Sunday 5 May 2019

আল-কুরআনের ভাবানুবাদঃ (৮৯) সূরাতু আল্‌-ফ়াজ্‌র


আল্‌-কুর্‌আনের ভাবানুবাদঃ জুয্‌উ 'আম্মা (আমপারাঃ ৩০তম অধ্যায়) 

৮৯) সূরাতু আল্‌-ফ়াজ্‌র (ঊষাকাল)

 মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৩০, রুকু’ ১ 

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

আল্লাহ্‌র নামে (আরম্ভ করছি); তিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।

وَالْفَجْرِ

ঊষার শপথ,

وَلَيَالٍ عَشْرٍ

(জুল্‌হিজ্জা মাসের প্রথম) দশটি রাতের শপথ,

وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ

(মহান আল্লাহ্‌র সৃষ্টিকূলেরর মাঝে সকল) জোড় ও বিজোড় বস্তুর শপথ,

وَاللَّيْلِ إِذَا يَسْرِ

এবং রাতের শপথ যখন তা গত হতে থাকে,

هَلْ فِي ذَلِكَ قَسَمٌ لِّذِي حِجْرٍ

নিঃসন্দেহে এসবের মধ্যে জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। 

أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ

(হে মুহাম্মদ সাঃ) তুমি কি লক্ষ্য করোনি, তোমার প্রতিপালক ‘আদ জাতির সাথে কীরূপ আচরণ করেছিলেন?  

إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ

ইরাম গোত্রের সাথে, যারা (দৈহিক গঠনে) স্তম্ভ ও খুঁটির ন্যায় দীর্ঘ ছিল?

الَّتِي لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِي الْبِلَادِ

তাদের মতো (শক্তিশালী ও বলবান) দ্বিতীয় কোনো জাতি সারা বিশ্বে সৃজিত হয়নি।  

وَثَمُودَ الَّذِينَ جَابُوا الصَّخْرَ بِالْوَادِ

এবং (কীরূপ আচরণ করেছিলেন) সামুদ জাতির সাথে যারা উপত্যকার মাঝে পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল?

وَفِرْعَوْنَ ذِي الْأَوْتَادِ

এবং (কীরূপ আচরণ করেছিলেন) বহু কীলকের (অর্থাৎ বিশাল সৈন্যবাহিনী ও দৃষ্টিনন্দন নির্মাণসমূহের) অধিপতি ফির্‌‘আউনের (অর্থাৎ ফারাওয়ের) সাথে?

الَّذِينَ طَغَوْا فِي الْبِلَادِ

যারা পৃথিবীর বুকে (নানা বিষয়ে মহান স্রষ্টার নির্ধারিত) সীমা লঙ্ঘন করেছিল;

فَأَكْثَرُوا فِيهَا الْفَسَادَ

এবং নানা ধরণের বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল।

فَصَبَّ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ سَوْطَ عَذَابٍ

আর তাই তোমার প্রভু তাদের উপর নানা ধরণের শাস্তির কশাঘাত হেনেছিলেন।  

إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ

নিশ্চয় তোমার প্রভু (তাদের জন্য) ঘাটিতে ওঁৎ পেতে রয়েছেন (অর্থাৎ তাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন)।  

فَأَمَّا الْإِنسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ

আর মানুষ এমনই যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করার জন্য (সমাজের চোখে) তাকে সম্মানিত করে তোলেন এবং তাকে প্রচুর সুখ ও সম্পদ দান করেন তখন সে (উল্লসিত হয়ে) বলেঃ আমার প্রভু আমাকে সম্মানিত ও মর্যাদাবান করেছেন।

وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ

কিন্তু যখন তাকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে (তার প্রভু) তার জীবিকা ও আয়-উপার্জন সংকুচিত করে দেন তখন সে বলেঃ আমার প্রভু আমাকে (সমাজের কাছে) হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। 

كَلَّا بَل لَّا تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ

এ কথা একেবারেই অমূলক। বরং তোমরাই অনাথদের স্নেহ করো না (তোমরা কখনো তাদেরকে প্রাপ্য অংশ থেকে বঞ্চিত করো তো কখনো তাদের অর্থ-সম্পদ জবরদখল করো)।  

وَلَا تَحَاضُّونَ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ

এবং অভাবগ্রস্তদের অন্ন দানে তোমরা পরস্পরকে উৎসাহিত করো না।

وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلًا لَّمًّا

তাছাড়া, মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পত্তি সম্পূর্ণ রূপে কুক্ষিগত করে রাখো।

وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا

এবং ধন-সম্পদকে অত্যাধিক মায়া করো।

كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا

এটা একেবারেই অনুচিত। (শোনো) যখন পৃথিবীকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া হবে;

وَجَاء رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا

এবং তোমার প্রতিপালক আসবেন আর তাঁর সাথে সারি সারি ফেরেশ্‌তারা;

وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّى لَهُ الذِّكْرَى

সেদিন জাহান্নামকে হাজির করা হবে, সেদিন মানুষ (মহা সত্যকে) উপলব্ধি করবে, কিন্তু তার এই উপলব্ধি কোনো কাজেই আসবে না!

يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي

সে বলবেঃ হায়, আমি যদি আমার এই জীবনের জন্য কিছু (পুণ্য অর্জন করে) পাঠিয়ে রাখতাম (তাহলে আজ তার সুফল পেতাম)! 

فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ

সেদিন কেউই আল্লাহ্‌র শাস্তির মতো (কঠিন) শাস্তি দিতে পারবে না।

وَلَا يُوثِقُ وَثَاقَهُ أَحَدٌ

এবং কেউই তাঁর মতো করে দৃঢ় ভাবে (দুর্বৃত্ত ও অবাধ্যদের) আবদ্ধ করতে পারবে না।

يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ

(অতঃপর সৎ ও বিশ্বাসী লোকেদের উদ্দেশ্যে বলা হবে) হে প্রশান্ত আত্মা!

ارْجِعِي إِلَى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً

তুমি ফিরে এসো তোমার প্রভুর নিকট সন্তুষ্ট ও সন্তোষ-ভাজন হয়ে।

فَادْخُلِي فِي عِبَادِي

অতঃপর আমার (আশীর্বাদপুষ্ট) অনুগতদের দলে শামিল হয়ে যাও।

وَادْخُلِي جَنَّتِي

এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।

2 comments: