ ও মর্যাদা প্রদান করেছে আমি তার থেকে এই শিক্ষাই গ্রহণ করছি।
 
তারপর সে রাজসভায় ফিরে সিংহাসনে বসলো। লোক মারফৎ নিজ বন্ধুদেরকে খবর দিল। তারা আসলো। সে তাদেরকে অর্থসম্পদ দিয়ে অভাবমুক্ত করে দিল। অতঃপর নিজ কর্মচারী এবং রাজ্যের গুণীজন ও বিত্তশালীদের একত্রিত করে তাদের উদ্দেশ্যে বলল— আমার বন্ধুরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করেছে যে, মহান আল্লাহ্‌ যে কল্যাণ তাদেরকে প্রদান করেছেন সবই তাঁর নির্ধারিত ভাগ্যের দরুন। আমি চাই তোমরাও এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করো এবং দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করো। আমাকে আল্লাহ্‌ যা কিছু দিয়েছেন এবং যা কিছু আমার জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন সবই ভাগ্যের দরুন; সৌন্দর্য, বুদ্ধি বা পরিশ্রমের জন্য নয়। কেননা, ভাই যখন আমাকে (আমার রাজ্য, প্রাসাদ ও রাজপাঠ থেকে) তাড়িয়ে দিয়েছিল, আমি আশা করিনি আমি এমন কল্যাণ ও মর্যাদা আর কোনোদিন ফিরে পাবো। তাছাড়া আমি লক্ষ্য করছি, এই ভূখণ্ডে এমন অনেকে আছেন যারা আমার চেয়ে অধিক সুন্দর ও সুঠাম, আমার চেয়ে অধিক বুদ্ধিমান, আমার চেয়ে অধিক পরিশ্রমী। কেবল ভাগ্যই আমাকে টেনে এনেছে এই প্রবাসে। অতঃপর আল্লাহ্‌ কর্তৃক নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী আমি (আবার) রাজা হয়েছি। অথচ আমি সংকীর্ণ জীবনোপকরণ ও সংকটময় অবস্থাতেই সন্তুষ্ট চিত্তে জীবন যাপন করছিলাম। [কালীলাহ্‌ ওয়া দিম্নাহ্‌বাবু ইব্নিল্মালিক ওয়া আস়্হ়াবিহি ]
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
 


القضاء والقدر[1]
عبد الله ابن المقفع
زعموا أن أربعة نفر اصطحبوا (في طريق واحدة)، أحدهم ابن الملك، والثاني ابن شريف (ذو جمال)، والثالث ابن تاجر، والرابع ابن أكار. وكانوا جميعاً محتاجين، وقد أصابهم ضرر وجهد (شديد في موضع غربة) لا يملكون إلا ما عليهم من الثياب. فبينما هم يمشون إذ (فكروا في أمرهم وكان كل إنسان منهم راجعاً إلى طباعه وما كان يأتيه منه الخير:) قال ابن الملك: إنما أمر الدنيا كله بالقضاء والقدر، (والذي قدر على الإنسان يأتيه على كل حال، والصبر للقضاء والقدر وانتظارهما أفضل الأمور) وقال ابن التاجر: العقل أفضل من كل شيء، وقال ابن الشريف: الجمال خير (أفضل) مما ذكرتم. ثم قال ابن الأكار: الاجتهاد أفضل من ذلك كله، ثم مضوا نحو (ليس في الدنيا أفضل من الاجتهاد في العمل فلما قربوا من) مدينة يقال لها مطون (مطرون).

فلما انتهوا إلى تلك المدينة أقاموا في ناحية منها و(جلسوا في ناحية منها يتشاورون: فـ) قالوا لابن الأكار: انطلق فاكتسب لنا باجتهادك طعاماً ليومنا هذا. فانطلق (ابن الأكار،) وسأل عن عمل إذا عمله الرجل (الإنسان) من غدوة إلى الليل، يكتسب فيه طعام أربعة نفر فعرّفوه أنه ليس في تلك المدينة شيء أعز من الحطب، وكان على رأس درهم (وكان الحطب منها على فرسخ. فانطلق ابن الأكار فاحتطب طناً من الحطب، وأتى به المدينة فباعه بدرهم و) ثم اشترى به طعاماً وكتب على باب المدينة: اجتهاد (عمل) يوم واحد يبلغ ثمنه درهما وأتاهم بما اشتراه فأصابوا منه وأكلوا (إذا أجهد فيه الرجل بدنه قيمته درهم. ثم انطلق إلى أصحابه بالطعام فأكلوا).

فلما أصبحوا قالوا لابن الشريف: انطلق بجمالك فاكتسب بعض ما يقوتنا، فانطلق وتفكر في نفسه وقال: لست أحسن من الأعمال شيئا واستحيا أن يرجع إلى أصحابه بغير طعام، وهمّ أن يفارقهم. فأسند ظهره إلى شجرة (عظيمة) في المدينة من الهم. فمرت عليه امرأة لبعض عظماء أهلها، فأعجبها جماله، فأرسلت إليه جاريتها، فأتتها به، فأمرت فنظف، ثم ظل معها يومه ذلك في نعمة وكرامة. فلما كان عند المساء أجازته بخمس مائة دينار، فتوجه إلى أصحابه وكتب على باب المدينة: جمال يوم واحد ثمنه خمس مائة دينار.

فلما أصبحوا )في اليوم الثالث،( قالوا لابن التاجر: انطلق فاكتسب لنا ليومنا هذا بعقلك وتجارتك شيئاً. فذهب فلم يبرح إلا قليلا حتى بصر سفينة عظيمة في البحر كثيرة المتاع قد أرست إلى الشاطئ (الساحل) غير بعيد من المدينة، فخرج إليها جماعة من التجّار ليبتاعوا ما فيها (من المتاع). فساوموا أصحابها ثم تشاوروا فيما بينهم، وقالوا: انصرفوا يومكم هذا، لا نشتري منهم شيئاً حتى يكسد المتاع عليهم فيرخصوا علينا، ففعلوا ذلك. فخالف إليها ابن التاجر الطريق واشترى ما كان فيها بمائة ألف دينار نسيئة وأظهر أنه يريد أن ينقل متاعه إلى مدينة أخرى. فلما بلغ ذلك التجار خافوا أن يذهب ذلك المتاع من أيديهم، فأتوه وأربحوه على ما اشتراه ألف دينار، فانتقدها منهم وأحالهم بالباقي على أصحاب السفينة، ورجع إلى أصحابه فلما مر بباب المدينة كتب عليها: عقل يوم واحد ثمنه ألف دينار. فتمتعوا بما أصابوا واخصبوا.

فلما أصبحوا في اليوم الرابع، قالوا لابن الملك: انطلق فاكتسب لنا شيئا بالقضاء والقدر. فذهب حتى أتى باب المدينة فجلس على دكان من دكاكين باب المدينة، واتفق أن ملكها مات ولم يترك ولداً ولا أخا ولا أحداً ذا قرابة. فمرّوا عليه بجنازة الملك فبصروا به لا يتحرك ولا يحزن لموت الملك، فسأله رجل منهم: من أنت؟ وما يقعدك على باب المدينة؟ ونراك لا تحزن لموت الملك؟ فلم يجبه، فشمته وطرده. فلما مضوا رجع إلى مكانه، فلما انصرفوا رآه الذي كان صنع به ماصنع، فقال له: ألم أنهك عن الجلوس في هذا الموضع؟ وتقدم إليه فأخذه وحبسه.

فلما (كان الغد) اجتمعوا (أي أهل تلك المدينة) ليملكوا عليهم رجلا يختارونه، قام الذي كان أمر بالفتى إلى الحبس، فحدثهم بقصته فقال: إني أتخوف أن يكون عينا علينا، فبعثوا إليه فأتوا به فسألوه: من هو؟ وما أمره؟ وما الذي أقدمه إليهم؟ قال: أنا أصطهر ملك قردناد (ابن ملك فويران)، وإنه لما توفي والدي غلبني أخي على المُلكْ، فهربت منه حذراً على نفسي حتى انتهيت إليكم.

فلما سمعوا ذلك منه وعرفوا كلامه وعرفه من كان يغشى أرض أبيه منهم، وأثنوا على أبيه خيراً، ملكوه عليهم. وكانت سنتهم الطواف بمن ولوه عليهم فحملوه على فيل (أبيض)، وجولوا به (حوالي المدينة) فلما مرّ بباب المدينة رأى ما كتب عليه أصحابه، فأمر فكتب: إن الاجتهاد والجمال والعقل وما أصاب الإنسان (في الدنيا) من خير أو شر إنما هو بقضاء وقدر (من الله عزّ وجل). اعتبر بذلك ما ساق الله إلي من الكرامة والخير بفضله.

ثم أتى مجلسه فقعد على سريره وأرسل إلى أصحابه فأتوه فمولهم وأغناهم، ثم جمع عمّاله وأهل الفضل وذوي الرأي من مملكته فقال لهم: أما أصحابي فقد استيقنوا أن الذي رزقهم الله سبحانه وتعالى من الخير إنما هو بقضاء الله وقدره، وإنما أحب أن تعلموا ذلك وتستيقنوه، فإن الذي منحني الله وهيأه لي إنما كان بقدر، ولم يكن بجمال ولا عقل ولا اجتهاد. وما كنت أرجو إذ طردني أخي (أن يصيبني ما يعيشني من القوت فضلاً عن) أن أصيب هذه المنزلة، (وما كنت أؤمل أن أكون بها)، لأني قد رأيت من أهل هذه الأرض من هو أفضل مني حسناً وجمالاً، وأكمل مني رأيا وأشد مني اجتهاداً، فساقني القضاء إلى أن اغتربت فملكت أمرا (وأعتززت) بقدر من الله علمه وقدره، وقد كنت راضيا أن أعيش بحال خشونة وشظف معيشة.[2] 


[1] كليلة ودمنة - باب ابن الملك وأصحابه
মূল গ্রন্থে গল্পের শুরুতে এই কথাগুলো রয়েছে—
قال دبشليم الملك لبيدبا الفيلسوف: قد سمعت هذا المثل. فإن كان الرجل لا يصيب الخير إلا بعقله ورأيه وتثبته في الأمور كما يزعمون، فما بال الرجل الجاهل يصيب البلاء والضر؟. قال بيدبا: كما أن الإنسان لا يبصر إلا بعينيه ولا يسمع إلا بأذنيه، كذلك العمل، إنما هو بالحلم والعقل والتثبت، غير أن القضاء والقدر يغلبان على ذلك. ومثل ذلك مثل ابن الملك وأصحابه. قال الملك: وكيف كان ذلك؟ قال الفيلسوف:

[2] كان في ذلك الجمع شيخ فنهض حتى استوى قائماً، وقال: إنك قد تكلمت بكلام كامل عقل وحكمة، وإن الذي بلغ بك ذلك وفوز عقلك وحسن ظنّك، وقد حققت ظننا فيك ورجاءنا لك. وقد عرفنا ما ذكرت، وصدقناك فيما وصفت. والذي ساق الله إليك من المُلكِ والكرامة كنت أهلاً له، لما قسم الله تعالى لك من العقل والرأي. وإني أسعد الناس في الدنيا والآخرة من رزقه الله رأياً وعقلاً.

وقد أحسن الله إلينا إذ وفق لنا عند موت ملكنا وكرّمنا بك. ثم قام شيخ آخر سائح فحمد الله عزّ وجل وأثنى عليه وقال: إني كنت أخدم وأنا غلام قبل أن أكون سائحاً، رجلاً من أشراف الناس. فلما بدا لي رفض الدنيا فارقت ذلك الرجل، وقد كان أعطاني من أجرتي دينارين، فأردت أن أتصدق بأحدهما، وأستبقي الآخر، فأتيت السوق، فوجدت مع رجل من الصيادين زوج هدهد، فساومت فيهما فأبى الصياد أن يبيعهما إلا بدينارين، فاجتهدت أن يبيعنيهما بدينار واحد فأبى. فقلت في نفسي: أشتري أحدهما وأترك الآخر. ثم فكرت وقلت لعلهما يكونا زوجين ذكراً وأنثى فأفرق بينهما، فأدركني لهما رحمة فتوكلت على الله وابتعتهما بدينارين وأشفقت إن أرسلتهما في أرض عامرة أن يصادا، ولا يستطيعا أن يطيرا مما لقيا من الجوع والهزال، ولم آمن عليهما الآفات. فانطلقت بهما إلى مكان كثير المرعى والأشجار بعيد عن الناس والعمران، فأرسلتهما، فطارا ووقعا على شجرة مثمرة. فلما صارا في أعلاها شكرا لي، وسمعت أحدهما يقول للآخر: لقد خلصنا هذا السائح من البلاء الذي كنا فيه، واستنقذنا ونجّانا من الهلكة. وإنا لخليقان أن نكافئه بفعله. وإنّ في أصل هذه الشجرة جرة مملوءة دنانير. أفلا ندله عليها فيأخذها؟ فقلت لهما: كيف تدلانني على كنز لم تره العيون وأنتما لم تبصرا الشبكة؟ فقالا: إن القضاء إذا نزل صرف العيون عن موضع الشيء وغشّى البصر وإنما صرف القضاء اعيننا عن الشرك ولم يصرفها عن هذا الكنز. فاحتفرت واستخرجت البرنية وهي مملوءة دنانير، فدعوت لهما بالعافية، وقلت لهما: الحمد لله الذي علّمكما ما لم تعلما، وأنتما تطيران في السماء، وأخبرتما ما تحت الأرض. قالا لي: أيها العاقل، أما تعلم أن القدر غالب على كل شيء، ولا يستطيع أحد أن يتجاوزه. وأنا اخبر الملك بذلك رأيته: فإن أمر الملك أتيته بالمال فأودعته في خزائنه. فقال الملك ذلك لك، وموفّر عليك.

No comments:

Post a Comment