ফেতরা
আব্দুল মাতিন ওয়াসিম
বাঁশকুড়ি। চণ্ডিপুর মৌজায় সব থেকে বড় গ্রাম। প্রায় এক শ
পরিবারের বসত এই গ্রামে। আট-দশটি বাড়ি ছাড়া সবই মুসলিম। তবে সকলের
মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন বেশ মজবুত। বিবাহ-অন্নপ্রাশন-ঈদ-পুজো প্রায় সকল উৎসবে একে
অপরের পাশে থেকে সাহায্য করে, অবশ্যই নিজ ধর্ম-বিধানের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে।
আজ রমযানের একুশটি রোযা অতিক্রান্ত হল। সামনে ঈদ উৎসব। তাই তার আয়োজন, ঈদগাহের প্রস্তুতি ও ফেতরার হিসেবকে সামনে রেখে
একটি মজলিস ডাকা হয়েছে। ঈদের সময়সূচী-মাঠ ইত্যাদি নির্ধারণের পর, সবশেষে আলোচনা
শুরু হল ফেতরা নিয়ে।
প্রথমে মৌলবি মহাশয় ফেতরা সংক্রান্ত কিছু হাদিস ও তথ্য
উপস্থাপন করলেন। তাঁর মূল বক্তব্য ছিল, ফেতরা নির্ধারিত পাঁচটি বস্তু বা খাদ্য
দ্রব্যাদি থেকে মাথা পিছু আড়াই কিলো দিতে হবে।
কিন্তু পূর্বে সমাজে প্রচলিত ছিল, ফেতরা বাবদ মাথা পিছু
কিছু টাকা দেওয়া। তাই আরম্ভ হল বাগ-বিতণ্ডা ও তর্কবিতর্ক। অবশেষে ধার্য করা হল,
যারা খাদ্য বস্তু দিতে ইচ্ছুক তাঁরা মাথা পিছু আড়াই কিলো চাল বা গম দেবে; আর যারা
টাকা দিতে চায় মাথা পিছু ৫০ টাকা ফেতরা বাবদ দেবে।
বৈঠক শেষে চৌধুরী আতিকুর সাহেব বেশ হাঁসি খুশী বাড়ি ফিরলেন; বাড়িতে তাঁরা
বাসমতী চাল খান। তার তুলনায় টাকার পরিমাণটা
তো যৎসামান্য। কিন্তু, দিনমজুর
চানু মোহাম্মদ মাথাটা নিচু করে বসে রয়েছেন
তখনো; রেশনে আড়াই টাকায় এক কিলো চাল পান তিনি। ৫০
টাকাতে যে ২০ কিলো চাল হয় তার। মজলিসে
কেউই কিন্তু তার কথা ভাবল না...।
No comments:
Post a Comment