Saturday 30 July 2022

সম্পাদকীয়ঃ নবী মোর পরশমণি



নবী মোর পরশমণি
 
হঠাৎ প্রবল বর্ষণে জলমগ্ন হয়ে উঠলো মক্কা। প্রাণকেন্দ্র কাবা চত্বরও জলের তলে। বেশ ক্ষয়ক্ষতি হল কাবা ঘরের। জল নেমে গেলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হল। অর্থ সংগ্রহ হল। শিশুকিশোরেরাও অংশ নিল। কাঁধে ও মাথায় করে নুড়ি-পাথর বইতে লাগলো তারা। কেউ কেউ কাঁধে যাতে আঘাত না লাগে, পাথরের ঘষায় ক্ষত না তৈরি হয় তার জন্য পরনের কাপড় খুলে কাঁধে রাখলো। অনেকের দেখাদেখি যখন শিশু মুহাম্মদ (সাঃ)-এর লুঙ্গি খুলে কাঁধে রাখা হল, তৎক্ষণাৎ তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন।
 
শৈশব উৎরে তিনি তখন টগবগে যুবক। আরেকবার নির্মাণ ও মেরামতির কাজ চলছে কাবা ঘরের। অত্যন্ত পবিত্র কৃষ্ণ প্রস্তরকে তার জায়গায় পুনঃস্থাপনের পালা। সকলেই এই সম্মানের অধিকারী হতে উদগ্রীব। তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও অধীর আগ্রহ তাঁদেরকে উন্মাদ করে তোলে। পরিস্থিতি এমন পর্যায় চলে যায় যে যেকোনো মুহূর্তে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। সবার সম্মতিতে এগিয়ে এলেন তিনি, অভূত পূর্ব পন্থায় মীমাংসা করলেন। একটি চাদরে পবিত্র পাথরকে রেখে মক্কার বিভিন্ন গোত্রীয় নেতাদের দিয়ে সেই চাদর বহনের আহ্বান জানালেন। তারপর নিজ হাতে তা পুনঃস্থাপন করলেন। এভাবে একটি আসন্ন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ টলে গেল।
 
বয়স একটু বেড়েছে। বিবেক জাগ্রত হয়েছে। ভালো ও মন্দের তারতম্য স্পষ্ট হয়েছে। ঠিক সেই সময় যুদ্ধের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু শৈশব। কৈশোর, তারুণ্য ও যৌবন উদ্ভ্রান্ত ও বিধ্বস্ত হয়ে উঠেছে। আর এসবের একমাত্র কারণ হার্‌বু ফিজার বা ফিজারের যুদ্ধ। যুদ্ধ শেষে কিছু শান্তিকামী বিবেক একত্রিত হয়ে যে-কোনোরকমের নাশকতা রুখতে বদ্ধপরিকর হয়েছিলেন। সেই সকল মুরুব্বীদের মাঝে এক তরুণও উপস্থিত ছিল এবং অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল সেই শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠায়। তিনি হলেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ)। তবে তখনও তিনি নবিত্ব লাভ করেননি।

No comments:

Post a Comment