Friday 26 January 2018

এসো ইসলাম শিখি

এসো ইসলাম শিখি
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম


প্রঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তা কে ?  
উঃ আল্লাহ্‌ ।
প্রঃ আল্লাহ্‌র কতগুলো নাম রয়েছে?
উঃ আল্লাহ্‌ তাআলা [1]-র নাম অসংখ্য[2]
প্রঃ আল্লাহ্‌ কোথায় আছেন ?
উঃ আল্লাহ্‌ সপ্তাকাশের উপর আরশে [3]
প্রঃ আল্লাহর আরশ কোথায় আছে ?
উঃ সাত আসমানের উপর ।
প্রঃ আরশ  শব্দের অর্থ কি?
উঃ সিংহাসন
প্রঃ আল্লাহ কি সর্বস্থানে বিরাজমান ?
উঃ না। আল্লাহ্‌ সবজায়গায় বিরাজমান ননতিনি রয়েছেন সপ্তাকাশের উপর সুমহান আরশে[4]
প্রঃ তাওহীদ কাকে বলে ?
উঃ তাওহীদ অর্থ একত্ববাদ। পরিভাষায়, এক আল্লাহ্‌র উপাসনা করা
প্রঃ তাওহীদ কত প্রকার?
উঃ তাওহীদ তিন প্রকার।
প্রঃ তাওহীদের প্রকারগুলি কী কী?
উঃ () তাওহীদুর্‌ রুবূবিয়্যাহ্‌
    () তাওহীদুল্‌ উলূহিয়্যাহ্‌ 
    () তাওহীদুল্‌ আস্‌মা ওয়াস্‌ সিফাত।
প্রঃ তাওহীদুর্‌ রুবূবিয়্যাহ্‌ কাকে বলে?
উঃ আল্লাহ্‌ তাঁর কর্মসমূহে একক, তাঁর কোন শরীক নেই; একথা মেনে নেওয়ার নাম তাওহীদুর্‌ রুবূবিয়্যাহ্‌।
প্রঃ তাওহীদুল্‌ উলূহিয়্যাহ্‌ কাকে বলে?
উঃ ইবাদত-উপাসনা ও দাসত্ব এককভাবে আল্লাহ্‌র জন্য সম্পাদন করাকে তাওহীদুল্‌ উলূহিয়্যাহ্‌ বলে।
প্রঃ তাওহীদুল্‌ আসমা ওয়াস্‌ সিফাত কাকে বলে?
উঃ আল্লাহ্‌র অনেক গুণবাচক নাম বর্ণীত হয়েছে কুরআন ও হাদিসে; যেগুলি ভাবের দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু তাঁরই জন্য উপযুক্ত; কোনো প্রকার ধরণ নির্ধারণ না করেই বা অস্বীকার না করেই সেই নামগুলোকে সেভাবেই মেনে নেওয়ার নাম তাওহীদুল্‌ আস্‌মা ওয়াস্‌ সিফাত।
প্রঃ তাওহীদুর্‌ রুবূবিয়্যাহ্‌র উদাহরণ দাও।
উঃ সৃষ্টি, রিযিক (জীবিকা)-প্রদান, বৃষ্টি-বর্ষণ, প্রতিপালন, সর্বময় কর্তৃত্ব ও তত্বাবধান ইত্যাদি কর্মে আল্লাহ্‌র কোনো অংশীদার নেই।
প্রঃ তাওহীদুল্‌ উলূহিয়্যাহ্‌র উদাহরণ দাও।
উঃ ঈমান (বিশ্বাস), ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খা, ভালবাসা, দুআ (প্রার্থনা), সাহায্য-কামনা, উদ্ধারের আর্জি, রুকূ-সিজদা ইত্যাদি ইবাদত (উপাসনা)-সমূহ এককভাবে আল্লাহ্‌র জন্যই।
প্রঃ তাওহীদুল্‌ আসমা ওয়াস্‌ সিফাতের উদাহরণ দাও।
উঃ আর্‌-রাহমান (পরম করুণাময়), আস্‌-সামী’ (শ্রবণকারী) আল্‌-বাসীর (মহাদ্রষ্টা), আল্‌-ঊলু (সর্বোচ্চ) ইত্যাদি গুণবাচক নামগুলি আল্লাহ্‌র জন্যেই প্রযোজ্য।
প্রঃ আল্লাহর ৯৯টি নাম হিফ্‌য (মুখস্ত) করার ফযীলত (মাহাত্ম্য) কী?
উঃ মুখস্ত করে আমল করলে বিনিময়- জান্নাত।
প্রঃ মুমিনের কলব আল্লাহর আরশ- উক্তিটি কার?
উঃ উক্তিটি কোনো মানুষের বানানো। আল্লাহ্‌ বা রাসূলের কথা নয়। আর এ বিষয়ে বর্ণীত হাদিসটি মওযু (জাল ও অপ্রামাণ্য)। 
প্রঃ আল্লাহ্‌ কি নিরাকার?
উঃ না, আল্লাহ্‌ নিরাকার নন। তাঁর অস্তিত্ব ও সত্ত্বা আছে।
প্রঃ আল্লাহ্‌ কি সর্বস্থানে বিরাজমান?
উঃ না, আল্লাহ্‌ সর্বস্থানে বিরাজমান নন।
প্রঃ আল্লাহ্‌ কোথায় আছেন?
উঃ আল্লাহ্‌ সপ্তকাশের উপর আরশে সমাসীন।
প্রঃ রাসুল সা এক দাসীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন- আল্লাহ্‌ কোথায় আছেন; উত্তরে দাসীটি কী বলেছিল
উঃ দাসীটি আকাশের দিকে আঙুল তুলে শরীরী ভাষায় উত্তর দিয়েছিল- আল্লাহ্‌ আকাশে আছেন।
প্রঃ দাসীর এই উত্তর শুনে রাসুল সা কী করেছিলেন
উঃ দাসীটিকে মুসলিম আখ্যা দিয়ে মুক্ত করার আদেশ করেছিলেন।  
প্রঃ আল্লাহ্‌র আকার আছে- তাহলে কি তাঁকে দেখা সম্ভব?
উঃ হ্যাঁ, তাঁকে দেখা সম্ভব। তবে এ পৃথিবীতে নয়। আখেরাতে (পরকালে) জান্নাতীগণ আল্লাহ্‌কে দেখার সৌভাগ্য লাভ করবেন[6]



[1] অর্থ- মহিমান্বিত                    
[2]  তিরমিযি-তে আল্লাহ্‌র নাম ৯৯টি বিষয়ক যে হাদিসটি আছে তা বর্ণনা-সূত্রের ব্যাকরণে যায়িফ অর্থাৎ দুর্বল এবং অপ্রামাণ্য। তাই ইব্‌নে হাজার ও ইব্‌নে তাইমিয়া প্রমুখ পণ্ডিতগণ মনে করেন, আল্লাহ্‌র নাম অসংখ্য। (ইব্‌নে তাইমিয়া, দার্‌উ তাআরুযিল আক্ব্লি ওয়ান্‌ নাক্ব্‌লি ৩৩৩২)
[3] সূরা ত্বহা ৫
[4] সূরা ত্বহা ৫
[6] সূরা আল্-ক্বিয়ামাহ্‌ ২২-২৩, বুখারি, মুসলিম, নাসায়ি। 

চলবে... 

No comments:

Post a Comment