Friday 1 July 2022

খলীফার পুত্রবধূ হলেন এক গোয়ালিনী যুবতী



খলীফার পুত্রবধূ হলেন এক গোয়ালিনী যুবতী
 
মদীনার আকাশে গাঢ় অন্ধকার নেমেছে। রাত তখন গভীর। খলীফা উমার (রাঃ) বেরিয়ে পড়লেন বাড়ি থেকে। ঘুরতে লাগলেন মদিনার অলিগলিতে। উদ্দেশ্য সহনাগরিকদের অবস্থা, কে কীরকম আছে, জানা। হঠাৎ তাঁর কানে ভেসে এলো বাদানুবাদের স্বর। থমকে দাঁড়ালেন। কান পাতলে দেওয়ালে। শুনতে পেলেন, এক বৃদ্ধা মহিলা নিজ মেয়েকে বলছে মা, দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রি করলে হয় না? তাহলে একটু বেশি আয় হবে। আমাদের অবস্থা একটু স্বচ্ছল হবে
 
মেয়েটি সহসা উত্তর দিল তা কী করে হয়, মা। খলীফার আদেশ, কেউ দুধে পানি মেশাতে পারবে না
 
বৃদ্ধা বলল— “থাক তোর খলীফার আদেশ, কেউ তো আর দেখছে না
 
মেয়েটি প্রতিবাদ করল— “না মা, তা হয় না। আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য খলীফার আদেশ মেনে চলা। খলীফা দেখতে পাচ্ছেন না, কিন্তু আল্লাহ তো সর্বব্যাপী, তার চোখে ধুলো দেবো কী করে?”
 
খলীফা উমার (রাঃ) দাঁড়িয়ে সব কথা শুনলেন। তারপর বাড়ির দরজায় একটা চিহ্ন এঁকে দিয়ে ফিরে গেলেন নিজ আবাসে বাড়ি পৌঁছে শুয়ে পড়লেন। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছিলো না। বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করতে লাগলেন। ঘটনাটা তিনি ভুলতে পারছিলেন না। ভাবতে লাগলেন, অজানা ওই মেয়েটিকে তাঁর সততার জন্য কী পুরষ্কার দেওয়া যায়। অনেক কিছু ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নিলেন।
 
পরদিন সকালে ওই অজানা মেয়েটিকে ডেকে পাঠালেন। খলীফার ডাক পেয়ে মা ও মেয়ে ভয় পেয়ে গেল। দুরুদুরু বুকে, ইতস্তত পায়ে তারা খলীফার নিকট উপস্থিত হল।
 
অতঃপর খলীফা নিজ পুত্রদের ডাকলেন। তাদের সামনে গত রাতের সমস্ত ঘটনা তুলে ধরলেন। তারপর বললেন— “তোমাদের মধ্যে কে এই মেয়েকে বিয়ে করতে আগ্রহী? এর চেয়ে ভালো ও উপযুক্ত মেয়ে আমি খুঁজে পাইনি।
 
পুত্রদের মধ্য থেকে আসিম তৎক্ষণা রাজি হয়ে গেলো। মেয়েটিও সম্মতি দিল। আর এভাবেই খলীফার ছেলের সাথে সেই স গোয়ালিনী মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেলো
 
[তথ্যসূত্র- ইব্‌নুল জাওজ়ী, তারীখ়ু ‘উমার বিন আল্‌-খ়াত়্ত়াব, পৃষ্ঠা ১০৩; ইব্‌নু ‘আসাকির, তারীখু দিমাশ্‌ক; আবু নায়ীম, আল্‌-হ়িল্‌ইয়াহ্‌]

 -আব্দুল মাতিন ওয়াসিম

No comments:

Post a Comment