জুতো-পালিশ
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
সুজয় কাল রাতে একটু
দেরীতে ঘুমিয়ে ছিল। ফলে সকালে উঠতে খানিকটা বিলম্ব হয় তার। ঘুম ভাঙতেই নজর পড়ে
গোলাপি রঙের দেওয়ালে মাঝ বরাবর ঝুলে থাকা লাস্ট সামারের ছুটিতে লন্ডন থেকে আনা
ঘড়ির কাঁটার উপর। লাফিয়ে উঠে বিছানা থেকে। তড়িৎ গতিতে স্নান সেরে, স্যুটেড-বুটেড
হয়ে ব্রেক-ফাস্ট না করেই রওয়ানা হয় অফিসের পথে। আজ বোসের সাথে তাঁর এক জরুরী
মিটিং। প্রিয় ভোক্সয়াগন-পোলো যথাযোগ্য সঙ্গ দেয় তাঁকে। পৌঁছে যায় নির্ধারিত সময়ে।
মিটিং চলছে পুরদস্তুর।
ব্যস্ত যে যার কাজে। সুজয়ও। মিটিং একেবারে শেষ প্রান্তে, হঠাৎ চোখ চলে গেল জুতোর
দিকে। ইশ, আজ সে জুতো পলিশ না করেই পরেছে!
লাঞ্চ-ব্রেকে বেরিয়ে
এলো ঝাঁ-চকচকে গগনচুম্বী প্রাসাদসম অফিস-বিল্ডিং থেকে। সে জানে মিন্টু শেখ রোজ
কোথায় বসে। মেন গেট থেকে বেরিয়ে হাঁটা দিল ডান দিকে। একটু এগিয়ে একটা বাঁক ঘুরে ভি
আকৃতির কোণটায় ছোট একটা ছাতা টাঙিয়ে বসে আছে রোজকার মতো মিন্টু শেখ। সুজয় বাড়িয়ে
দিল ডান পাটা মিন্টুর বাক্সের উপর।
আর সযত্নে একটি ‘মানুষ’ অপর একটি ‘মানুষের’ জুতো পোলিশ করতে
আরম্ভ করল...।
[পূবের কলম, ১২ জুন ২০১৮-এর সাহিত্য ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত]
No comments:
Post a Comment