৮০) সূরাতু ‘আবাসা (ভ্রূ কুঞ্চিত করলো)
পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু আল্লাহ্র নামে (শুরু করছি)।
عَبَسَ وَتَوَلَّى
(নবী সাঃ বিরক্ত হয়ে) ভ্রূ কুঞ্চিত
করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন;
أَن جَاءهُ الْأَعْمَى
(তিনি তখন কয়েকজন সম্ভ্রান্ত কোরায়েশ নেতাদেরকে ইসলামের পথে আহ্বান জানাচ্ছিলেন, ঠিক সে-সময়) তাঁর কাছে অন্ধ লোকটি (আব্দুল্লাহ ইব্নু উম্মে মাক্তূম রাঃ) এসেছেন বলে।
وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّهُ يَزَّكَّى
তুমি তো জানো না, সে হয়তো (নিজ ত্রুটিবিচ্যুতি হতে) পরিশুদ্ধ হতে পারে!
أَوْ يَذَّكَّرُ فَتَنفَعَهُ الذِّكْرَى
অথবা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে এবং
সেই উপদেশে তার উপকারও হতে পারে!
أَمَّا مَنِ اسْتَغْنَى
পক্ষান্তরে, যে (নিজেকে যথেষ্ট
ভাবে এবং কাউকেই) পরওয়া করে না,
فَأَنتَ لَهُ تَصَدَّى
তুমি তার চিন্তায় মশগুল হয়ে গেলে।
وَمَا عَلَيْكَ أَلَّا يَزَّكَّى
অথচ সে নিজে পরিশুদ্ধ না হলে তাতে তোমার কোনো দোষ নেই (কারণ তোমার দায়িত্ব তাদের নিকট পৌঁছে দেওয়া)।
وَأَمَّا مَن جَاءكَ يَسْعَى
তবে, যে তোমার কাছে ছুটে আসলো,
وَهُوَ يَخْشَى
মনে আল্লাহ্র ভয় নিয়ে,
فَأَنتَ عَنْهُ تَلَهَّى
তুমি তাকে অবজ্ঞা করে অন্যের
প্রতি মনোযোগী হলে;
كَلَّا إِنَّهَا تَذْكِرَةٌ
(ভবিষ্যতে) কখনও এমনটা করো না,
নিঃসন্দেহে এটা (অর্থাৎ আল্-কুর্আন) একটা উপদেশ বানী।
فَمَن شَاء ذَكَرَهُ
অতএব যার ইচ্ছা হবে, সে এই উপদেশ গ্রহণ করবে।
فِي صُحُفٍ مُّكَرَّمَةٍ
আর এই উপদেশ লিখিত আছে সম্মানিত
গ্রন্থে (অর্থাৎ লাওহ মাহ্ফূজে),
مَّرْفُوعَةٍ مُّطَهَّرَةٍ
যা উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ও
অত্যন্ত পবিত্র,
بِأَيْدِي سَفَرَةٍ
এবং এমন লিপিকারদের (অর্থাৎ
ফেরেশতাদের) হাতে (সংরক্ষিত),
كِرَامٍ بَرَرَةٍ
যারা মহৎ ও পূতচরিত্রবান।
قُتِلَ الْإِنسَانُ مَا أَكْفَرَهُ
ধ্বংস হোক (এই অবিশ্বাসী ও
অবাধ্য) মানুষেরা, কত অকৃতজ্ঞ এরা!
مِنْ أَيِّ شَيْءٍ خَلَقَهُ
(এরা কি কখনও ভেবে দেখেছে,) তিনি
কোন্ বস্তু হতে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন?
مِن نُّطْفَةٍ خَلَقَهُ فَقَدَّرَهُ
শুক্র বিন্দু
থেকে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সুপরিমিত গঠন ও আকৃতি প্রদান করেছেন।
ثُمَّ السَّبِيلَ يَسَّرَهُ
অতঃপর তার জন্য পথ সহজ করে দিয়েছেন।
ثُمَّ أَمَاتَهُ فَأَقْبَرَهُ
তারপর (এক সময়) তার মৃত্যু ঘটান এবং তাকে কবরস্থ করান।
ثُمَّ إِذَا شَاء أَنشَرَهُ
তারপর যখন তাঁর ইচ্ছা হবে পুনরুজ্জীবিত
করবেন।
كَلَّا لَمَّا يَقْضِ مَا أَمَرَهُ
কিন্তু না, আল্লাহ্ মানুষকে যে-আদেশ করেছিলেন, মানুষ এখনও তা পূর্ণ করেনি।
فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ إِلَى طَعَامِهِ
(প্রত্যেক) মানুষের উচিৎ নিজ খাদ্যের
প্রতি লক্ষ্য করা;
أَنَّا صَبَبْنَا الْمَاء صَبًّا
আমি (তার জন্য) আশ্চর্য উপায়ে
প্রচুর পানি বর্ষণ করেছি,
ثُمَّ شَقَقْنَا الْأَرْضَ شَقًّا
অতঃপর ভূমিকে অদ্ভুদভাবে বিদীর্ণ করেছি,
فَأَنبَتْنَا فِيهَا حَبًّا
এবং তাতে আমি শস্য উৎপন্ন করেছি,
وَعِنَبًا وَقَضْبًا
এবং আঙ্গুর ও (পুষ্টিকর) শাক-সব্জি,
وَزَيْتُونًا وَنَخْلًا
জায়তুন ও খেজুর,
وَحَدَائِقَ غُلْبًا
বহু ঘন ও নিবিড় উদ্যান,
وَفَاكِهَةً وَأَبًّا
ফলমূল এবং ঘাসফুস
مَّتَاعًا لَّكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ
(জীবিকা রূপে এবং নানা উপকারার্থে) তোমাদের জন্য ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের জন্য।
فَإِذَا جَاءتِ الصَّاخَّةُ
অতঃপর যে-দিন কর্ণবিদারক নাদ
(অর্থাৎ প্রলয় কালে শিঙার দ্বিতীয় ফুঁৎকারের তীব্র ধ্বনি) ভেসে আসবে,
يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ
সে-দিন মানুষ নিজ ভাইয়ের থেকে
দূরে সরে যাবে,
وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ
নিজ মা-বাবার থেকে (পৃথক হয়ে
যাবে),
وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ
নিজ স্ত্রী-সন্তানদের কাছ থেকে
(পালিয়ে যাবে);
لِكُلِّ امْرِئٍ مِّنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ
يُغْنِيهِ
সে-দিন প্রত্যেকেই নিজ নিজ চিন্তায় মগ্ন থাকবে এবং নিজেকে নিয়েই ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়বে।
وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ مُّسْفِرَةٌ
সে-দিন বহু মুখমণ্ডল (প্রকৃত
মুসলিমদের মুখমণ্ডল) জ্বলজ্বল করবে,
ضَاحِكَةٌ مُّسْتَبْشِرَةٌ
আনন্দ-উল্লাস করবে এবং (জান্নাত
লাভের) সুসংবাদকে উপভোগ করবে;
وَوُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ
তবে সে-দিন বহু মুখমণ্ডল আবার
ধুলোয় ধূসরিত থাকবে,
تَرْهَقُهَا قَتَرَةٌ
কলুষ-কালিমা তাদেরকে আচ্ছন্ন করে
রাখবে।
أُوْلَئِكَ هُمُ الْكَفَرَةُ الْفَجَرَةُ
কারণ, তারা (ইহলোকে) কাফের ও পাপাচারী (ছিল)।
ভাবানুবাদ- আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
No comments:
Post a Comment